এইবেলা, কুলাউড়া ::
কুলাউড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নে নিহত স্কুল ছাত্রী শাম্মী আক্তারকে বিষপানে মৃত্যুতে প্ররোচনাকারী ২ বখাটে পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। মামলা দায়েরের এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শাম্মির পরিবার।
০৩ নভেম্বর মঙ্গলবার নিহত শাম্মীর বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলন করে অবিলম্বে আসামীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শাম্মীর মা নাছিমা বেগম। এসময় শাম্মীর বাবা কালা মিয়া ও দাদী সাহেদা বেগম সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।
শাম্মীর পরিবারের দাবি, স্থানীয় অগ্রনী উচচ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর ছাত্রী আমার মেয়ে শাম্মি আক্তারকে পাশ্বর্তী শংকরপুর গ্রামের বকুল মিয়ার পুত্র বখাটে সিএনজি চালক রিজন আহমদ বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে আমরা বিয়েতে রাজি না হওয়ায় রিজনের প্ররোচনায় বিষপান করে মৃত্যুবরন করে আমার মেয়ে। নানা নাটকিয়তার পর মৃত্যুর ২ দিন পর ২৭ অক্টোবর পুলিশ বখাটে রিজন ও তার সহযোগী বখাটে সিএনজি চালক নুরুলের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড ( মামলা নং ১৮,ধারা ৩০৬/৩৪) করলেও পুলিশের তৎপরতা নেই বললেই চলে। পুলিশ আমার মেয়ের সাথে রিজনের ২৮ মিনিট কথোপকথনের কল রেকর্ড এখনো উদ্বার করেনি।
রিজনের পরিবারের সদস্যরা আমাদেরকে মিথ্যে মামলা দিয়ে ফাঁসানোসহ মামলা তুলে নেয়ার জন্য অব্যাহত চাপ প্রয়োগ করছে । বিষয়টি তারা পুলিশকে জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুলাউড়া থানার এসআই মাসুদ আলম ভ্ইুয়া জানান, শাম্মির সাথে ২৮ মিনিট মোবাইলে কথোপকথনের রেকর্ড সংগ্রহের জন্য আবেদন করা হয়েছে । এখনো রেকর্ড পাইনি। অন্যদিকে আসামীরা বাড়ি ঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। তবে তাদেরকে ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
উল্লেখ্য, সদর ইউনিয়নের করেরগ্রামের বাসিন্দা কালা মিয়ার মেয়ে শাম্মি আক্তার (১৫) স্কুলে যাওয়ার আসার সুবাধে পাশর্^বর্তী শংকরপুর গ্রামের বকুল মিয়ার পুত্র সিএনজি চালক বখাটে রিজন প্রেমের প্রস্তাব দিত। কিন্তু শাম্মি প্রেমে রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন কৌশলে রিজনের বন্ধু শাম্মির প্রতিবেশী নুরুল মিয়ার সহযোগিতায় শাম্মির সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। রিজন প্রায়ই শাম্মিকে নানাভাবে উত্যক্ত করতো। শাম্মির পরিবার সেই প্রেমের সম্পর্ক মেনে নেয়নি। বখাটের সাথে সকল প্রকার সম্পর্ক ছিন্ন করতে শাম্মিকে চাপ দেয়।
কিন্তু বখাটে রিজন এতে ক্ষিপ্ত হয় উঠে এবং বিয়ের প্রস্তাব দেয় শাম্মির পরিবারের কাছে। পরিবার তা মেনে না নিলে এক পর্যায়ে বখাটে রিজন বিষ খেয়ে মরার জন্য শাম্মিকে প্ররোচনা দেয়। ঘটনার দিন ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় রিজন শাম্মির সাথে মোবাইল ফোনে ২৮ মিনিট কথা বলার পরেই শাম্মি বিষপান করে। শাম্মির বিষপানের খবর তার পরিবার না জানলেও রিজনের বন্ধু নুরুল মিয়া শাম্মির দাদিকে বিষয়টি অবহিত করে। এরপর শাম্মির পরিবার ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে শাম্মিকে কাতরাতে দেখে সাথে সাথে তাকে কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে রাত সাড়ে ১১ টায় শাম্মি মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত শাম্মির পিতা কালা মিয়া বাদি হয়ে শংকরপুর গ্রামের বকুল মিয়ার পুত্র রিজন আহমদ (২১) ও তার সহযোগী করেরগ্রামের মইনুল মিয়ার পুত্র নুরুল ইসলাম (১৮) কে আসামী করে কুলাউড়া থানায় মঙ্গলবার ২৭ অক্টোবর রাতে আত্মহত্যার প্ররোচনায় মামলা (নং ১৮) দায়ের করেন। #
Leave a Reply