প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) থেকে :: বিদায়ী বছর ২০২২ এর ১১ জুন শনিবার ছিল মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের আতঙ্কিত একটি দিন। চলন্ত অবস্থায় ট্রেনের পাওয়ার থেকে আগুন লাগার পর ওইদিন বেলা ১টায় সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনে ট্রেন শমশেরনগর ও মনু রেল স্টেশনের মধ্যবর্তী ডাকবেল এলাকায় সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনের তিনটি বগি আগুনে ভস্মিভূত হয়েছে। যাত্রীরা বগিতে আগুন দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট কাজ করে প্রায় দু’ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কয়েক ঘন্টা সময় ধরে সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। যাত্রীদেরও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
জানা যায়, বিদায়ী বছরের ১১ জুন ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন। ভানুগাছ স্টেশনে শেষ স্টফেজ দিয়ে দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে শমশেরনগর রেল স্টেশন অতিক্রম করে। শমশেরনগর স্টেশন অতিক্রম করার পর থেকেই ট্রেনের জেনারেটরের বগিতে আগুনের সূত্রপাত দেখা যায়। এরপর প্রায় ৩ কি.মি. অতিক্রম করার পর ট্রেনের বগিতে আগুন জ্বলতে দেখেন যাত্রীরা। পতনউষার ইউনিয়নের ডাকবেল এলাকায় ট্রেন থামানোর পর যাত্রীরা দ্রুত ট্রেন থেকে নেমে নিরাপদে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ট্রেনের কর্তৃপক্ষ আগুন লাগা তিনটি বগি বিচ্ছিন্ন করে দেয়। পরে ট্রেনের জেনারেটর বগি ও পার্শ্ববর্তী যাত্রীবাহী বগিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রথমে ট্রেন কর্তৃপক্ষ আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। পরে খবর পেয়ে ঘটনার প্রায় ১ ঘন্টা পর কমলগঞ্জের ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, কুলাউড়া ও মৌলভীবাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে চারটি অগ্নিনির্বাপক দল এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এঘটনায় ট্রেনের তিনটি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর থেকে সিলেট-আখাউড়া রেলসেকশনে পাঁচ ঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ততক্ষণে দু’পাশের স্টেশন সমুহে কয়েকটি ট্রেন আটকা ছিল।
স্থানীয়দের মতে, ট্রেনের বগিতে আগুন নিয়েও ট্রেন চলতে দেখা গেছে। বাহিরের লোকজন চিৎকার করলেও কেউ শুনতে পাননি। এক পর্যায়ে বগিতে আগুনের দেখা পেয়ে ট্রেন দ্রুত দাঁড়া করানোর কারণে অসংখ্য প্রাণহানি থেকে রক্ষা পায় পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন।
আগুন লাগার কারণ হিসাবে আন্ত:নগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিচালক মো. ইসমাইল জানান, ট্রেনের পাওয়ার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ট্রেন থামানোর পর দেখা যায় চাকার মধ্যে আগুন ও পরে তেলের ট্রাংকিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে। তবে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এরপর মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি ও রেলওয়ের উর্দ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রেলওয়ের পক্ষ থেকে দু’টিসহ পৃথক পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।#
Leave a Reply