প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ :::
বৈশ্বিক করোনার কারণে যখন এক বছর উপরেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। ঠিক এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে দৃষ্টি নন্দন কেড়েছেন মৌলভীবাজরের কমলগঞ্জ উপজেলার আম্বিয়া কিন্ডার গার্ডেন স্কুল ও হাফিজিয়া মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এই শিক্ষা প্রতিষ্টানের পাশে কমলগঞ্জের আব্দুল গফুর চৌধুরী মহিলা কলেজের গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও উপজেলা সুজন এর সাধারণ সম্পাদক রাবিয়া খাতুন সূর্যমুখী ফুলের বাগান করেছেন। এতে একদিকে যেমন স্কুল সৌন্দর্য বেড়েছে পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সুস্থ মানসিকতা বিকাশে এই ফুলের বাগান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এই উদ্যোগটি ইতোমধ্যে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে। প্রতিদিন আশপাশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সৌন্দর্য পিপাসু মানুষ এই বাগান পরিদর্শন করতে আসে এবং তারা তাদের মোবাইল ফোনে সেলফি ও ভিডিও করে রাখছেন টিকটক করার জন্য। আবার অনেকেই তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সূর্যমুখী ফুলের এমন বাগান করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সব মিলিয়ে এই সূর্যমুখী বাগানকে ঘিরে ভালো লাগার একটা ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।
সূর্যমুখীর বাগান দেখতে আসা বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা বলেন, স্কুলের পাশেই মাঠে সুন্দর একটি সূর্যমুখী ফুলের বাগান করা হয়েছে। বিষয়টি ভেবেই ভালো লাগছে। এমন মনোমুগ্ধকর পরিবেশে ঘুরতে কার না মন চায়। তাইতো আমরা কয়েকবার এই সূর্য মুখী ফুলের বাগান দেখতে আসছি। এমন উদ্যোগের জন্য স্কুল ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।
ঘুরতে আশা মৌসুমী মিকি মৌ বলেন, আমি প্রায় ১০ বছর ধরে কমলগঞ্জে বসবাস করছি। আমার মূল বাড়ি ঢাকাতে। আমি এখন কমলগঞ্জে থাকি, আমার মেয়ে তাদের স্কুলে পড়াশোনা করে। আর এই স্কুলের পাশেই এমন উদ্যোগ নেওয়াতে আমার খুব খুশি। তাছাড়া, সূর্য যখন যেদিকে হেলে যায়, সূর্যমুখী ফুলও সেদিকে হেলে থাকে, যা দেখে অনেকেই মুগ্ধ হয়ে চেয়ে থাকে আর সেলফি ওঠাতে ব্যস্ত সময় পার করছি এখানে দেখতে এসে।
আম্বিয়া কিন্ডার গার্ডেন স্কুল শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এই ফুলের বাগানটি একদিনে হয়নি। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্টানের প্রতিষ্টাতা অনেক পরিশ্রম করে এটাকে গড়ে তোলেছেন। শিক্ষকরা যাতে সুন্দর পরিবেশে ক্লাস নিতে পারেন এবং শিক্ষার্থীরা যেন মনোরম পরিবেশে ক্লাস করতে পারে এই উদ্দেশ্যেই সূর্যমুখী ফুলের বাগানটি করা হয়েছে।
কমলগঞ্জের আব্দুল গফুর চৌধুরী মহিলা কলেজের গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও উপজেলা সুজন এর সাধারণ সম্পাদক রাবিয়া খাতুন বলেন, তিনি উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় এই সূয মুখী ফুলের উৎপাদন করেছেন। কমলগঞ্জে সর্বপ্রথম দুজন এমন উদ্দ্যোগ গ্রহন করে, তার মাঝে তিনি একজন। প্রায় ২০ শতক জায়গায় তিনি এই ফুল চাষ করেছেন।
সূর্যমুখি ফুলের বাগান করার কারণ জানতে গেলে তিনি বলেন, আসলে এটা আমার নিজের উদ্যোগে করেছি। সূর্যমুখীর কান্ড জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার ও বিক্রি করা যাবে। যা থেকে বাড়তি একটা লাভ মিলবে। তাছাড়া এটি চাষে তেমন কোনো ঝামেলা নেই। শুধু দুটি সেচ দিলে এবং ফুলগুলো একটু পর্যবেক্ষণ করলেই হলো। এই ফুলের বাগান করাতে ৩ ধরনের লাভ হচ্ছে। যেমন মধু সংগ্রহ করা যায়, তেল তৈরী করা যায়। তাছাড়া সল্প আয়ে বিরাট লাভবান হওয়া যায়। তিনি আরো বলেন, মানুষ যাতে করে বাড়ির পাশে যেকোন জায়গায় এমন সূর্যমুখি ফুলের বাগান করতে পারে। সেটাতে অনেক লাভও আছে তা মানুষ আসলে দেখিয়ে দিচ্ছেন। মানুষকে উৎসাহ দেওয়াই হচ্ছে উনার কাজ। যাতে করে বেকার না ঘুরিয়ে এমন উদ্যোগ সবাই নিতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
কমলগঞ্জ আব্দুল গফুর চৌধুরী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ও আম্বিয়া কিন্ডার গার্ডেন স্কুল ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্টাতা মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, আমার সহধর্মিনী সহকারী অধ্যাপক রাবিয়া খাতুন উনার নিজ উদ্যোগে এই ফুল বাগানটি করেছেন। করোনাকালে কলেজ বন্ধ থাকায় স্কুলের পাশে মাঠের এক কোনে ২০শতক জমিতে সূর্যমুখী ফুল বাগান করেছেন। এখন এই সূর্যমুখী ফুলের বাগান পরিপূর্ণতা লাভ করেছে। এই বাগানটি স্কুল ও মাদ্রাসার সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির পাশাপাশি এলাকায় ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। এখন প্রতিদিনই সূর্যমুখী ফুল দেখতে বিভিন্ন কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আসছেন।#
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply