রবীন্দ্রনাথের বৃটিশ প্রদত্ত ‘নাইট’ খেতাব বর্জনের ১০৪ বছর – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৪১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শনে রেলওয়ে সচিব- সম্পন্নের ডেডলাইনেও বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় বড়লেখায় খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় নফল রোজা শেষে ইফতার ও দোয়া মাহফিল কুলাউড়ায় আদালতের নির্দেশনা ভঙ্গ করে কৃষকদের জমিতে ফসল রোপণের অভিযোগ ছাতকের ইউএনও’কে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান ফুলবাড়ীতে বিজিবি’র অভিযানে মাদকদ্রব্য ও ভারতীয় শাড়ি উদ্ধার সহকারি শিক্ষকদের সাটডাউন- বড়লেখায় কক্ষের তালা ভেঙ্গে পরীক্ষা নেওয়ালেন অভিভাবকরা কুলাউড়ার মুরইছড়া  সীমান্তে  ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বিএসএফের গুলিতে  যুবক নিহত কুলাউড়ায় নাগরিক সমন্বয় প্রকল্পের বার্ষিক টাউন হল মিটিং কর্মক্ষেত্রের চাহিদা অনুযায়ী নিজেকে গড়ে তুলতে হবে- ইউএনও মহিউদ্দিন বড়লেখায় প্রধান শিক্ষককে ছুরিকাঘাতে হত্যার চেষ্টা প্রাক্তন ছাত্র গ্রেফতার

রবীন্দ্রনাথের বৃটিশ প্রদত্ত ‘নাইট’ খেতাব বর্জনের ১০৪ বছর

  • শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৩

Manual3 Ad Code
সৈয়দ আমিরুজ্জামান ::
অবিভক্ত ভারতবর্ষে ১৯১৯ সালের জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের বৃটিশ প্রদত্ত ‘নাইট’ খেতাব বর্জনের পর এবার ১০৪ বছর পূর্ণ হয়েছে। বিনা-পরোয়ানায় গ্রেপ্তার ও বিচার ছাড়া দীর্ঘকাল কারাবাসসহ অন্যান্য বিধান সম্বলিত কুখ্যাত কালো আইন ‘ রাওলাট অ্যাক্ট চালুর প্রতিবাদে  জালিয়ানওয়ালাবাগের বিশাল সমাবেশে বর্বরোচিত হামলা ও হত্যাকান্ড পৃথিবীর ইতিহাসে কুখ্যাত এক গণহত্যা। এর প্রতিবাদে কবিগুরুর এই বিরল সম্মান বর্জনের দৃষ্টান্ত আমাদের মহিমান্বিত করেছে।
কবিগুরু এমন এক মানুষ যার হাত ধরে তৈরি হয়েছে নতুন এক অধ্যায়ের। তিনি বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং শিল্পকলাতে নবজাগরণ ঘটিয়ে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি সারাজীবন হৃদয়ের গহীনে লালন করেছেন মানবমুক্তির দর্শন। তাঁর সৃষ্টি করা কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাস সমূহ মানুষকে আজও আকর্ষিত করে। এককথায় বলা যায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ আমাদের মনে ও চিন্তাভাবনায় বিরাজ করেন সর্বদা।
কবি, নাট্যকার, কথাশিল্পী, গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক এবং ভাষাবিদের পাশাপাশি জীবনের শেষ পর্যায়ে তিনি চিত্রকর হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেন। তাঁর জন্মদিন নিয়ে তিনি লিখেছিলেন ‘ ওই মহামানব আসে/ দিকে দিকে রোমাঞ্চ/মর্ত্য ধুলির ঘাসে ঘাসে ‘। সাহিত্যে ১৯১৩ সালে ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন তিনি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে তিনি চালু করেন ‘রাখিবন্ধন’ উৎসব।
রবীন্দ্রনাথ তাঁর সাহিত্যের মাধ্যমেই লড়াই করে গেছেন ইংরেজদের বিরুদ্ধে। দেশকে স্বাধীন করতে সাধারণ মানুষের মনে দেশপ্রেমের জোয়ার আনার জন্য লিখেছেন অসংখ্য দেশাত্মবোধক গান, পাশাপাশি ত্যাগ করেন ইংরেজদের দেওয়া ‘নাইট’ উপাধি। কেন নাইট উপাধি ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বিশ্বকবি?
১৯১৩ সালে নোবেল গ্রহণ করার পর, ১৯১৫ সালের ৩ জুন সাহিত্য প্রতিভার স্বীকৃতি স্বরূপ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ইংরেজরা ‘নাইটহুড‘ সম্মানে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালের ২৯ এপ্রিল তিনি ত্যাগ করেন সেই উপাধি। কারণ, জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকান্ড মেনে নিতে পারেননি কবিগুরু। ঘটনা ঘটার পর তিনি জানতে পারেন। নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রতিবাদ জানানোর জন্য এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তিনি।
জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকান্ড ভারতের ইতিহাসে কুখ্যাত এক গণহত্যা। ১৯১৯ সালের ১০ মার্চ রাওলাট অ্যাক্ট চালু হয়। বিচারপতি স্যর সিডনি রাওলাট-এর মস্তিষ্কপ্রসূত এই আইনে হাড় হিম করা ক্ষমতা দেওয়া হল পুলিশকে। আইনে বলা হল, বিনা-পরোয়ানায় গ্রেপ্তার, বিচার ছাড়া দীর্ঘকাল কারাবাস। অভিযুক্তরা জানতেই পারতনা কেন তাদের গ্রেপ্তার করা হলো। এমনকি মুক্তি পাওয়ার পরেও মুচলেকা দিয়ে লিখে নেওয়া হতো তারা যেন কোনও রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং শিক্ষাগত কর্মকাণ্ডে যুক্ত না থাকে। পাঞ্জাবে এই আইনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিল ভারতীয়রা। এর কারণে অকথ্য অত্যাচার চলেছে ভারতীয়দের উপরে। তাও মাথা নত করেনি পাঞ্জাবি প্রতিবাদীরা। তারা ঠিক করলেন জালিয়ানওয়ালাবাগের মাঠে ১৩ এপ্রিল প্রতিবাদ সভা হবে। সেইমতো সেখানে জড়ো হন কয়েক হাজার মানুষ। জেনারেল ডায়ার বুঝতে পেরে প্রায় ১০০ জন বালুচি আর গুর্খা সৈন্য নিয়ে আক্রমণ চালান সভাস্থলে। ছত্রভঙ্গ করতে নির্বিচারে গুলি চালায় ইংরেজ সৈন্যরা। প্রাণ যায় শত শত ভারতীয়র, আহত হয়েছিলেন প্রায় ১০০০ এরও বেশি মানুষ। বেসরকারি হিসেব অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা ছিল কয়েক হাজারের বেশি৷ ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিলের এই ঘটনা ভারতের ইতিহাসকে বদলে দিয়েছিল।
এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইংরেজদের প্রকৃত রূপ প্রকাশ পায় সকলের সামনে। খবর পান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ঘটনা শোনার পর তিনি মনে করেছিলেন ইংরেজদের এই বর্বরোচিত আচরণ সারা বিশ্বের মানুষের কাছে তুলে ধরা উচিত। এরপরই তিনি সিদ্ধান্ত নেন তাঁর নাইটহুড উপাধি ত্যাগের মাধ্যমেই প্রতিবাদ করবেন। গান্ধীজিকে তাঁর এই প্রস্তাবের কথা চিঠি লিখে জানালে তিনি পরিষ্কার বলে দেন, ”আই ডু নট ওয়ান্ট টু এম্বারাস দ্য গভর্নমেন্ট নাউ”। এই কথাতে কবিগুরু আঘাত পেলেন, এরপর গেলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের কাছে। চিত্তরঞ্জন দাশ সহ কোনও কংগ্রেস নেতাই পাশে দাঁড়ায়নি রবীন্দ্রনাথের। তাই, তিনি একাই সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁর উপাধি ত্যাগের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাবেন এই অমানবিক ঘটনার বিরুদ্ধে। ১৯১৯ সালের ২৯ এপ্রিল ইংরেজদের কাছে নাইটহুড ত্যাগের চিঠি পাঠালেন তিনি, যা কালের যাত্রায় প্রতিবাদ জানাবার এক ঐতিহাসিক দলিল হয়ে রয়েছে।#
সৈয়দ আমিরুজ্জামান
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট;
বিশেষ প্রতিনিধি, সাপ্তাহিক নতুনকথা;
সম্পাদক, আরপি নিউজ;
সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, মৌলভীবাজার জেলা;
‘৯০-এর মহান গণঅভ্যুত্থানের সংগঠক ও সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী।
সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাংলাদেশ খেতমজুর ইউনিয়ন।
সাধারণ সম্পাদক, মাগুরছড়ার গ্যাস সম্পদ ও পরিবেশ ধ্বংসের ক্ষতিপূরণ আদায় জাতীয় কমিটি।
প্রাক্তন সভাপতি, বাংলাদেশ আইন ছাত্র ফেডারেশন।
মুঠোফোন: ০১৭১৬৫৯৯৫৮৯।

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন

Deprecated: Function WP_Query was called with an argument that is deprecated since version 3.1.0! caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!