বড়লেখা প্রতিনিধি :
বড়লেখা উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের ইউরোপ প্রবাসীদের বাড়ির প্রবেশ মূখে টিনের ঘর নির্মাণ ও তারকাটা দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে প্রভাবশালী প্রতিবেশিরা। এতে গত ২৩ দিন ধরে প্রবাসীদের দেশের বাড়িতে থাকা কিডনী ও হার্টের রোগি বৃদ্ধ মা, ভাই ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা গৃহবন্দী হয়ে পড়েছেন। এব্যাপারে ভুক্তভোগী মোস্তাক আহমদের পিটিশন মামলার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত পুলিশকে প্রতিবন্ধকতা অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন।
সরেজমিন ও বড়লেখা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পিটিশন মামলা-৩৩/২৩ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের মৃত আব্দুল আহাদ মানিকের তিন ছেলে ও এক মেয়ে ইউরোপ প্রবাসী। বাড়িতে বৃদ্ধ ও অসুস্থ মা এবং এক ভাই স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বসবাস করেন। তারাও বছরে ১/২ বার দেশে আসেন। গত ৫০/৬০ বছর ধরে মৃত আব্দুল আহাদ ও আশপাশের ৪/৫ পরিবারের লোকজন আংশিক রেকর্ডিয় সহ ব্যক্তি মালিকানাধীন রাস্তা দিয়ে যার যার বসত বাড়িতে যাতায়াত করেন। মৃত আব্দুল আহাদ মানিকের বসত বাড়ি থেকে বের হওয়ার সম্মুখভাগে প্রায় ৮ বছর আগে জেলা পরিষদের অর্থায়নে ইটসলিং করা হয়। কিন্তু গত ২২ মে দুপুর বেলা হঠাৎ রাস্তা সংলগ্ন ভূমি মালিক সমছুল হকের ভাগ্না-ভাতিজারা দেশিয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রবাসী ফয়সল আহমদ, কাওছার আহমদ, জয়নাল আহমদ, রায়হানা বেগম প্রমুখের বসত বাড়ির প্রবেশ মূখের সরকারি ইটসলিংয়ের উপর মাটি ভরাট করে টিনের ঘর নির্মাণ করে। অপরাংশ তারকাটা দিয়ে বন্ধ করায় প্রবাসীদের দেশের বাড়িতে থাকা অসুস্থ মা, ভাই সহ অন্যান্য সদস্যরা গৃহবন্দী হয়ে পড়েন।
স্থানীয় লোকজন জানান, দীর্ঘকাল ধরে এই রাস্তা দিয়ে মৃত আব্দুল আহাদ মানিকের ও আশপাশের বাড়ির লোকজন চলাচল করছেন। সরকারী টাকায় রাস্তাটির উন্নয়নও করা হয়। কিন্তু হঠাৎ এভাবে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া বেআইনি ও অমানবিক কাজ। আদালতের নির্দেশের দুই সপ্তাহ পরও পুলিশ তা অপরসারণ না করায় ভুক্তভোগীরা ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা দুর্ভোগ লাঘবে দ্রæত রাস্তার প্রতিবন্ধকতা অপসারণের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান।
চলাচলের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্ঠির ঘটনায় প্রবাসীদের দেশে থাকা ভাই মোস্তাক আহমদ গত ১ জুন প্রতিপক্ষের জামিল আহমদ, আব্দুল মুতলিব, আবু সুফিয়ান, আব্দুল ফাত্তার ও আব্দুল জব্বারকে আসামী করে বড়লেখা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পিটিশিন মামলা করেন। মামলার শুনানী শেষে আদালত রাস্তার প্রতিবন্ধকতা অপসারণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
অভিযুক্ত জামিল আহমদ গংরা জানান, এই ভূমি তাদের মামা সমছুল হকের। প্রয়োজন না পড়ায় এতদিন উনারা কিছু ভূমি রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। এখন প্রয়োজন পড়েছে, তাই এখানে ঘর নির্মাণ করেছেন, অন্য অংশে তারকাটা দিয়েছেন।
শাহবাজপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এস.আই সুশান্ত সাহা জানান, আদালতের এই সংক্রান্ত একটি আদেশ বড়লেখা থানার ওসি স্যারের মাধ্যমে পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন। আদালতের নির্দেশ মতে রাস্তার প্রতিবন্ধকতা অপসারণের জন্য বিবাদী পক্ষকে নোটিশ দিয়েছেন। এব্যাপারে আদালতের নির্দেশমতে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন জমা দিবেন।
Leave a Reply