এইবেলা, কুলাউড়া :: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় তাওহিদুর রহমান (৩৮) নামে এক প্রবাসীকে পাওনা টাকা না দিয়ে উল্টো মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রবাসী তাওহিদুর রহমান উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের মৃত আব্দুল বারীর ছেলে। তিনি দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করেন। সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরেন। এ ঘটনায় দুইজনকে অভিযুক্ত করে শনিবার রাতে কুলাউড়া থানায় তিনি একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।
থানায় লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাজিপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার ও মানগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ওয়াহিদ মিয়া গত ২৩ জানুয়ারি প্রবাসী তাওহিদুর রহমানের বাড়িতে গিয়ে তাদের মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৭০টি গাছ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করবে বলে আলোচনা করেন। পরবর্তীতে ২০ হাজার টাকা অগ্রীম দিয়ে গাছগুলো নিয়ে যাওয়ার পূর্বে অবশিষ্ট টাকা পরিশোধ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন ওয়াহিদ মিয়া। এরপর ওয়াহিদ মিয়া তাঁর লোকজন দিয়ে গাছগুলো কর্তন করেন এবং গাড়ি দিয়ে গাছগুলো পরিবহন করতে থাকেন। ওয়াহিদ মিয়ার লোকজন গাছগুলো পরিবহনকালে গত ২৬ জানুয়ারি প্রবাসী তাওহিদুর রহমান তার পাওনা টাকা দাবি করেন। ওয়াহিদ মিয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকলেও ফোনে তার সাথে কথা বলেন তাওহিদুর রহমান। তখন টাকা ছাড়া গাড়ি ছাড়তে নিষেধ করেন তাওহিদুর রহমান। এর কিছুক্ষণ ওয়াহিদ মিয়া ও মঞ্জু বক্সসহ সংঘবদ্ধ লোকজন নিয়ে প্রবাসী তাওহিদুর রহমানের বাড়ির সামনে এসে তাকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে গুলি করে প্রাণনাশের হুমকি দেন। পরে তাওহিদুর রহমান আতংকিত হয়ে গেলে ওই সুযোগে তারা গাড়ি দিয়ে জোরপূর্বক অবশিষ্ট গাছগুলো নিয়ে চলে যায়। তখন তাওহিদুর রহমান তাঁর পাওনা টাকা আদায়ের জন্য স্থানীয় এলাকার গণমান্য ব্যক্তিগণকে অবগত করেন। এই ঘটনার জেরে গত ২৭ জানুয়ারি স্থানীয় পাইকপাড়া বাজার মসজিদ থেকে জুম্মার নামাজ পড়ে বের হন তাওহিদুর রহমান। তখন মঞ্জু বক্স তাওহিদুর রহমানকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে মারধর করেন। একপর্যায়ে তাঁর পকেট থেকে ১৮ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয়। এছাড়া তাঁর হাতে থাকা রোলেক্স মডেলের ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা দামের একটি ঘঁড়িও ছিনিয়ে নেয় এবং ব্যবহৃত মোবাইল ভাংচুর করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে মসজিদের অন্যান্য মুসল্লিরা এগিয়ে আসলে প্রবাসী তাওহিদুর রহমান তখন প্রাণে বেঁচে যান। এরপর থেকে ওয়াহিদ মিয়া ও মঞ্জু বক্স গং তাওহিদুর রহমানের গাছ বিক্রি বাবদ অবশিষ্ট ৬০ হাজার টাকা না দিয়ে তাকে উল্টো প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এ ঘটনায় গত ২৮ জানুয়ারি মঞ্জু বক্সকে প্রধান আসামী ও ওয়াহিদ মিয়াকে ২নং আসামী করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন তাওহিদুর রহমান।
ঘটনার সাথে জড়িত মঞ্জু বক্স মারধরের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, প্রবাসী তাওহিদুর রহমানের সাথে তার বাড়ির বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ও বাশ ক্রয়ের জন্য দাম সাব্যস্ত হয়। কিন্তু উনাকে টাকা দিলেও তিনি বাঁশ দেননি। তাই উনার সাথে বাকবিতন্ডা হয়েছে। তিনি আমার বাড়িতে এসে হুমকি দেন তাই আমি উনাকে মারধর করেছি।
এ বিষয়ে কুলাউড়া থানার এস আই মোঃ আব্দুল আলিম বলেন, থানায় লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর সরেজমিন তদন্তে ওই এলাকায় যাই। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা মিলেছে। বিবাদীরা প্রবাসীর প্রাপ্ত টাকা না দিয়ে গাছ নেয়ার চেষ্টা করে। জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশী চেষ্টা অব্যাহত আছে।
এ বিষয়ে কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুছ ছালেক বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#
Leave a Reply