বিলকিস পারভীন::
আমি একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা, এই পেশায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পেরে আমি গর্ববোধ করি। একটি শিশুকে আদর্শ মানুষ ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার কঠিন দায়িত্ব আমার উপর। নিজের সবটুকু দিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করি শিশুদের শিক্ষা জীবনের ভিত্তিটা মজবুত করতে।
আমার বিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীকে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাই এখন আমার স্বপ্ন। এই স্বপ্নপূরণে শুধু যে শতভাগ শিক্ষকেরই ভূমিকা রয়েছে তা কিন্তু নয়, এর অনেকটাই নির্ভর করে সহকর্মীদের আন্তরিকতা, বিদ্যালয়ের পরিবেশ এবং কার্যক্রমের উপর।
বর্তমানে বিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন সৃজনশীল কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়ে থাকে শিশুদের মেধা এবং মননশীলতার পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনের উদ্দেশ্যে। সেজন্য চাই বিদ্যালয়ের উপযুক্ত পরিবেশ, শিক্ষকের সৃজনশীল মনোভাব এবং আন্তরিকতা। আমার বিদ্যালয় কাঠালতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি। এখানে আমি ৩ বছর হল যোগদান করেছি। যোগদানের পর কয়েক দিনের মধ্যেই আমি বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের এতোটাই কাছের হয়ে গেছি যে ওরা ওদের সব আবদার আমার কাছে বলে। ওদের কচিমুখগুলো আর ওদের ভালোবাসা আমার শিক্ষকতা জীবনের প্রেরণা। সহকারী শিক্ষকদের সাথে সমন্বিত হয়ে শিক্ষার উন্নয়নে আমার প্রচেষ্টার ত্রূটি নেই। নিজেকে এবং বিদ্যালয়কে কিভাবে উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারি সেলক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আমার নেয়া পদক্ষেপগুলোর কিছুটা তুলে ধরলাম :
১. শতভাগ ভর্তি নিশ্চিতকরণ। ২. শতভাগ উপস্থিতি ও ইউনিফর্ম নিশ্চিতকরণ। ৩. বিদ্যালয় ভৌত কাঠামোগত উন্নয়ন। ৪. লেখাপড়ার গুণগতমান নিশ্চিতকরণ। ৫. ঝরে পড়ার হার ০% এ নিয়ে আসা। ৬. স্লিপ ও আর্থিক বরাদ্দগুলো সচ্ছতা ও সততার সাথে যথাযথ ব্যবহার। আমার স্বপ্ন এই বিদ্যালয়টিকে একদিন আদর্শ বিদ্যালয় হিসেবে এবং উপজেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়ে রূপদান করবো। এখানে থাকবে একটি মনোরম ফুলের বাগান যা থেকে শিশুরা ফুলের শুভ্রতা আর পবিত্রতার শিক্ষা নেবে। থাকবে দোকানদার বিহীন সততার দোকান। যেখান থেকে শিশুরা নৈতিক ও মানবিক গুনাবলী শিখবে। আমার সপ্ন এই প্রতিষ্ঠানটির এতো এতো সুনাম হোক, যেন একদিন এই বিদ্যালয় হয়ে উঠে দেশের সেরা একটি বিদ্যালয় এবং আমি হব দেশ সেরা শিক্ষক।
লেখক :
বিলকিস পারভীন
প্রধান শিক্ষক, কাঠালতলী সপ্রাবি।
বড়লেখা, মৌলভীবাজার।
Leave a Reply