এইবেলা নিউজ :: হাকালুকি হাওরের মালাম বিল রক্ষায় রুল জারি করেছেন মহামান্য হাইকোর্ট। বিলটির বর্তমান পরিণতির জন্য সংশ্লিষ্টদের দুরভিসন্ধিমূলক কার্যকলাপ ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যর্থতাকে দায়ী করা হয়েছে। ১৫ জানুয়ারি বিকালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক প্রেস বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়।
প্রেস বার্তায় বলা হয়, জেলার বড়লেখা উপজেলায় প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসবে ঘোষিত হাকালুকি হাওরের অন্তর্ভুক্ত মালাম বিল। ওই বিলের জলাবনের গাছকাটা, স্থাপনা নির্মাণ ও শ্রেণি পরিবর্তন থেকে রক্ষায় বিবাদীগণের ব্যর্থতা ও আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বিলটিকে পুনরায় ইজারা প্রদান সংবিধান ও প্রযোজ্য আইনের পরিপন্থি হওয়ায় কেন তা বেআইনি, আইনি কর্তৃত্ববিহীন ও জনস্বার্থ বিরোধী ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে বিবাদীগণের উপর গতকাল রুল জারি করেছেন মহামান্য হাইকোর্ট। রুলে হাকালুকি হাওরের সীমানা নির্ধারণ, নির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ, বাস্তবায়ন এবং অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, আহরণমূলক ও ক্ষতিকারক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী হাওরটিকে রক্ষা ও সংরক্ষণের নির্দেশ কেন প্রদান করা হবে না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
একই সঙ্গে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক কর্তৃক বিগত ২৫শে অক্টোবর ২০২০ সালে মনাদী মৎস্যজীবী সমিতি বরাবর প্রদানকৃত ইজারা বাতিল চেয়ে গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর বেলা কর্তৃক প্রেরিত চিঠি নিষ্পত্তির আদেশ প্রদান করেন আদালত।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কর্তৃক গত বছরের ২৭ নভেম্বর দায়েরকৃত একটি জনস্বার্থমূলক মামলার প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহ এর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের একটি ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেন। বেলা’র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এডভোকেট এস. হাসানুল বান্না এবং তাকে সহযোগিতা করেন এডভোকেট শামীমা নাসরিন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আযাদ সরকার।
উল্লেখ্য, দেশের বৃহত্তম হাওর হাকালুকি মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা, জুড়ী, ও কুলাউড়া উপজেলা এবং সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোপালগঞ্জ উপজেলা জুড়ে অবস্থিত। এটি দেশের অন্যতম প্রধান মিঠা পানির জলাবন। বিগত ১৯৯৯ সালের ১৯ এপ্রিল এ হাওরের ১৮ হাজার ৩৮৩ হেক্টর এলাকাকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত এ হাওরে ছোট-বড় অনেক বিল রয়েছে। যার মধ্যে মালাম বিল অন্যতম। মালাম বিলটি বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নে অবস্থিত, যার আয়তন ৪২৮.৯২ একর। বিলটি বদ্ধ জলমহাল হিসেবে ৫ বছর মেয়াদে জেলা প্রশাসক মানাদী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি বরাবর মৎস্য চাষের উদ্দেশ্যে ইজারা প্রদান করেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শন ও বড়লেখা ভূমি অফিসের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ইজারা চুক্তি লঙ্ঘন করে এ বিলের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট ও পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক সৃজিত বিভিন্ন প্রজাতির জলজ বৃক্ষ (হিজল, করচসহ অন্যান্য জলজ প্রজাতি) কেটে মানাদী মৎসজীবী সমবায় সমিতি ২ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ ও ১০-১২ বিঘা জমি চাষ উপযোগী করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর বড়লেখা থানায় ৭ জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করলেও প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকার বৈশিষ্ট্য নষ্ট করে জলজ প্রজাতির বৃক্ষ নিধন ও বাঁধ নির্মাণের স্পষ্ট অভিযোগ থাকলেও মামলায় ইজারা গ্রহীতাকে বিবাদী করা হয়নি এবং ইজারা চুক্তি বাতিল করা হয়নি। প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষিত হাকালুকি হাওর ও মালাম বিল রক্ষায় বেলা উল্লিখিত মামলাটি দায়ের করে।#
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply