এইবেলা, বড়লেখা::
বড়লেখায় পিতার বাড়ি থেকে স্বামীর সাথে শ্বশুড়বাড়ি ফেঞ্চুগঞ্জে যাওয়ার পথে ভাই ও প্রবাসী স্বামীকে মারধর করে অস্ত্রের মুখে এক গৃহবধূকে (২৪) অপহরণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মৌলভীবাজার-বড়লেখা আঞ্চলিক সড়কের কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের আছুরিঘাট ব্রীজ এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বাদী হয়ে ২ জনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কুলাউড়া থানায় মামলা করেছেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১০ জনকে।
মামলার আসামিরা হলেন- বড়লেখা উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের আজিমগঞ্জ গ্রামের আব্দুস শহিদের ছেলে সুলতান মিয়া (২৫) ও দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নের উত্তরভাগ গ্রামের হাছন আলীর ছেলে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক সুজন আহমদ (২৬)। পুলিশ সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক সুজনকে এ মামলায় গ্রেফতার করেছে।
এদিকে শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অপহৃত গৃহবধূকে উদ্ধার করা যায়নি।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত সুলতান মিয়া বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নের ওই তরুণীকে (২৫) বিয়ে করার জন্য তার পরিবারে (তরুণীর) গেল বছর প্রস্তাব দেন। কিন্তু ছেলে ও মেয়ের পরিবারের অভিভাবকরা এই প্রস্তাবে রাজি হননি। ফলে গেল বছরের (২০২৩) ডিসেম্বরে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নের প্রবাসী এক যুবকের সাথে পারিবারিকভাবে ওই তরুণীর বিয়ে হয়। গত সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নের শ্বশুড় বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে আসেন এই প্রবাসী। শ^শুর বাড়িতে চারদিন থাকার পর শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সিএনজি চালিত অটোরিকশাযোগে স্ত্রীকে নিয়ে নিজের বাড়ি ফেঞ্চুগঞ্জে রওয়ানা দেন প্রবাসী স্বামী। এদিন দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে মৌলভীবাজার-বড়লেখা আঞ্চলিক সড়কের কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের আছুরিঘাট ব্রীজ এলাকায় পৌঁছামাত্র কালো রঙের একটি হাইয়েছ গাড়ি অটোরিকশার গতিরোধ করে। এরপর সুলতান মিয়ার নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা ৯-১০ জন যুবক গৃহবধূর ভাই ও স্বামীকে মারধর করে অস্ত্রের মুখে গৃহবধূকে জোরপূর্বক হাইয়েছ গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আহতরা কুলাউড়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
মোবাইল ফোনে আলাপকালে অপহৃত ওই গৃহবধূর স্বামী অভিযোগ করে বলেন, সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক সুজন আহমদের গাড়ি করে আমার শ্বশুড় বাড়ির লোকজন যাতায়াত করতেন। তাই পূর্ব পরিচয়ের সুবাধে আমার স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুড় বাড়ি বেড়াতে গেলে সে (চালক) সুলতান মিয়াকে আমার স্ত্রীর অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দিত। মূলত ঘটনার দিন সুলতান মিয়াকে আমাদের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে চালক সুজন আহমদ। এই প্রমাণ আমরা পেয়েছি। ফলে থাকে এই মামলায় আসামি করা হয়েছে।
এবিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুলাউড়া থানার এসআই মো. আব্দুল আলিম বলেন, এ ঘটনায় এজাহার নামীয় আসামি সিএনজি চালক সুজনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রধান আসামি সুলতান মিয়াকে আটক করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
Leave a Reply