এইবেলা, কুলাউড়া :: বাড়ির সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের জেরে সত্তোর্ধ্ব বৃদ্ধা দাদিকে বেধড়ক পেটালেন নিজের নাতি। আর এ ঘটনার সময় শাশুড়িকে রক্ষা না করে ছেলের পক্ষ নিয়ে ভিডিও ধারণ করে শাসালেন পুত্রবধূ (ওই যুবকের মা)। ঘটনাটি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের উত্তর লস্করপুর এলাকায়। মারধরের শিকার ওই বৃদ্ধা পৌর এলাকার উত্তর লস্করপুরের বাসিন্দা লায়লী বেগম।
এ ঘটনায় মারধরকারী নাতি আব্দুস সামাদসহ ৪জনকে অভিযুক্ত করে রোববার রাতে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ বলছে, অভিযোগ পেয়ে আদালতে প্রসিকিউশনের জন্য পাঠানো হয়েছে। আদালতের অনুমতি পেয়ে অভিযোগটি মামলায় এজাহারভুক্ত করা হবে।
ভিডিও ও থানায় অভিযোগ থেকে জানা গেছে, পৌর এলাকার উত্তর লস্করপুরের বাসিন্দা মৃত সুলতান মিয়ার স্ত্রী লায়লী বেগমের দুই ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছেন। বড় ছেলে জয়নাল মিয়া সৌদিআরব প্রবাসী কয়েক বছর আগে মা লায়লী বেগমের নামে থাকা সম্পত্তি সমান অংশে ভাগবাটোরা করার কৌশল দেখিয়ে ৫দশমিক ৪১ শতক জমি নিজের নামে লিখে নেন। পরে বৃদ্ধা মায়ের দেখাভাল না করে জয়নালের স্ত্রী আমিনা বেগম বোনদের (বৃদ্ধার মেয়েদের) ঘরে দিয়ে দেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিক শালিসী বৈঠকও হয়। গত শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) জয়নালের পুত্র ও বৃদ্ধার নাতি আব্দুস সামাদ বাড়িতে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। এতে বাধা দিতে যান বৃদ্ধা লায়লী বেগম। তখন সামাদ উত্তেজিত হয়ে তাঁর মা আমেনাসহ তাদের আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে লায়লী বেগমের ওপর চড়াও হোন। একপর্যায়ে সামাদ তাঁর দাদিকে এলাপতাড়ি লাথি-ঘুষি দিতে থাকেন।
ভিডিওতে আরো দেখা যায়, লায়লী বেগমকে তখন সামাদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা কেউ উদ্ধার না করে উল্টো টেনে হিচড়ে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন।
ওই সময় সামাদের মা আমেনা শাশুড়িকে উদ্ধার না করে উল্টো ভিডিও ধারণ করে বৃদ্ধার মেয়েদেরকে শাসিয়ে বলেন, মেয়েরা কেন সেখান থেকে লায়লী বেগমকে সরিয়ে নিচ্ছেনা। সীমানাপ্রাচীর নির্মাণে বাধা দিতে মেয়েরা লায়লী বেগমকে পাঠিয়ে তামাশা দেখছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাতি আব্দুস সামাদ মোবাইলে বলেন, আমাদের জায়গার ওপর দেয়াল নির্মাণ করতে গেলে দাদি ও আমার ফুফুরা বাধা দেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে বেশ কয়েকবার বৈঠক হয়। শুক্রবার দেয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করলে দাদি বাধা দিতে আসেন। এ জন্য তাঁকে সরিয়ে দিয়েছি, মারধর করিনি। পরে আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি।
স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর হারুনুর রশীদ জানান, বৃদ্ধার পরিবারে জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। আমরা বৈঠকে বসে দুই পক্ষকে জায়গা আলাদা করে দিয়েছিলাম। বৃদ্ধাকে মারধরের বিষয়টি দু:খজনক।
কুলাউড়া থানার এসআই মো. আনোয়ার মিয়া বলেন, অভিযোগ পেয়ে অনুমতির জন্য আদালতে পাঠিয়েছি। আদালতের সিদ্ধান্ত পেলে তখন ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুলাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রতন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, বিষয়টি আমি জানতাম না। এসআই মো. আনোয়ারে সাথে কথা বলে ও খোঁজ নিয়ে দ্রুত আইনী ব্যবস্থা নিচ্ছি।#
Leave a Reply