নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) :: নওগাঁর আত্রাইয়ে গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) রোগের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্কের মধ্যে পড়েছেন উপজেলার গৃহস্থ ও খামারিরা। এই ভাইরাস ছরিয়ে পড়ায় উপজেলার খামারিদের কপালে পড়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। মারাত্মক এই রোগ মশা, মাছি, আঠালি বা ব্যবহৃত নিভেল ও সিরিঞ্জ বারবার ব্যবহারের মাধ্যমে আক্রান্ত পশু থেকে সুস্থ পশুর শরীরে ছড়াচ্ছে। রোগটির সুনির্দিষ্ট কোন প্রতিষেধক না থাকায় দিশেহারা গৃহস্থ ও খামারিরা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আত্রাই উপজেলা জুড়ে গরু রয়েছে প্রায় তিন লাখ। এর মধ্যে উপজেলায় গত দুই সপ্তাহে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা দাড়িয়েছে দুই শতাধিক। এই লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) ভয়ংকর একটি রোগ। এখন এই রোগ বাংলাদেশে মহামারী রুপে ধারণ করেছে। রোগটি এই উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ায় অনেক খামারি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) ভয়ংকর রোগে আক্রান্ত হলে, প্রথমে গরুর শরীর গরম হয়ে জ্বর উঠে যায়। তারপর শরীরের কয়েক জায়গায় ছোট ছোট গুটি উঠতে শুরু করে। এবং একপর্যায়ে ধীরে ধীরে সারা শরীরেই ছড়িয়ে পড়ে। শরীর ফুলে যায় এবং গরুর খাবারে অনীহা দেখা দেয়, এতে গরু দুর্বল হয়ে পড়ে বলে জানান খামারিরা।
গৃহস্থ ও খামারিদের অভিযোগ, রোগটি বর্তমানে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। তারা গ্রামের কিছু পশু চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। এতে গরু সুস্থ না হয়ে বরং বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
পশু চিকিৎসকরা বলছেন, বিরুপ আবহাওয়ার কারণে এ বছর বর্ষা মৌসুমের আগেই লাম্পি স্কিনের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এবং তা বিক্ষিপ্তভাবে ছড়াচ্ছে।
উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের গৃহস্থ মিন্টু প্রমানিক বলেন, দশ দিন আগে আমার গরুর গায়ে গুটি বের হয়েছে। গ্রাম্য ডাক্তারের কাছে থেকে চিকিৎসা করিয়েছি তাতে কোন কাজ না হওয়ায় ভাবছি আজ আমি গরুটাকে নিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে যাব।
উপজেলার ধুলাউড়ি গ্রামের খামারি আশরাফ আলী বলেন , আমার গোয়ালে নয়টি গরুর রয়েছে এর মধ্যে একটি গরুতে এই লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। গরুটিকে বাঁচাতে নানা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জানিনা কি হবে!
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকতা ডা.আবু আনাছ জানান, গরুর লাম্পি স্কিন রোগটি এখন বড় সমস্যা। ভয়ংকর এ রোগ থেকে গরুকে বাঁচাতে আমরা উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে জনসচেতনতা মূলক সভা করছি। লাম্পি ষ্কিন রোগে আক্রাš গরুগুলোকে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে।
এছাড়াও গৃহস্থদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে এ রোগে আক্রান্ত হলে প্রথমেই অসুস্থ গরুটিকে আলাদা করতে হবে।
মশারি টাঙিয়ে রাখতে হবে, যাতে মশা বা মাছি গরুর শরীরে যেন না বসে। এবং আমরা আমাদের চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে রোগটিকে প্রতিরোধের চেষ্টা করছি।
নাজমুল হক নাহিদ
আত্রাই, নওগাঁ
মোবাঃ ০১৭১৭-৭৯৭৯৩১
Leave a Reply