জাদুকাটায় নিলামের আড়ালে খনিজ বালু পাথর লুট :
নিজস্ব প্রতিবেদক ::
নিলামের আড়ালে জাদুকাটা নদীর তীর কেটে সেইভ মেশিনে লুটে নেয়া হচ্ছে কোটি টাকার খনিজ বালু পাথর। অভিযোগ উঠেছে নদীর তীর কেটে এসব বাল পাথর লুটে নিতে নিরাপদে বালু পাথর সড়িয়ে নিতে ব্যবসায়ী শ্রমিকদের নিকট হতে নিলাম প্রাপ্ত দুই ব্যক্তি এবার চালান পত্রের বিরীতে স্বাক্ষর বিক্তি করছেন অর্ধ লক্ষ টাকায়। বিএনপি নেতাকর্মীরা নিলাম ডাক পেয়ে শুভংকরের ফাঁকিতে দিতে এসব অপকর্ম অনৈতিক সুবিধা দিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার মাধ্যমে নীরবে সায় দিয়েছেন সদ্য বদলী কৃত উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা ইউএনও পদ্মাসন সিংহসহ আরো ক’জন অসৎ কর্তকর্তা। এমন কথাই চাউর হচ্ছে প্রতিনিয়ত লোকমুখে।
মঙ্গলবার দিনভর পরিবেশ ও মানবাধিকার উন্নয়ন সোসাইটির ঢাকা হতে আসা একটি প্রতিনিধি টিমের পরিদর্শন পরবর্তী দেয়া তথ্য মতে চলতি বছর ২৪ জুন টাস্কফোর্সের অভিযানে জাদুকাটায় প্রথম দফায় জব্দকৃত ৫০ হাজার ঘনফুট নরিপাথর উপজেলার ঘাগটিয়ার আবু সাইদ ও ৪০ হাজার ঘনফুট বালু নিলামে ক্রয় করেন পৈলনপুরের জাকির হোসেন। কৌশেলে জব্দকৃত বালু পাথর জব্দের পরিমাণ কম দেখিয়ে এরপর নির্ধারিত জব্দ তালিকাকে পাস কাটিয়ে নয় ছয় করে ক্ষমতাপত্রে লিখিয়ে আনেন নদীর সীমানা তীর। উপজেলার ঘাটিয়ার গ্রামের উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতার ভাই মোশাহিদ তালুকদার পর্দার আড়ালে থেকে নিলাম পেতে দুই বিএনপি নেতা-কর্মীকে নিলাম ডাকে অংশ গ্রহণ করিয়ে প্রায় ৩৭ লাখ টাকা বিনিয়োগ কওে বালু পাথরের নিলাম বাগিয়ে নেন। এরপর উপজেলার এক আওয়ামী লীগ নেতাকে দুর্নীতির সিড়ি হিসাবে ব্যবহার করে তিনি শুরু করেন নদী তীর কেটে সরকারি খনিজ বালু পাথর লুটের অবাধ বাণিজ্য। বালু পাথর সড়িয়ে নেবার ক্ষমতাপত্র হাতে পেয়ে বনে যান নদীর শোষক। গত কয়েকদিন ধরে নদী তীর কেটে তার আত্বীয় পটল ও মুসআলম গং সহ আরো বেশ কয়েকজনকে দিয়ে সেইভ মেশিনে বালু পাথর উক্তোলন করে প্রায় কোটি টাকার অতিরিক্ত বালু পাথর প্রকাশ্যে সড়িয়ে নেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এসব অবৈধ ভাবে উক্তোলকরা বালু পাথর নৌকা লোড করে ছেড়ে যাবার পথে নিলাম প্রাপ্তরা স্বাক্ষর ব্যবসায়ীদের নিকট গোপনে স্বাক্ষর বিক্রি করছেন ৫০ হাজার থেকে সর্বনিম্ন ১০- ২০ হাজার টাকায়।
ব্যবসায়ী শ্রমিকরা লুটের বালু পাথর নিরাপদে নিলামের নামে নৌ পথে সড়িয়ে নিতে তাদেরকে টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। অনিলাম বা জব্দকৃত নয় এমন ১৬ ব্যক্তির কয়েক লাখ টাকার বালু পাথর বগলদাবা করেন এ চক্র। অন্যদের জব্দকৃত বালু পাথর ফেরত দিয়ে নিলামে পরিশোধ করা ৩৬ লাখ টাকার পরিবর্তে প্রায় ৪৫ লাখ টাকা আদায় করেন ব্যবসায়ীদেও নকট হতে মোশাহিদ চক্র। এর মধ্যে নিজে ও নিজের লালিত কয়েকজনের ২০ হতে ২৫ লাভ টাকার বালু পাথর ফিত্রে রেখে দেন নিজের দখলে। এসব নিলামকৃত বালু পাথর সরিয়ে নেয়ার সর্বশেষ সময়সীমা ছিল ৩১/০৫/২১। শুধু এখানেই শেষ নয় বছর ব্যাপী নদীর খনিজ বালু পাথর তীর কেটে লুটে পুটে নিতে ত’ৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও’)র পদ্মাসন সিংহর নিকট হতে নাকি ক্ষমতাপত্রের মেয়াদ বা সময়সীমা সিড়ি ব্যবহার কওে আরো কয়েকমাস বাড়িয়ে এনেছেন বলেও এ চক্র এলাকায় প্রচার করে নদীর তীর কাটতে উৎসাহ জুগাচ্ছেন ব্যবসায়ী শ্রমিকদের। নিরীহ বা প্রতিবাদী মানষের মুখ বন্ধ রাখতে মোশাহিদের কব্জায় আছে কয়েকজন অনুগত সাংবাদিক। প্রয়োজনে তাদেরকে ডেকে আনেন ক্যামেরাসহ নামে বেনামে সংবাদ প্রকাশে ভয় ভীত দেখান মামলা হামলা হয়রানিরও। তাদেরকে দিয়ে নিজের প্রয়োজন মেটাতে উপজেলা এমনকি প্রশাসনের বিভিন্ন উপর মহলে ভুল তথ্য দিয়ে ফোনও করান যাতে নিরীহ জনরা চুপসে থাকেন। বুধবার নানা শ্রেণিপেশার লোকজনের মাঝে প্রশ্ন রাখেন, এসব বালু পাথর সরিয়ে নিতে নাব্যতা সংকট যেখানে নদীতে সবর্তমানে নেই দুই হতে তিন দিন সময় দেয়াই যথেষ্ট ছিল কিন্তু নানা অজুহাত নাব্যতা সংকট দেখানোর পেছনে অসৎ উদ্ধেশ্য রয়েছে বলেও জানান লোকজন।
এরপর সেখানে কোন স্বার্থে মাসের পর মাস ক্ষমতাপত্রে প্রথম মেয়াদ শেষ হকার পুর্বেই আবারও মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলো। দিন রাত নৌকায় যাচ্ছে ৫.৮. ১০ হাজার ঘনফুট বালু, আর চালান পত্রে লিখে দেয়া হচ্ছে ১ থেকে দেড় দুই হাজার ঘনফুট বালু। পাথর যাচ্ছে নৌকা বোঝাই করে চালান পত্রে লিখে দেয়া ৩২০ ফুট, ৫’শ ফুট। মোশাহিদ চক্রের এ খেলা যেন শেষ হবার নয়।
বুধবার অভিযুক্ত ইউএনও পদ্মাসন সিংহ, মোশাহিদ, জাকির ও আবু সাইদ’র বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করলেও তারা কেউই মুঠোফোনের কল রিসিভ করেননি। বুধবার মুসআলম নামে ঘাগটিয়ার এক ব্যবসায়ী স্বীকার করেন, মঙ্গলবার সকালে পটল নামে গ্রামের এক লোক তার সীমানায় নদী তীরে সেইভ লাগিয়েকয়েক নৌকা বালু নিচ্ছিল, পরে তিনি বাধা দিয়েছেন।
পরিবেশ বাদী সংগঠন নেতৃবৃন্ধসহ সচেতমন মহল বিষয়টি দুদকসহ দায়িত্বশীল কতৃপক্ষ তদন্ত পুর্বক এ চক্রের লুটে নেয়া খনিজ বালু পাথরের মুল্য , ভ্যাট আয়কর সরকারি কোষাগারে ফেরত নেয়ার ব্যবস্থা করা, নিলামের নামে প্রতারণা, নিলামের শর্ত ভঙ্গ, দুর্নীতি এবং জেলা রাজস্ব দফতর হতে সার্টিফিকেট মামলা দায়েরপুর্বক দ্রত নিলামের ক্ষমতাপত্র প্রত্যাহার দাবি তুলেছেন।#
Leave a Reply