আব্দুর রব, বড়লেখা ::
মৌলভীবাজারের জুড়ী-ফুলতলা-বটুলি সড়কের মজবুতকরণ ও বর্ধিতকরণ কাজ নিয়ে কয়েক দিন ধরে বড়লেখার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সোস্যাল মিডিয়ায় চলছে তুমুল সমালোচনা ও মন্তব্য। রাস্তার যে স্থানটি নিয়ে এতো হৈচৈ, সে ৪ কিলোমিটারের বর্ধিতকরণ কাজের এখনও অনুমোদনই হয়নি। জনদূর্ভোগ লাঘবে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সড়ক ও জনপথ বিভাগকে শুক্রবার রাতে নির্দেশনা দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এমপি। এর প্রেক্ষিতে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান আপাতত চলাচল উপযোগী করতে বেহাল সড়কটিতে শনিবার থেকে ইট বালু ফেলতে শুরু করেছে।
এদিকে মুল প্রকল্পের ২২ কিলোমিটার রাস্তার কাজ শেষ হচ্ছে না নির্ধারিত সময়ে। করোনার কারণে শতভাগ কাজ সম্পন্ন করতে না পারায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়েছে। তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দাবী প্রতিকুলতার মধ্যেও তারা প্রকল্পের ৫৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন করেছে। অপরদিকে প্রকল্পের শেষ অংশের ৪ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে দূর্ভোগ পোয়াচ্ছেন এলাকাবাসী। এর জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করে একটি মহল সোস্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় তুলছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বলছে এ অংশের বর্ধিতকরণ কাজের তারা অনুমোদনই পায়নি, কাজ করবে কিভাবে। সওজের অনুমোদনহীন অংশ নিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সোস্যাল মিডিয়ায় চালানো নেতিবাচক সমালোচনাকে অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক বলেছেন মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়া উদ্দিন।
জানা গেছে, জুড়ী উপজেলা সদর থেকে ফুলতলা-বটুলি শুল্ক স্টেশন পর্যন্ত ভাঙাচোরা প্রায় ২২ কিলোমিটার সড়কটি ৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রশস্থ ও মজুবতকরণের কাজ পায় ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দুই বছরে কাজ সম্পন্নের চুক্তিতে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারীতে কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। পরে সড়কের ১০ কিলোমিটার জায়গার কাজের দায়িত্ব দেয় বড়লেখার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। গত কয়েক দিন ধরে সওজের অনুমোদনহীন ৪ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল অবস্থার জন্য স্থানীয় ওই ঠিকাদারকে দায়ী করে একটি মহল সোস্যাল মিডিয়ায় তুমুল সমালোচনা চালাচ্ছে।
ওয়াহিদ কন্সট্রাকশন লিমিটেডের প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান জানান, ওয়ার্কঅর্ডার পেয়েই তারা প্রকল্পের কাজ শুরু করেন। কিছু অংশের কাজ করার জন্য তারা বড়লেখার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নিযুক্ত করেছে। ওই অংশের শেষ দিকের বর্ধিতকরণ কাজের এখনও অনুমোদন মিলেনি। অনুমোদনহীন অংশের কাজ না হওয়ায় একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের তদারকিতে গুনগত মান নিয়ন্ত্রণ করেই ইতিমধ্যে তারা প্রকল্পের ৫৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করেছেন। শুরুতেই করোনা সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন করতে না পারায় সময় বর্ধিত করা হয়। এবছরের ১৪ এপ্রিল থেকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় জনবল ও মালামাল সংকটে বর্ধিত সময়েও কাজ সম্পন্ন না হওয়ার আশংকায় ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়েছে।
সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়া উদ্দিন জানান, জুড়ী-ফুলতলা-বটুলি রাস্তা মজবুতকরণ ও প্রশস্থকরণ প্রকল্পের শেষ অংশের ৪ কিলোমিটার রাস্তা বর্ধিতকরণের প্রস্তাব পাঠানো হলেও এখনও অনুমোদন পাওয়া যায়নি। ২ মে সড়ক ভবনে পুনরায় এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছেন, রিপ্লাই পাননি। ঠিকাদারের সাথে চুক্তির আগেই সোস্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা-মন্তব্য অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক। অনুমোদন পাওয়ার সাথে সাথেই দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। পরিবেশমন্ত্রীর নির্দেশনায় ঠিকাদারী প্রতিষ্টান আপাতত জনসাধারণের চলাচলের উপযোগী করতে সড়কটিতে শনিবার থেকে ইট বালু ফেলতে শুরু করেছে।#
Leave a Reply