কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি:: সিলেট বন বিভাগের আওতাধীন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি বন রেঞ্জ কর্মকর্তার অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতায় সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি বনজ সম্পদ ধ্বংস হতে চলেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিভিন্ন সুত্র থেকে জানা যায়, রাজকান্দি বন রেঞ্জ কর্মকর্তা মো: তৌহিদুল ইসলাম রেঞ্জের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে নানা অনিয়ম, দুর্ণীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার একক রাজত্ব কায়েম করেছেন। রেঞ্জ কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম ও তার অধীনস্থ কর্মচারী বাগান মালি ফরিদ মিয়ার সহযোগিতায় অবৈধ অর্থের বিনিময়ে প্রায় রাতেই অবৈধভাবে বন রেঞ্জের আওতাধীন বন বিট এলাকা থেকে চোরাকারবারিরা বাঁশ ও গাছ পাচার করছে। ফলে বনজ সম্পদ ধ্বংস হতে চলেছে।
বিভিন্ন মাধ্যম থেকে অভিযোগে আরো জানা যায়, বন রেঞ্জের আওতাধীন আদমপুর, কুরমা ও কামারছড়া বন বিটের বনের মধ্যে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিপুল অর্থের বিনিময়ে স্থানীয় বাঙ্গালীদের পান চাষের অনুমোদন দিয়েছে। পান চাষ করতে গিয়ে সেখানকার শ্রমিকরা অবাধে বনের ভিতরে প্রবেশ করছে এবং অদক্ষ পান চাষীরা যথেচ্ছাভাবে বনের গাছপালা চাটাই করে বনজ সম্পদ ধবংস করছে।
অপরদিকে রাজকান্দি রেঞ্জের আওতাধীন আদমপুর বন বিটের ডালুয়া ব্লকের বিভিন্ন স্থান থেকে গত জুন মাসে ১৪/১৫টি সেগুন গাছ সহ নানা প্রজাতির প্রায় ২৫/৩০টি গাছ ঝড়ে পড়ার নামে রেঞ্জ ও বিট কর্মকর্তা মিলে পাচারকারীদের সহযোগিতায় গাছ কেটে নামমাত্র কাঠ বিট অফিসে সংরক্ষন করছেন।
সরেজমিনে ডালুয়াছড়া গভীর অরণ্যে ঘুরে দেখা যায়, উল্লেখিত স্থান থেকে বৃহৎ আকারে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কাটছেন এবং হাতি দিয়ে টেনে বিট অফিস সংলগ্ন স্থানে সংরক্ষন করছেন। এছাড়া আরো দেখা গেছে, গাছ কাটার পর পরই কাঠা গাছের মোথায় মার্কা দেয়ার নিয়ম থাকলে ও তা করছেন না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুত্রে জানা যায়, বৃহৎ আকারের গাছ কাটার পর পরই গাছের মধ্যাংশের অংশটুকু স্থানীয় গাছ চোরাকারবারীদের নিকট বিক্রি করে নামমাত্র কাঠ সংরক্ষন করছেন। এদিকে গত সপ্তাহে ট্রাক ও পিকআপ যোগে গাছ পাচার করতে দেখা যায়। তখন রেঞ্জ কর্মকর্তাকে ফোনে খবর দিলেও পাচারকৃত ট্রাক ও পিকআপ আটক করতে সক্ষম হয়নি। যাহা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সরজমিনে তদন্ত করলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজকান্দি বনরেঞ্জ কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ট্রাক ও পিকআপ দিয়ে গাছ পাচারের সংবাদ পেয়ে আটক করার জন্য গেলেও গাড়ি আটক করা সম্ভব হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।
Leave a Reply