টুং-টাং শব্দে মুখরিত আত্রাইয়ের কামার পল্লী – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৪১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বড়লেখায় আর্ন্তজাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষে ৫ অদম্য নারীকে সম্মাননা বড়লেখায় আর্ন্তজাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবসে মানববন্ধন ও আলোচনা সভা কুলাউড়ায় বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে র‌্যালী ও আলোচনা সভা কুলাউড়ায় আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত বড়লেখা ফুটবল একাডেমীর সভাপতি আব্দুর রহমান সম্পাদক বেলাল আহমদ বড়লেখায় সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ চার পরিবারে নিসচা’র ছাগল বিতরণ কমলগঞ্জে রংমিস্ত্রি যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু: পরিবারের দাবী পরিকল্পিত হত্যা বড়লেখায় নাগরিক সমন্বয় প্রকল্পের পাবলিক টাউন হল সভা প্রচেষ্টা নাগরিক সমন্বয় প্রকল্প তৈরী করল এক ভিন্ন সেতু বন্ধন কুলাউড়ায় খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় কোরআন খতম ও গণদোয়া মাহফিল 

টুং-টাং শব্দে মুখরিত আত্রাইয়ের কামার পল্লী

  • শুক্রবার, ৮ জুলাই, ২০২২

Manual1 Ad Code

নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) :: গ্রামীণ প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী কামার শিল্পীরা এখন পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পারকরছেন। কাঁকডাকা ভোর হতে গভীর রাত পর্যন্ত টুং-টাং শব্দে মুখরিত হচ্ছে কামার পাড়া। আর কয়েক দিন পরেই পবিত্র ঈদুল আযহা। তাই কাজের ব্যস্ততা বেড়েছে কামার শিল্পীদের। হারিয়ে যেতে বসা বাংলার প্রাচীনতম কামার শিল্প যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। এখন দম ফেলারও ফুরসত নেই তাদের। দিনে ও রাতে সমান তালে লোহার টুং-টাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার প্রতিটি কামার পাড়া।

Manual7 Ad Code

উপজেলার গ্রামীণ প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী কামার শিল্প নানা সংকটে আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। প্রয়োজনীয় উপকরণের অভাব, কারিগরদের মজুরী বৃদ্ধি, তৈরি পণ্যসামগ্রী বিক্রয় মূল্য কম, কয়লার মূল্য বৃদ্ধি, বিদেশ থেকে বড় বড় ব্যবসায়ীদের স্টীল সামগ্রী আমদানিসহ চরম আর্থিক সংকট ও উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা কম থাকায় ও বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে আত্রাই উপজেলার কামার শিল্প প্রায় বিলুপ্তির পথে। এর পরেও আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারের কামাররা দেশী প্রযুক্তির দা, কুড়াল, বোটি ছোট বড় চাকু, ছোড়া ও কাটারী বানাতে বেশ উৎসব মুখর ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।

হাট-বাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় ইতিমধ্যেই গ্রামের লোকজন গরু, মহিষ, ছাগল জবাই ও মাংস তৈরির কাজের জন্য কামারদের কাছে প্রয়োজনীয় ধারালো দেশী তৈরী চাকু, বটি, কাটারি ও ছুরি তৈরীর আগাম অর্ডার দেয়া শুরু করায় কামার পল্লীগুলোতে টুংটুং শব্দে এখন মুখরিত। ঘুমাতে পারছে না পাশেরবাড়ির মানুষগুলো।

Manual1 Ad Code

আধুনিকতার উৎকর্স, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে নানাবিধ সমস্যার কারণে ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে হাজার বছরের গ্রাম-বাংলার মানুষের প্রিয় শিল্পটি। এক সময় আত্রাই উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে প্রায় শতাধিক কর্মকার পরিবার থাকলেও তাদের তৈরি পণ্যসামগ্রী প্রযুক্তির ছোঁয়ার কাছে টিকে থাকতে না পারাই বেশকিছু পরিবার তাদের পৈত্রিক পেশা ছেড়ে পরিবারের অভাব-অনটন ও চাহিদার তাগিদে লাভজনক অন্য পেশায় চলে গেছে। বর্তমানে উপজেলার মির্জাপুর-ভবানীপুর, বজ্রপুর, বান্ধাইখাড়া, পাঁচুপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের কর্মকাররা তাদের পৈত্রিক পেশা অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে হলেও দু’মোঠ ভাতের আশায় তারা এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। যতটুকু লাভ হোক না কেন কোন রকম দিন চললেই তারা বেজাই খুশি অন্য পেশায় যেতে তারা নারাজ। আহসানগঞ্জ হাট, নওদুলী হাট, ভবানীপুর-মির্জাপুর হাট, শাহাগোলা স্টেশন বাজার, বজ্রপুর হাট, বান্দাইখাড়া হাট, কুশাতলা হাট, কাশিয়াবাড়ি হাট, আত্রাই সদরসহ প্রতিটি হাট-বাজারে ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে কামার কারিগররা সারা বছরের তুলনায় বর্তমানে রাতদিন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।

এখানকার কামারদের নিপুন হাতে তৈরি বটি, ছুরি, কাটারি, দা, বেকি, কুঠার, খুন্তা ও লাঙ্গলের ফলাসহ বিভিন্ন ধরণের যাবতীয় প্রয়োজনীয় লৌহজাত দ্রব্য তৈরি করেন।

আত্রাই উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কার্তিক কর্মকার ও সূর্য কর্মকার জানান, লোহা পিটিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করা আমার পেশা, বাপ-দাদার পৈতিক সূত্রে আমি এই পেশায় জরিত। একটি মাঝাড়ি ধরণের দা ও কাটারি তৈরি করে ওজন অনুযায়ী ২শ’ ৫০টাকা থেকে ৩শ’ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় হয়। সারা দিন হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে যে কয়টি জিনিস তৈরি করি তা বিক্রয় করে খুব বেশি লাভ না হলেও পরিবার-পরিজন নিয়ে ডাল-ভাত খেয়ে বেচে থাকার স্বার্থে আদি এই পেশা আমি ধরে রেখেছি। তবে সাড়া বছর কাজ-কর্মের ব্যস্ততা তেমন না থাকলেও কুরবানী ঈদকে সামনে রেখে আমার কর্ম ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। সাড়া বছর এই রকম কাজ থাকলে ভালই হত।

Manual6 Ad Code

বিশ্বনাথ কর্মকার জানান, এবছরে বেশ কাজ পেয়েছি। কাজ বেড়ে যাওয়ায় ব্যস্ততা বেড়েছে। আমার বাপ-দাদার মূল পেশা ছিল এটা। তাদের ওই সূত্রে ধরে আমার জীবনেরও শেষ মূহুর্তে এই পেশা ধরে রেখেছি।

জতিষ চন্দ্র কর্মকার জানান, আমার বাপ-দাদার মূল পেশা ছিল এটা। তারা গত হওয়ার পর ওই সূত্রে ধরে আমার জীবনেরও শেষ মূহুর্তে এই পেশা ধরে রেখেছি। সাড়া দিন চাকু, বটি তৈরি করে যা আয় হয় তা দিয়েই পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে বাঁচি।

Manual3 Ad Code

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!