সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে মৎস্য ভাণ্ডার নামে খ্যাত হালির হাওড়ে বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে কৃষকের সোনার বোরো ধান। এতে নষ্ট হয়েছে হাওড়ের পাকা-আধাপাকা কয়েক হাজার হেক্টর বোরো ফসলি জমি।
জানা যায়, সোমবার মধ্যরাতে বেহেলী ইউনিয়নের আহসানপুর গ্রামের পাশে হেরারকান্দি নামক ১৭ নম্বার পিআইসির বাঁধ ভেঙে হাওড়ে পানি ঢুকতে থাকে। নিমিষেই চোখের সামনে তলিয়ে যায় কৃষকের সোনালি স্বপ্ন। এদিকে হাওড়ে পানি ঢুকলেও কৃষক তাদের ধান কাটার শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
জামালগঞ্জ উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, হালির হাওড়ে ৫ হাজার ৫শ হেক্টর ফসলি জমি রয়েছে। সোমবার পর্যন্ত সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল কাটা হয়ে গেছে।কৃষকদের দাবি ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ধান এখনও কাটার বাকি রয়েছে।
হালির হাওড়পাড়ের নজরুল ইসলাম বলেন, আমার প্রায় অর্ধেক জমির ধান কাটা হয়নি। শ্রমিক নাই, ধান কাটতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। আমার দেখা মতে হাওড়ে এখনো প্রায় ৫০ শতাংশ জমির ফসল রয়েছে।
হাওড়ের কৃষকরা আরও জানান, সময়মত বাঁধের কাজ শেষ না করায় ও দেরিতে কাজ হওয়ায় বাঁধের মাটি শক্ত হয়নি। নিয়ম মোতাবেক বাঁধ দুরমুজ না করায় পানির ধাক্কা নিতে পারেনি। তাই সহজেই ভেঙে গেছে। সব মিলিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ তাদের পিআইসি এবং প্রশাসনের গাফিলতিকেই হাওড় ডোবার জন্য দায়ী করলেন হালির হাওড়ের কৃষকরা।
জামালগঞ্জ উপজেলার আরেকজন কৃষক শরাফত আলী ও এরতাজ উদ্দিন, লাল মিয়া বলেন, আমরা অনেকেই সারাদিন ধান কেটে খলায় রেখে বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলাম, রাতে পানির শা শা শব্দে দৌড়ে হাওড়ে এসে দেখি বাঁধ ভেঙে হাওড় তলিয়ে আমার খলায় রাখা কাটা ধানগুলো ভাসিয়ে নিয়ে গেছে, সব শেষ এ বছর বউ বাচ্চাদের নিয়ে কীভাবে খেয়ে বাঁচব।
এর আগে বেহেলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুব্রত সামন্ত সরকার তার ফেইসবুক লাইভে এসে বলেন, আমাদের হালির হাওড় রক্ষা করা সম্ভব হলো না, আমাদের সকল চেষ্টা বিফলে, হেরাকান্দি গ্রামের বাঁধ ভেঙে হালির হাওড় পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। লাইভে তিনি আশপাশে যারা আছেন তাদের সবাইকে দ্রুত বাঁধটি রক্ষার জন্য আসার অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল হক জানান, সোমবার রাতে আসানপুরের হেরারকান্দি বাঁধ ভেঙে হালির হাওড়ে পানি প্রবেশ শুরু করে। তবে অনেক চেষ্টা করার পরও ভাঙন ঠেকানো গেল না।
এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেব জানান, পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সাধারণ কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করে এতদিন বাঁধ অক্ষত রাখতে পেরেছি। রাতে বিগ্ন ঘটেছে। তবে বাঁধের অক্ষত স্থান কীভাবে ভেঙে গেল বুঝে উঠতে পারছি না। এ স্থানে বাঁধ ভাঙার কথা নয়। মূল ক্লোজার এখনো অক্ষত রয়েছে।
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply