এইবেলা কুলাউড়া:: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার মানব পাচারকারী জিসুরাম দাসের খপ্পরে পড়ে মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে সর্বস্ব হারিয়ে হাজতবাস করে দেশে ফিরেছেন কুলাউড়ার যুবক মো: আরশাদ আলী সাগর। দেশে ফিরে তিনি মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৫নং আমল আদালতে মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত।
এই জিসুরাম দাসের প্রতারণার শিকার হয়ে বড়লেখা উপজেলার দাসের বাজার ইউনিয়নের সুনামপুর গ্রামের রসেন্দ্র দাসের ছেলে বিমল চন্দ্র দাস। ভুক্তভোগী বিমল চন্দ্র দাস বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। আদালত বড়লেখা থানার ওসিকে তদন্তক্রমে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী ও মানব পাচারকারী জিসুরাম দাস বড়লেখা উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের সালদিগা গ্রামের ক্ষিতিস দাস ও স্মৃতি রানী দাসের পুত্র। পৃথক মামলায় তাদের ৩ জনকে আসামী করা হয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে হাজতবাস করে ফেরা কুলাউড়ার যুবক মো: আরশাদ আলী সাগরের দায়েরকৃত মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে উচ্চ বেতনে ফাস্ট ফুডের দোকানে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ৩ লাখ ২৯০ হাজার টাকায় একটি চুক্তিনামা সম্পাদন করে ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর সাগরকে দুবাই নেন। সাগরকে এয়ারপোর্ট থেকে রিসিভ করে নিয়ে যান জিসুরাম দাস। একটি রুমে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়ে পাসপোর্টসহ কাগজপত্র নিয়ে যান।
এদিকে বিদেশ যাবার সপ্তাহ দিন পরে সাগরকে (কাজের) চাকরির ব্যাপারে বললে জিসুরাম দাসকে বেতন ছাড়া মরুভুমিতে উট রাখার কাজ করতে হবে বলে জানায়। কিন্তু সাগর সেই কাজে সম্মত না হলে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেবার হুমকি ও শারীরিক নির্যাতন করে জিসুরাস দাস। নির্যাতন সইতে না পেরে বাধ্য হয়ে ৫ মাস উট রাখার কাজ করেন সাগর। বাংলাদেশী ৩০ হাজার টাকা বেতনে ৫ মাস কাজ করার পর বেতন বাবত দেড় লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে জিসুরাম দাস। সাগর তার পারিশ্রমিকের টাকা চাইলে জিসুরাম দাস চরম দুর্ব্যবহার করে রুম থেকে বের করে দেয়।
এমতাবস্থায় গত ১১ জুন আমিরাত পুলিশ সাগরকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করে। দেশ থেকে সাগরের বাবা মোহাম্মদ আলী দেশ থেকে টিকিটের টাকা পাঠালে ২১ জুন দেশে ফেরৎ আসেন। সাগরের পাসপোর্টটি জিসুরাম দাসের কাছে রয়েছে। বর্তমানে দেশে ফিরে মানবেতর মা বাবাসহ পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন সাগর।
মামলার বাদি ও ভুক্তভোগী মো: আরশাদ আলী সাগর জানান, ভিসা বাবত ৩ লাখ ২০ হাজার এবং বিদেশে ৫ মাসের বেতন দেড় লাখসহ ক্ষতিপূরণ দাবি করে আদালতে মামলা করেছেন।
এব্যাপারে অভিযুক্ত জিসুরাম দাসের পিতা ও মামলার অভিযুক্ত (২নং আসামী) ক্ষিতিশ চন্দ্র দাসের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন (নং ০১৮৪৩ ২২৫৮৮৫) নাম্বারে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
Leave a Reply