বড়লেখা প্রতিনিধি:: বড়লেখায় ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে ব্যবসায়ি মাহবুবুর রহমানের ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা আত্মসাত মামলায় দোকান কর্মচারি অনুপ দত্ত যিশু ও তার সহযোগি স্বপন দত্তের বিরুদ্ধে বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জিয়াউল হক দুইজন প্রবেশন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে সংশোধন মুলক কার্যক্রম সম্পন্নের শর্তে বুধবার বিকেলে ব্যতিক্রমি রায় ঘোষণা করেছেন।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর বিকেলে বড়লেখা হাজীগঞ্জ বাজারের আয়শা ট্রেডার্সের কর্মচারি অনুপ দত্ত যিশু স্থানীয় ব্যাংক থেকে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মালিকের ৪ লাখ ৬ হাজার টাকা উত্তোলন করে ছিনতাইয়ের মিথ্যা নাটক সাজায়। সে জানায় মধ্যবাজারস্থ ফৈয়াজ আলীর দোকানের সামনে পৌঁছামাত্র অজ্ঞাত ছিনতাইকারীরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাকে আহত করে সাথে থাকা টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। আহত দোকান কর্মচারিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত দোকান কর্মচারি কথা বিশ্বাস করে এ ঘটনায় আয়শা ব্যবসায়ি মাহবুবুর রহমান অজ্ঞাত ছিনতাইকারিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলায় করেন। থানার এসআই রকিব মোহাম্মদের তদন্তে বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা।
প্রমাণ মিলে দোকান কর্মচারিই ছিনতাইয়ের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে ব্যবসায়ির টাকা আত্মসাত করেছে। দুই নম্বর আসামির বসতঘরের বাথরুম থেকে তদন্ত কর্মকর্তা ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা উদ্ধার করেন এবং ২০২০ সালের ৬ মার্চ দোকান কর্মচারি অনুপ দত্ত যিশু ও তার সহযোগি স্বপন দত্তের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরবর্তীতে আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়ে আদালত ও বাদির কাছে ক্ষমা চায় এবং সংশোধিত হওয়ার সুযোগ প্রদানের প্রার্থনা করে।
সাক্ষ্য প্রমাণে আদালত অভিযুক্ত অনুপম দত্ত যিশুকে ১৮৬০ সালের দন্ডবিধি আইনের ধারার অপরাধে দোষি সাব্যস্তক্রমে ৪০৮ ধারায় ৫ বছরের এবং ৪২০ ধারায় ৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ডে এবং সহযোগি আসামি স্বপন দত্তকে ৪০৮ ধারায় ৪ বছরের ও ৪২০ ধারায় ৩ বছরের সশ্রম কারাদন্ডের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
তবে অভিযুক্তদের দোষি সাব্যস্ত করা হলেও দি প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিনেন্স, ১৯৬০ এর ৫ ধারার আলোকে আসামিদের বয়স, সাংসারিক অবস্থা, পেশার ধরণ, অপরাধের মাত্রা এবং পূর্বের ইতিহাস বিবেচনায় সাজা প্রদান না করে রায়ের সাথে সংযুক্ত শর্তাদির আলোকে বিজ্ঞ আদালত প্রবেশন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে এক নম্বর আসামিকে ১ বছর ৬ মাসের এবং দুই নম্বর আসামিকে ১ বছরের সংশোধন মুলক কার্যক্রম সম্পন্নের আদেশ জারি করেন। রায়ে আদালত প্রবেশন কালিন আসামিদের প্রবশেন কর্মকর্তার নির্দেশিত স্থানে রাস্তার দু’পাশে নিজ খরচে ১৫টি করে মোট ৪৫টি অর্জুন, নিম ও কৃষ্ণচুড়ার চারা রোপনের আদেশ দিয়েছেন।
বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারি মো. ইকরাম হোসেন ব্যবসায়ির টাকা ছিনতাই মামলায় বিজ্ঞ আদালত দুই আসামির বিরুদ্ধে প্রবেশন রায় প্রদানের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
Leave a Reply