এইবেলা রিপোর্ট::
হাকালুকি হাওরের পোয়ালা বিল ও হুগলা ভরা তামসা কুড়ি মৎস্য বিলের ইজারা জটিলতার সুযোগে অসাধুরা দলবেধে অবৈধ জাল ফেলে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মাছ লুট করছে। অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় হাকালুকি ভূমি অফিসের তহশিলদারকে ম্যানেজ করে মৎস্য লুটেরা বাহিনী দিনে-দুপুরে প্রকাশ্যে সরকারি জলমহালের মাছ লুট করছে। দীর্ঘদিন ধরে অসাধুরা নির্বিচারে অবৈধভাবে জলমহালের মাছ শিকার করলেও উপজেলা ভূমি প্রশাসন (এসিল্যান্ড) ও মৎস্য বিভাগ রয়েছে নির্বাক।
জানা গেছে, হাকালুকি হাওরের অন্যান্য বিলের সাথে পোয়ালা বিল ও হুগলা ভরা তামসাকুড়ি বিলের চলিত বাংলা সনের ইজারা প্রদানের প্রক্রিয়া গ্রহণ করে জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি। ক্যালেন্ডারভুক্ত বিলগুলোর ইজারা যথাসময়ে সম্পন্ন হলেও ইজারা শর্তানুযায়ি (রাজস্ব বেশি) দরপত্র জমা না পড়ায় কোনো মৎস্যজীবি সমিতিকে এই দুইটি বিল লীজ দেওয়া হয়নি। লীজ গ্রহীতা না থাকায় এই দুইটি বিল খাস কালেকশনে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয় ভূমি অফিসের তশিলদারের সাথে আতাঁত করে প্রভাবশালীরা জালিয়া ভাড়া করে বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করে পোয়ালা ও হুগলা বিলে অবৈধ জাল টানিয়ে প্রতি দিনরাতে লাখ লাখ টাকার মাছ শিকার করছে। অভিযোগ রয়েছে কমমূল্যে বিল দুটি পাইয়ে দিতে তিনি অনেক সমিতির কাছ থেকে উৎকোচ নিয়ে ইজারা মূল্য কম দিতে পরামর্শ দেন।কিন্তু সরকারি রাজস্ব মূল্য বেশি হওয়ায় বিল দুটির ইজারা দেওয়া যায়নি। আর এতে তিনি থাস কালেকশনে এনে দিবেন বলে কথা দিলেও খাস কালেকশন চলে যাবার আগেই ভাগ্য খুলে যায় তহশিলদার শাহ কয়ছর আলীর। বড় অঙ্কের উৎকোচ নিয়ে অসাধু চক্রকে অবৈধভাবে মাছ শিকারের সুযোগ দিচ্ছেন।এছাড়া অভিযোগ রয়েছে তিনি সরকারি অভয়াশ্রমগুলোতেও টাকার বিনিমেয়ে মাছ আহরণের সুযোগ দিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে পোয়ালা বিলে গিয়ে দেখা গেছে ১০/১২ জনের একেকটি জালিয়া দল নিষিদ্ধ জাল দিয়ে অবৈধভাবে মাছ শিকার করছে। জালিয়ারা জানান, তারা দিনমজুর হিসাবে এসব জাল টানেন। জালের মালিক তহশিলদারকে টাকা দিয়ে জালিয়া দলকে বিলে নামান। মাছ ধরা শেষ হলে মালিককে তা বুঝিয়ে দিয়ে তাদের পারিশ্রমিক নিয়ে তারা চলে যান। মুতলিব মেম্বারের ভাই চান মিয়া আজকে (বৃহস্পতিবার) থেকে তিনটি দলকে বিলে জাল দিয়ে মাছ ধরাতে নামিয়েছে। তারা গরীব মানুষ তাদের বিরুদ্ধে পত্রিকায় কোনো কিছু না লিখতে অনুরোধ জানিয়েছেন। সূত্র জানায়, একেকটি জালিয়া দল থেকে তহশিলদার ৫০ হাজার টাকা করে আদায় করেন। প্রতিদিন বেলা দুইটা থেকে রাতভর চলে অবৈধ মাছ আহরণ। এভাবে ৩/৪টি গ্রুপ হাওরের মাছ লুট করছে।
হাকালুকি ভূমি অফিসের তহশিলদার শাহ কয়ছর আলী অবৈধ মাছ শিকারে নিয়োজিত জালিয়া ও জালের মালিকের সাথে তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
Leave a Reply