কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ছয় ইউনিয়নে চলমান কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিকেরা দেড় মাসে ৩২ দিন ধরে কাজ করেও মজুরি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকল্পের সুবিধাভোগী হতদরিদ্র শ্রমিকরা বলছেন টাকা না পাওয়ায় তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে অতি কষ্টে যাপন করছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ফুলবাড়ী উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৫৪টি ওয়ার্ডে কর্মসৃজনের ২ হাজার ৩৬০ জন শ্রমিক রয়েছেন।
গত ২৬ শে নভেম্বর থেকে কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ চলছে।এসব শ্রমিক বিভিন্ন সড়ক, মাঠ, মসজিদ, মন্দির ও পুকুর সংস্কারে মাটি কাটছেন। কিন্তু কাজ শুরুর ৩২ দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত কোন শ্রমিকই মজুরির টাকা পাননি।
মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে তাদের এ টাকা পাওয়ার কথা। মুজুরি হিসাবে শ্রমিকদের দলনেতা দৈনিক ৪৫০ টাকা আর প্রত্যেক সাধারণ শ্রমিক পাবেন ৪০০ টাকা।
ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামের কর্মসৃজনের শ্রমিক মজিয়া বেগম বলেন, ‘হামরা গরীর মানুষ। হাতে কামাই করি পেটে খাই, ম্যালা দিন থাকি কামাই করি টাকায় নাই।
৩২ দিন থাকি রাস্তাত, মসজিদোত, পুলের মোকাত মাটি কাটিপার নাগছি। মেম্বার চেয়ারম্যান আগোত হামাক কইছে প্রতি সপ্তাহে টাকা পাইমেন। এ্যালা খালি কামাই করি টাকা তো দেয় না। টাকা না পায়য়া খুব কষ্টে পড়ি গেইছি বাহে’।
আমেনা বেগম নামে অপর এক শ্রমিক বলেন, তার স্বামীর অসুখ। তাই স্বামীর বদলে তিনি মাটি কাটার কাজ করছেন। ৩২ দিন ধরে কাজ করে মজুরির টাকা পাচ্ছেন না।
এদিকে স্বামীর চিকিৎসার খরচ ও সংসারের খরচ জোগাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে তাকে। টাকা না পাওয়ায় অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছেন।
ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সাইফুর রহমান বলেন,’হামরা ২৯ জনের একটা দল। ৩২ দিন থাকি রাস্তায় মাটি কাটছি। হামার সর্দার কয় মোবাইলোত টাকা আইসপে।
বারেবারে মোবাইল দেখি টাকা তো আইসেনা। ধার দেনা করিয়া খুব কষ্টে আছি। টাকাটা পাইলে খুব উপকার হইল হয়’।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সবুজ কুমার গুপ্ত বলেন, ইতিমধ্যেই আমরা কর্মসৃজনের সুবিধাভোগি শ্রমিকদের ২০ দিনের বিল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে পাঠিয়ে দিয়েছি। আশা করছি শ্রমিকরা দ্রুত তাদের প্রাপ্য মজুরি পেয়ে যাবেন।#
Leave a Reply