এইবেলা, কুলাউড়া :: বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ঘরবাড়ি, কিছু হাঁস ছিলো বানের জলে তারাও হারিয়ে গেছে। বন্যার পর ঋণ নিয়ে কিনেছিলাম গরু। এটাই ছিলো আমার একমাত্র সম্বল। সেই সম্বল ৪টি গরু চুরে নিয়েছে। এখন আমার আর কিছুই রইলো না। আমি নি:স্ব হয়ে গেলাম। এখন আমার কী হবে, কী করবো?’
নিজ বাড়িতে গত ৪দিন থেকে এভাবেই বিলাপ করছিলেন হাকালুকি হাওড় পাড়ের বাসিন্দা ৩৫ বছর বয়সী সুলেহা আক্তার। তিনি কুলাউড়া উপজেলার মদনগৌরি গ্রামের কৃষক ইউনুস মিয়ার স্ত্রী।
সহায়-সম্বল হারিয়ে কুলাউড়া থানার সামনে পাগলপ্রায় হয়ে ছুটোছুটি করছিলেন তিনি। এমনভাবে বিলাপ করছিলেন যেন বিলাপ থামছেই না। যেন তার নিকটত্মীয় কেউ মারা গেছে।
সুলেহা বলেন, আমার পালিত ৪টি গরু প্রতিদিনের ন্যায় গত ২৯ নভেম্বর সন্ধ্যা অনুমান ৬টার দিকে সময় আমার বসত ঘরের উত্তর পাশে গোয়াল ঘরে বেঁধে রাখি এবং রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করে রাত সাড়ে ১১টায় আমিসহ পরিবারের লোকজন বসত ঘরে ঘুমিয়ে পড়ি। ভোর ৫টায় সময় আমি ঘুম থেকে উঠে গোয়াল ঘরে দেখি গোয়াল ঘরে থাকা আমার একমাত্র সম্বল ৪টি গরু নেই, কে বা কারা চুরি করে নিয়ে গেছে। সাথে সাথে আমি শোর চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এসে দেখে আমার গোয়াল ঘর থেকে গরু চুরি হওয়ার বিষয়টি জানতে পারে।
সুলেহা আক্তার বলেন, কষ্টের পালন করা গরুগুলো হারিয়ে আমি নি:স্ব হয়ে গেছি। এখন সারা বছর সংসার কিভাবে চালাবো? এই গরুগুলো থেকে যেন দু’টাকা পাই সেজন্য দিনরাত পরিশ্রম করেছি। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। এখন শুধু ভাঙ্গা ঘরটি বাকি রইলো।
তিনি জানান, ৫০ হাজার টাকা ঋণ করে গরু কিনে পালন করেছিলাম। গরুগুলো খুব ভালো মোটাতাজা ছিল। মনে করেছিলাম এই মাসে বিক্রি করে কিছু টাকা পাবো। তা দিয়ে সংসার চালাবো ও সাথে ঋণ দিবো। এখন আমি ঋণ দেবো কিভাবে আর সংসার চালাবো কী করে?
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুস ছালেক জানান, ঘটনার পরদিন ৩০ নভেম্বর ভিকটিম একটি অভিযোগ দিয়েছেন। গরুগুলো উদ্ধারে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।#
Leave a Reply