আব্দুর রব :
মৌলভীবাজারের বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (চৌকি আদালত) ভবন যেকোন সময় ধসে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। প্রায় ৪০ বছরের পুরনো ভবনের ছাদ, দেয়াল, পিলার ও ভীমে ফাটল দেখা দিয়েছে। ইতিপূর্বে হাজতখানার দুই দিকের সীমানা প্রাচীর ধসে পড়েছে। আদালত ভবনের এজলাস, হাজতখানা, পুলিশ ব্যারাকসহ প্রতিটি কক্ষে ছাদ চুঁয়ে পড়ছে বৃষ্টির পানি। কয়েক বছর ধরে ব্যবহার অনুপযোগী জরাজীর্ণ আদালত ভবনে জীবণের ঝুঁকি নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট, কর্মকর্তা-কর্মচারি, পুলিশ ও আইনজীবিরা বিচারকার্য চালাচ্ছেন।
এদিকে ৩০ জুন বৃহস্পতিবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এমপি এ আদালতের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রীর নিকট ডিও পাঠিয়েছেন।
জানা গেছে, ১৯৮৩ সালে তৎকালীন সরকার উপজেলা কোর্ট পরিচালনার জন্য বড়লেখায় আদালত ভবন নির্মাণ করে। পরে এক সরকারী আদেশে উপজেলা আদালত প্রত্যাহার করা হয়। ২০০৪ সালের শেষের দিকে দেশের সীমান্তবর্তী ৯টি উপজেলায় চৌকি আদালত চালুর সরকারী সিদ্ধান্তে প্রায় ১২ বছর অরক্ষিত থাকা ভবনে বড়লেখা আদালতের কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হয়। ইতিপূর্বে জরাজীর্ণ ভবনের ছাদের ও দেয়ালের পলেস্তোরা ভেঙ্গে অনেকের উপর পড়েছে। এমনকি এজলাসে বিচারকার্য চলাকালিন ছাদের পলেস্তোরা-খোয়া ভেঙ্গে আইনজীবিদের মাথায় পড়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে। সামান্য মেরামত করেই কর্তৃপক্ষ দায় সেরেছে। গত বছরের ২৮ মে আদালত ভবনের হাজতখানার উত্তর দিকের প্রায় ৩৫ ফুট সীমানা প্রাচীর ধসে পড়ায় অরক্ষিত হয়ে পড়েছে কোর্ট হাজতখানা। এর আগে আদালত ভবনের পশ্চিম দিকের আরো প্রায় ২৫ ফুট নিরাপত্তা প্রাচীর ভেঙ্গে পড়ে। হাজতখানার দেয়ালও অনেক জায়গায় হেলে গেছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে কোর্ট পুলিশ নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আদালত ভবনের দেয়াল, ছাদ, পিলার ও ভিমের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ফাটল। জরাজীর্ণ ব্যবহার অনুপযোগী ভবনে রয়েছে ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাস, খাস কামরা, নকল শাখা, মালখানা, পুলিশ ব্যারাক, জিআরও কক্ষ, আদালতের এপিপি কক্ষ, আইনজীবি বার, পুরুষ ও মহিলা হাজতখানা। বিভিন্ন স্থানের পলেস্তোরা খসে পড়ছে। আদালতের প্রত্যেকটি কক্ষে ছাদ চুঁয়ে বৃষ্টির পানি পড়ছে। ছাদ চুঁয়া পানিতে নষ্ট হচ্ছে বিচারাধীন মামলার গুরুত্বপুর্ণ নথিপত্র, জব্দকৃত আলামত। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার আশংকা নিয়ে কার্যক্রম চালান সংশ্লিষ্টরা।
আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট গোপাল দত্ত জানান, দীর্ঘদিন ধরে ডেমেজ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে বিচারিক কার্যক্রম চলছে। নতুন একটি আদালত ভবন জরুরী ভিত্তিতে নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে বৃহস্পতিবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এমপি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী বরাবরে ডিও লেটার পাঠিয়েছেন।
Leave a Reply