পাটী বিক্রেতা নিরেন্দ্র’র দীর্ঘশ্বাস ‘এভাবে আর দিন চলছে না’ পাটী বিক্রেতা নিরেন্দ্র’র দীর্ঘশ্বাস ‘এভাবে আর দিন চলছে না’ – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ১০:২০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বড়লেখার হাজী সামছুল হক হাইস্কুলের এসএসসি উত্তীর্ণ কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা কমলগঞ্জে টমেটো গ্রাম বনগাঁও এলাকায় কাঁচা রাস্তায় সীমাহীন ভোগান্তি ৩ বাংলাদেশীকে ফিরিয়ে দিতে বিএনপি নেতা আবেদ রাজার ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম কুলাউড়ায় চুরির ৪ গরুসহ পিকআপ যেভাবে উদ্ধার হলো ওসমানীনগরের জয়বুননেছা গার্লস হাই স্কুলে রাষ্ট্রীয় শোক দিবসে বিদ্যালয়ে সংবর্ধনা! উত্তরার মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহত শিশুদের স্মরণে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির শোকসভা ও মিলাদ কমলগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপি নেতা সাজ্জাদুর রহমান আর নেই কমলগঞ্জে বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্কুলড্রেস বিতরণ ঢাকায় সিলেট বিভাগ সাংবাদিক সমিতির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিটারে জমজমাট ফুটবল ফাইনাল ম্যাচে এফসি টেরাবাইটের জয়, রানার্সআপ বাগ ক্রুলার্স

পাটী বিক্রেতা নিরেন্দ্র’র দীর্ঘশ্বাস ‘এভাবে আর দিন চলছে না’

  • রবিবার, ২৬ জুন, ২০২২

বড়লেখা প্রতিনিধি :

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বসতঘর ও হাটবাজার। তাই ছাতা মাথায় পানিতে পাটী নিয়ে দাঁড়িয়ে ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করছিলেন ষাটোর্ধ্ব নিরেন্দ্র কুমার দাস। পাটী বিক্রির আয়ে চলতো তার সংসারের চাকা। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও কোন ক্রেতার দেখা পাচ্ছিলেন না তিনি। এসময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পাটীশিল্পী ফরিন্দ্র দাসকে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিরেন্দ্র বললেন, ‘এভাবে আর দিন চলে না’।

নিরেন্দ্র কুমার দাস মৌলভীবাজারের বড়লেখার তালিমপুর ইউপির হাকালুকি হাওরপারের গগড়া গ্রামের বাসিন্দা। ছোটবেলা থেকেই বাপ-দাদার কাছ থেকে শেখা এই পেশাকে আকড়ে ধরে কোনমতে পরিবার নিয়ে দু’বেলা দুমুঠো খেয়ে-পরে তার সংসার চলছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হাকালুকি হাওর পাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে হাকালুকি হাওরের বাংলাবাজার তলিয়ে যাওয়ায় নিরেন্দ্র কুমারের মত অনেকে পড়েছেন চরম বিপাকে। কারণ বাজারে ক্রেতা না থাকায় পাটী বেচাকেনা বন্ধ। তবুও আশায় বুক বেধে বৃষ্টির মধ্যে ছাতা মাথায় পানিতে দাঁড়িয়ে ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করছিলেন নিরেন্দ্র।

উল্লেখ্য বড়লেখা উপজেলার দাসেরবাজার ও তালিমপুর ইউনিয়নের সহ¯্রাধিক পরিবার শীতল পাটী তৈরীর পেশায় নিয়োজিত। পাটী বিক্রির আয়েই চলে তাদের সংসার। সমস্থ সপ্তাহ পাটী তৈরী করে হাটবারে স্থানীয় দাসেরবাজার, বাংলাবাজার, কানুনগোবাজার ও ফকিরবাজারে নিয়ে বিক্রি করেন। দুরদুরান্তের ক্রেতারা সেখানে গিয়ে পাটী ক্রয় করেন। অনেকেই বিদেশেও নিয়ে যান। কিন্তু প্রায় ১০ দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও হাটবাজার বন্যার পানিতে নিমজ্জিত। এতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন হতদরিদ্র পাটীশিল্পীরা।

আলাপকাল পাটীশিল্পী নিরেন্দ্র কুমার দাস বলেন, ছোটবেলা থেকে পাটি তৈরি করে বিক্রি করছি। বাপ-দাদার কাছ থেকে এই কাজ শিখেছি। তাই অন্য কোন কিছুই শিখিনি। তিনি বলেন, এক সময় পাটীর চাহিদা ছিল। কিন্তু দিন দিন তা কমছে। তারপরও কোনমতে পরিবার নিয়ে খেয়েপরে বেঁচে আছি। কিন্তু কয়েকদিন ধরে বন্যার কারণে বাজারে ক্রেতা নেই। তাই পাটী বেচাকেনা একদম নেই। একারণে পাটী নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। যদি ক্রেতা পাই তাহলে ঘরে চাল-ডাল নিতে পারবো। তিনি বলেন, বন্যার পানি ঘরে উঠেছে। কোনমতে ঘরে আছি। পানি বাড়লে অন্য কোথাও আশ্রয় নিতে হবে। খুব কষ্টের মধ্যে আছি। এই অবস্থায় কীভাবে খাবো, কীভাবে চলব তা নিয়ে চিন্তা করছি।

এসময় নিরেন্দ্রের পাশে থাকা পাটীশিল্পী ফরিন্দ্র দাস (৪৬) বলেন, পাটী বিক্রি করে আমাদের পরিবার চলে। বাজারে ক্রেতা নেই। তাই আজকে আর পাটী আনিনি। খুব কষ্ট করে ধার করে চলতে হচ্ছে। জানিনা কপালে কী আছে।

নিরেন্দ্র কুমারের মতো বাজারে পলিথিনে মুড়িয়ে পাটী হাতে ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করছিলেন রিশি কান্ত দাস (৫৫)। বাজারে ক্রেতা না থাকায় তাকেও অনেকটা হতাশ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews