বড়লেখা প্রতিনিধি:: বড়লেখায় কিশোরীকে রাস্তা থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে ধর্ষণ ও পরে বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষকের বাড়িতে পাঠিয়ে নির্যাতন চালিয়ে তাড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় অবশেষে থানায় মামলা হয়েছে। দুইজনকে অভিযুক্ত করে মামলাটি করেছে ধর্ষণের শিকার কিশোরী রুবিনা বেগম। গ্রেফতার করা হয়েছে ঘটনার মুল নায়ক ধর্ষক জামিল আহমদকে (২১)।
শনিবার দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপংকর ঘোষের নির্দেশে নিজ বাড়ি থেকে শাহবাজপুর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। সে উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের নতুন সায়পুর গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে।
শনিবারের একটি জাতীয় দৈনিকের শেষ পৃষ্ঠায় ‘বড়লেখায় বিচার দাবীতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন মা-বিয়ের আশ্বাসে কিশোরীকে ধর্ষকের বাড়ি পাঠাল পুলিশ’ শিরোনামে একটি সংবাদ ছাপা হলে পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন মহলে টনক নড়ে। মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপংকর ঘোষ সকালেই ছুটে যান শাহবাজপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে। সেখানে তিনি ভিকটিম কিশোরী ও তার মায়ের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এছাড়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথেও কথা বলে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে মামলা রেকর্ডের নির্দেশ দেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত জামিল আহমদকে গ্রেফতার করে।
জানা গেছে, উপজেলার নতুন সায়পুর গ্রামের কিশোরীকে (১৭) গত ৭ মে এক সহযোগিকে নিয়ে অপহরণ করে প্রতিবেশী জামিল আহমদ (২১)। ঘটনার এক সপ্তাহ পর মায়ের লিখিত অভিযোগে কিশোরী ও অপহরণকারী যুবককে ১৪ মে উদ্ধার করে শাহবাজপুর তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই তাজুল ইসলাম। আইন অনুযায়ী তাদেরকে আদালতে সোপর্দ না করে বিয়ের আশ্বাসে তিনি ভিকটিম কিশোরীকে অভিযুক্তের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। পরদিন নির্যাতন চালিয়ে তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই দিনই জামিল আহমদ অন্যত্র বিয়ে করে ফেলে। নির্যাতিত কিশোরীর মা হামিদা বেগম অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা দিতে গেলে এএসআই তাজুল ইসলাম আপোষ করে দেওয়ার নামে নানাভাবে হয়রানী করেন।
বড়লেখা থানার ওসি মো. ইয়ারদৌস হাসান জানান, একটি জাতীয় দৈনিকে এই সংক্রান্ত একটি সংবাদ দেখেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীংকর ঘোষ স্যার সরেজমিনে ঘটনা তদন্ত করেন। এব্যাপারে ভিকটিম কিশোরী দুই জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দিয়েছে। পুলিশ প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করেছে। অপর আসামীকেও গ্রেফতারের চেষ্ঠা চালাচ্ছে। আর শাহবাজপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশের বিরুদ্ধে ভিকটিম কিশোরী ও তার মায়ের অভিযোগের বিষয়টি সিনিয়র অফিসাররা অবহিত হয়েছেন। এই ব্যাপারে উনারাই ব্যবস্থা নিবেন।
Leave a Reply