বড়লেখা প্রতিনিধি:
বড়লেখায় আব্দুল মান্নান নামক ভূমি ক্রেতার নিকট থেকে ৫৫ হাজার টাকা নিয়ে জাল খাজনা রশিদ প্রদান করেছে দলিল লেখক পরিচয়দানকারি চিহ্নিত দালাল মতিউর রহমান। ডকুমেন্ট যাচাইয়ে বিষয়টি ধরা পড়লে কথিত এই দলিল লেখককে আটক করেন সাবরেজিষ্ট্রার মো. হাবিবুর রহমান। অতঃপর মুচলেকা আদায় করে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার বড়লেখা উপজেলা সাবরেজিষ্ট্রী অফিসে। অভিযোগ রয়েছে, উক্ত মতিউর রহমান বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, সাবরেজিষ্ট্রার অফিস ও দলিল লেখক শেডে ঘোরাফেরা করে। দীর্ঘদিন ধরে সে সহজ সরল লোকজনকে কখনও আইনজীবী সহকারি কখনও দলিল লেখক পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছে। মতিউর রহমান উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের পাটনা গ্রামের সোরমান আলীর ছেলে।
জানা গেছে, উপজেলার সোনাতোলা গ্রামের আব্দুল মান্নান একই গ্রামের আব্দুল মতিন ওরফে সরফ উদ্দিনের নিকট থেকে ছোটলেখা দক্ষিণভাগ মৌজায় ১৩ শতাংশ সাইল শ্রেণির ভূমি ক্রয়ে চুক্তিবদ্ধ হন। দলিল সম্পাদন করতে গিয়ে জানতে পারেন খাজনা পরিশোধের আপডেট রশিদ প্রদর্শণ ব্যতিত দলিল রেজিষ্ট্রীর বিধান নেই। চিহ্নিত দালাল মতিউর রহমান ভূমি ক্রেতা আব্দুল মান্নানের নিকট নিজেকে লাইসেন্সধারি দলিল লেখক পরিচয় দিয়ে খাজনা পরিশোধের জন্য ৫৫ হাজার টাকা নিয়ে একটি জাল খাজনা রশিদ তৈরী করে। সুচতুর দালাল মতিউর রহমান ভোক্তভোগি আব্দুল মান্নানকে আড়াল করে দলিল লেখক সমিতির সদস্য প্রমথ চন্দ্র দাসকে দিয়ে দলিল রেজিষ্ট্রীর ব্যবস্থা করে। সোমবার দলিল সম্পাদনের জন্য সাবরেজিষ্ট্রার মো. হাবিবুর রহমানের সামনে অন্যান্য ডকুমেন্টের সাথে খাজনা রশিদ উপস্থাপন করলে স্কেনিংয়ে তার নিকট রশিদটি জাল বলে ধরা পড়ে। তখন ভূমি ক্রেতা-বিক্রেতা ও দলিল লেখক প্রমথ চন্দ্র দাস কথিত দলিল লেখক (চিহ্নিত দালাল) মতিউর রহমানকে সাবরেজিষ্ট্রারের কাছে নিয়ে আসেন। সাবরেজিষ্ট্রার তাকে আটক করলে একপর্যায়ে সে তার দোষ স্বীকার করে। পরে মুচলেকা আদায় করে উপজেলা সাবরেজিষ্ট্রার তাকে ছেড়ে দেন।
ভোক্তভোগি আব্দুল মান্নানের বরাত দিয়ে বড়লেখা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মীর মখলিছুর রহমান জানান, ভূমি ক্রেতা ১৩ শতাংশ ভূমির দলিল রেজিষ্ট্রীর জন্য উপজেলায় গেলে মতিউর রহমান নিজেকে দলিল লেখক পরিচয়ে কাগজপত্র দেখে বলে বেশ কয়েক বছরের খাজনা অপরিশোধিত রয়েছে। খাজনা পরিশোধের জন্য সে ৫৫ হাজার টাকা নেয় এবং ভুয়া খাজনা রশিদ তৈরী তার কাছে রেখে দেয়। ভূমি বিক্রেতা আব্দুল মতিন ওরফে সরফ উদ্দিনকে দিয়ে দলিল রেজিষ্ট্রীকালে সাবরেজিষ্ট্রারের কাছে খাজনা রশিদটি জাল ধরা পড়ায় মতিউর রহমানকে আটক করা হয়। এরপর তিনি (আব্দুল মান্নান) ৩ হাজার টাকা খাজনা পরিশোধ করে রশিদ নিয়ে আসলে সাবরেজিষ্ট্রার দলিল সম্পাদন করেন। মতিউর রহমান একজন চিহ্নিত দালাল ও প্রতারক ভোক্তভোগি আব্দুল মান্নান জানতেন না।
উপজেলা সাবরেজিষ্ট্রার মো. হাবিবুর রহমান জানান, স্কেনিংয়ে খাজনা রশিদ জাল ধরা পড়ায় তিনি দলিলটি আটকে দেন। দলিল লেখক, ভূমি দাতা ও গ্রহীতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসল রহস্য বেরিয়ে আসে। তখন তিনি মতিউর রহমানকে আটক করেন। যেহেতু তার অফিসের কোন কাগজ জালিয়াতি করে দলিল রেজিষ্ট্রীর অপচেষ্টা হয়নি, বিধায় আটককৃতকে পুলিশে সোপর্দ করেননি। বিষয়টি তিনি সহকারি কমিশনার (ভূমি)-কে অবহিত করেছেন। অতঃপর মুচলেকা আদায় করে মতিউর রহমানকে ছেড়ে দেন। পরে সঠিক খাজনা রশিদ নিয়ে আসায় তিনি সংশ্লিষ্ট দলিলটি রেজিষ্ট্রী করেন।
caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6085caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6085
Leave a Reply