বড়লেখা প্রতিনিধি::
বড়লেখায় অসচ্ছ¡ল বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়) আওতায় ২৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে বীরনিবাস নির্মাণ করে দেওয়ার টেন্ডার আহ্বান করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়। কার্যাদেশ অনুযায়ি ২ মাস আগেই নির্মাণ কাজ সম্পন্নের মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদাররা এখনও কাজই শুরু করেনি। এতে ভুক্তভোগি বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের মাঝে চাপা ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে অসচ্ছ্বল বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়) আওতায় বড়লেখায় ২৫ জন অসচ্ছ্বল বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে পাকাঘর নির্মাণের টেন্ডার আহ্বান করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়। প্রতিটি ঘর নির্মাণে বরাদ্দ রয়েছে ১৪ লাখ ১০ হাজার ৩৮২ টাকা। প্রতিটি ঘরে দুটি করে বেডরুম ও বাথরুম, একটি ড্রইং রুম, ডাইনিং রুম ও রান্নাঘর, বেলকনি, বিদ্যুৎসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকছে।
একটি প্যাকেজে ৫টি করে ২৫টি ঘর নির্মাণের কার্যাদেশ পায় মেসার্স আখি এন্ড মনি এন্টারপ্রাইজ, শুভ এন্ড সিয়াম ট্রেডার্স, হুমায়রা এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স জুনেদ এন্টারপ্রাইজ ও সনজিত দাস এন্টারপ্রাইজ নামক ৫ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে গত বছরের ৬ নভেম্বর নির্মাণ কাজের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। গত ৫ জানুয়ারি ঠিকাদাররা বীর নিবাসের কাজ সম্পন্ন করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হলেও মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু কোন ঠিকাদার এখন পর্যন্ত বীর নিবাসের নির্মাণ কাজ শুরুই করেননি। এমনকি নির্মাণ কাজ শুরুর দৃশ্যমান কোন প্রস্তুতিও দেখা যায়নি। এতে উপকারভোগী অসচ্ছ¡ল পরিবার ছাড়াও সাধারণ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ঠিকাদারদের চরম অবহেলায় সরকারের উপহারের পাকাঘরের মূখ দেখার সৌভাগ্য হতে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন বলেন, যেসকল মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বীরনিবাস পাচ্ছে, তাদের বেশিরভাগের বাড়ি-ঘর খুবই জীণশীর্ন। ঠিকাদারদের কার্যাদেশ পাওয়ার প্রায় ৩ মাস হতে চলেছে। কিন্তু ঘরের নির্মাণ কাজ এখনও শুরু হয়নি। এটা দুঃখজনক।
উপকারভোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য তুতা মিয়া, বাবুল আহমেদ, আফতারুন নেছা, নুরুন নেছা, ছালেকা বেগম, নূর উদ্দিন, সামারুন বেগম প্রমুখ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বীরনিবাস পেলে আমাদের মাথাগোঁজার ঠাঁই হবে। প্রশাসনের লোকজন ঘরের কাজ শিগগির শুরু হবে বলে জানিয়েছিলেন। ইতিমধ্যে কয়েক মাস হয়ে গেল। কিন্ত এখনও পর্যন্ত ঘরের কাজ শুরু হয়নি। এখন দুশ্চিন্তা হচ্ছে, আমরা কি আদৌই ঘর পাব।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. উবায়েদ উল্লাহ খান জানান, বারবার তাগিদ স্বত্বেও ঠিকাদাররা বীর নিবাসের নির্মাণ কাজ শুরু করছেন না। দুই মাস আগে নির্মাণ কাজ সম্পন্নের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ৫ জানুয়ারি পৃথকভাবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যাদেশ অনুযায়ি কাজ সম্পন্নের তাগিদপত্র দিয়েছেন। কাজ সম্পন্ন না করলে পিপিআর-২০০৮ (সর্বশেষ) অনুসারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এব্যাপারে মেসার্স জুনেদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারি জুনেদ আহমদ, ঠিকাদার সনিজৎ দাস ও আখি এন্ড মনি এন্টারপ্রাইজের বাকের আহমদ বলেন, ‘নির্মাণ সামগ্রীর দাম অনেক বেড়েছে। একটু দাম কমার অপেক্ষা করছেন। তবে কাজ শিগগিরই শুরু করবেন।’ হোমায়রা এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার ছায়াদ আহমদও দ্রুত কাজ শুরু করার কথা জানিয়েছেন।
Leave a Reply