এইবেলা, কুলাউড়া :: সিলেট-আখাউড়া রেলপথের গুরুত্বপূর্ন কুলাউড়া জংশন স্টেশনটির বেহাল দশা। নানামুখি সমস্যার দরুন প্রতিনিয়ত স্টেশনে আসা যাত্রীরা দূর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। স্টেশনের প্রবেশ মুখে বড় দুইটি গর্তে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। ব্যবহার অনুপযোগি বাথরুমের পাইপ ফেটে ময়লা ও পানি পড়ছে বাইরে। দুর্গন্ধে অতিষ্ট যাত্রী সাধারণ। ট্রেনের সিডিউল বোর্ডে অসংগতি। ট্রেনের সময় ও বন্ধের দিন পরিবর্তন হলেও বিল বোর্ড পরিবর্তন হয়নি। ভিআইপি ও প্রথম শ্রেণির বিশ্রামাঘার সবসময় থাকে তালাবদ্ধ। এছাড়াও জংশনে কোয়ার্টারগুলি অবৈধভাবে ভাড়া দিয়ে চলছে রমরমা বানিজ্য। এসব যেন দেখার কেউ নেই।
কুলাউড়া জংশন স্টেশন দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীদের অভিযোগ, স্টেশনের প্রবেশমুখে বাথরুমের ট্রাংকির পাইপ ফাটা। ফাটা পাইপ দিয়ে ময়লা ও পানি স্টেশন গড়িয়ে মেইন সড়ক পর্যন্ত চলে আসছে। যাত্রীরা নাকে রুমাল দিয়ে স্টেশনে প্রবেশ করতে হয়। ময়লা পানি মাড়িয়ে স্টেশনে প্রবেশকারী যাত্রীদের জুতা ও কাপড় ছোপড় নষ্ট হয়। এছাড়াও ট্রেনের সিডিউল পরিবর্তন হলেও স্টেশনে টাঙানো দুটি বিলবোর্ডে পরিবর্তন করা হয়নি। ফলে ট্রেনের সিডিউল এবং ট্রেন বন্ধ নিয়ে যাত্রীরা চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে। যাত্রীরা জানান, সোমবার পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে তিনি সিলেট যাওয়ার জন্য আসেন স্টেশনে। এসে দেখেন ট্রেন সোমবারে বন্ধ। অথচ বিলবোর্ডে পারাবত এক্সপ্রেস বন্ধের তালিকায় এখনও মঙ্গলবার লেখা রয়েছে। এছাড়াও ট্রেনের সিডিউল পরিবর্তন হওয়ায় কয়েকমাস অতিবাহিত হলেও বিলবোর্ড পরিবর্তন না করায় যাত্রীরা বিড়ম্ববনায় পড়ছেন। তাছাড়া ট্রেনের সময়ের পূর্বে বিশ্রামার খোলার নিয়ম থাকলেও কুলাউড়া স্টেশনের বিশ্রামাগার সবসময় বন্ধ থাকে। ভিআইপি বিশ্রামাগার এসির চেয়ার কিংবা এসি স্লিপার কোচের যাত্রীদের জন্য খোলে দেয়া হয় না। আর প্রথম শ্রেণির বিশ্রামাগারে বসার কোন উপায় নেই। গন্ধে সেখানে যাত্রীতো দুরের কথা কোন পাগলও প্রবেশ করে না। ফলে যাত্রীরা বাধ্য হয়ে প্লাটফরমে মালামাল নিয়ে ট্রেন না আসা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

এদিকে মো: আব্দুল মালিক নামে রেলওয়ে কোয়ার্টারে বসবাসরত এক ব্যক্তি রেলপথ মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, কুলাউড়া জংশনে রেলওয়ের ১৫০ টির মতো রেলওয়ে কোর্য়াটার রয়েছে। এরমধ্যে অর্ধেকের বেশী কোয়ার্টার পরিত্যাক্ত অবস্থায় আছে। এই পরিত্যাক্ত কোয়াটারগুলি মাসিক ১ হাজার ৫ থেকে ২ হাজার টাকা করে ভাড়া দিয়ে লোকজনকে বসানো হয়েছে। অবৈধ বসবাসকারীদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ বিল বাবৎ মাসিক আরও অতিরিক্ত ৫শ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেসব বিল পরিশোধ করা হয় না।
আব্দুল মালিক আরও জানান, কোয়ার্টারের জন্য তাকে অগ্রিম ২৭ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। জামানত বাবৎ টাকা নেওয়ার কিছুদিন পর আমাকে কোয়ার্টার ছাড়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয়। তখন আমি আমার জামানতের টাকা ফেরৎ চাই। টাকা ফেরৎ চাইলে রেলওয়ের উধর্¦তন উপ সহকারী (কার্য) জাকির হোসেন খাঁন নানা টালবাহানা করতে থাকেন। আমি বিষয়টি লিখিত আকারে জেলা প্রশাসক মৌলভীবাজারসহ একাধিক উধর্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে প্রতিকার চেয়েছি।
বিগত সরকারের সময় রেলওয়ে শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিত্যক্ত কোয়ার্টার ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলের টাকা উত্তোলন করতেন। পট পরিবর্তন হলেও কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে তিনি এখনও পালন করছেন সেই দায়িত্ব।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পরিত্যক্ত কোয়ার্টার থেকে আদায়কৃত ভাড়াগুলি স্টেশন ও জংশন সংশ্লিষ্টরা ভাগভাটোয়ারা করে খাচ্ছেন। দীর্ঘদিন থেকে এসকল অপকর্ম চলে আসলেও কোন স্থায়ী সমাধান হচ্ছেনা।
কুলাউড়া স্টেশন মাষ্টার রুমান আহমদ জানান, বাথরুমের ময়লার টাঙ্কি পরিষ্কারের কাজ চলছে এবং খুব শীগ্রই ঠিক হবে এবং ট্রেনের টাইম ও সিডিউলের বিলবোর্ড সংশোধন করা হবে।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া জংশনের উর্ধবতন উপ সহকারী (কার্য) জাকির হোসেন খাঁনের অফিসে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি ফোন না ধরায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।#
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply