এইবেলা, কুলাউড়া ::
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া ও জুড়ী উপজেলায় অবস্থিত গোগালীছড়া (বদ্ধ) জলমহালটি জবর দখল করে মাছ লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে ৪ ইউপি সদস্যসহ প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে দুই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারি কমিশনার (ভুমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শাপলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলার মীরশংকর ও দৌলতপুর মৌজা এবং জুড়ী উপজেলার কুরবানপুর মৌজায় ২৬ একর আয়তন বিশিষ্ট গোগালীছড়া বদ্ধ জলমহাল রয়েছে। জলমহালটি ভুকশিমইল ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার সমছু মিয়া, ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার ফজলু মিয়া, গৌড়করণ গ্রামের বাসিন্দা নজরুল মিয়া, মহেষগৌরীর কামাল মিয়া ও জয়চন্ডী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার বিমলেন্দু শেখর দাস (বিমল) এবং জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার মতছিন আলী ও তার সহযোগিরা মিলে দীর্ঘ ৬ বছর থেকে জবরদখল রেখেছেন।
গোগালীছড়া (বদ্ধ) জলমহালটি (১৪২৫-১৪৩০ বাংলা) ৬ বছর মেয়াদে প্রথম ৪ বছর বার্ষিক ১ লাখ ৭২ হাজার ৬২০ টাকা এবং শেষ ২ বছরে আরও ২৫ শতাংশ বর্ধিত হারে শাপলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতিকে উন্নয়ন প্রকল্পে ভূমি মন্ত্রণালয় হতে ইজারা বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়। ইজারা গ্রহিতা সমিতি তাদের ইজারা মূল্য সরকারি কোষাগারে জমা দেয়। কিন্তু কুলাউড়া ও জুড়ী উপজেলার কয়েকজন ইউপি সদস্য ও তাদের সহযোগিরা মিলে জলমহালে অবৈধভাবে বেড়জাল বসিয়ে মাছ লুটপাট ও ভোগদখলে রেখেছেন। ফলে সরকার উক্ত জলমহাল থেকে বছরে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে।
এব্যাপারে ২০১৯ সনে জুড়ী থানায়, ২০২০ সনে জেলা প্রশাসকের কাছে একাধিক লিখিত অভিযোগ দেন ইজারাদার। জুড়ী উপজেলা প্রশাসন এবং পুলিশি তদন্তে মাছ লুটসহ ইজারাদারকে মাছ আহরণে বাঁধার ঘটনা প্রমানিত হয়। কিন্তু অভিযুক্তরা জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী হওয়ায় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
শাপলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জানান, জলমহাল লিজ দেয়া হলেও প্রভাবশালীদের কারণে তিনি জলমহাল ভোগদখল করতে পারেননি। এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ লাখ টাকার রাজস্ব প্রদান করেছেন। কিন্তু লাভের মুখ দেখা তো দুরের কথা, উল্টো ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জায়ফরনগর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য মো: ফজলু মিয়া জানান, এটা বিল নয়, চলমান একটি নদী। এলাকার স্বার্থে তিনি একটা বেড়াজাল বসিয়েছেন। বছরে ৬০ থেকে ৮০ বা এক লাখ টাকায় বিক্রি হয়। এই টাকা বোরো মৌসুমে ক্ষেতের পানি সেচে লাগানো হয়। এরপর যে অর্থ থাকে তা মাদরাসায় দান করা হয়।
ওই ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার মো. মতছিন আলী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এসব তিনি কিছু জানেন না। শাপলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতিও তিনি চিনেন না।
জয়চন্ডীর ইউপি সদস্য বিমল দাসের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
এ বিষয়ে কুলাউড়া সহকারি কমিশনার (ভুমি) শাহ্ জহুরুল হোসেন জানান, অবৈধভাবে জোরপূর্বক মাছ ধরার একটা অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply