নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
উত্তর জনপদের শষ্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাই উপজেলার প্রতিটি মাঠে মাঠে দুলছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। মাঠ গুলোতে এখন বোরো ধানের সবুজ আভা কেটে হলুদ বরণ ধারণ করতে শুরু করেছে। কিছু কিছু
এলাকায় পাকতে শুরু করেছে বোরো ধান।
যে দিকেই চোখ যায় শুধু বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ জুড়ে দুলছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। চারিদিকে এ যেন এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। মাঠে মাঠে হাওয়ায় দুলছে বরো ধানের সোনালী শীষ। আর আনন্দে দুলছে কৃষকের মন। কৃষকের মনে উঁকি দিচ্ছে এক ভিন্ন আমেজ। সোনালী ক্ষেত দেখে বারবার ফিরে তাকায় কৃষক, থমকে
দাঁড়ায় পথিক। আর কিছুদিন পরেই রাশি রাশি সোনালী ধানে ভরে উঠবে কৃষকের শূণ্য গোলা। কৃষকের মুখে ফুটবে হাসির ঝিলিক।
বোরো ধানের সোনালী শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। পাকা ধান ঘরে তুলতে জায়গা প্রস্তুতিতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। কৃষকরা বলছেন ধানের চারা রোপণ থেকে শুরু করে প্রায় শেষ সময় পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূল রয়েছে। এ কারণে ধানক্ষেতে রোগ-বালাই ছিল কম। ধান কাটা-মাড়াই পর্যন্ত এমন আবহাওয়া থাকলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা।
কৃষি অফিসের তথ্যমতে এবার উপজেলার ৮ ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। ধান নির্ভরশীল এলাকা হিসেবে আত্রাইয়ের প্রধান আবাদই বোরো ধান। বিশেষ করে উপজেলার মানিয়ারী, বিশা, ভোঁপাড়া, শাহাগোলা ও পাঁচুপুর ইউনিয়ন বোরো ধানের জন্য খ্যাত। এছাড়াও অন্যান্য ইউনিয়েনে বোরো ধানের চাষ হয়ে থাকে। এবারে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। ধান রোপনের শুরু থেকেই অনুকূল আবহাওয়া ও সঠিক পরিচর্যায় এবারের বোরো ধান মাঠে মাঠে দর্শনীয় হয়ে উঠেছে। বেশ কিছু এলাকায় আগাম জাতের ধান পাকতেও শুরু করেছে। অধিকাংশ এলাকার মাঠ জুড়ে সোনালী রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে বোরো ধানের শীষ। আর এ সোনালী শীষে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন।
উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কৃষক আজাদ প্রামানিক, শাহাগোলা গ্রামের আজাদ সরদার, বজ্রপুর গ্রামের মজিদ মন্ডল বলেন, মুলত আমাদের এলাকার প্রধান আবাদই হলো বোরো ধান। বোরো ধানের মধ্যে আমরা জিরাসাইল ধানের আবাদ সর্বাধিক পরিমাণ জমিতে করে থাকি। কিছু কিছু জমিতে নতুন অন্য জাতের ধানের চাষও করা হয়েছে।
শুরু থেকেই আবহাওয়া ভাল থাকায় ধানের শীষগুলো দর্শনীয় হয়ে উঠেছে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে এবারে বাম্পার ফলন হবে বলে আমরা আশাবাদি।
কৃষকরা আরও বলেন, উপজেলার বিভিন্ন মাঠে আগাম রোপণকৃত ধান ৮-১০ দিনের মধ্যে কাটামাড়াই শুরু হবে। কাটামাড়াই পুরোদমে শুরু হতে আরও এক সপ্তাহ লাগতে পারে। এ সময় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ দাবি করে তারা বলেন, ঝড়ো আবহাওয়া ও শিলাবৃষ্টির শঙ্কা মাথায় নিয়ে কৃষকরা মাঠে রয়েছেন। স্বপ্নের ধান কেটে ঘরে তুলতে পারলে এ ফসলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা।
এ ব্যাপারে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদ হাসান ও মারজিয়া পারভিন বলেন, বিশেষ করে অধিক ফলেন জন্য পরিমিত সার ব্যবহার, পানি সাশ্রয় এবং সার্বিক পরিচর্যায় কৃষকদের সচেষ্ট হতে আমরা সব সময়ই পরামর্শ দিয়ে আসছি। এবার আত্রাই উপজেলার কোথাও মাঝড়া পোকার আক্রমণ নেই। এবং উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন, চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। অল্প খরচে অধিক ফলনের জন্য আমরা কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করেছি। বিশেষ করে বোরো ধান বোপনের শুরু থেকেই আমাদের উপ-সহকারী কৃষি
কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায় কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ প্রদান করেছেন।
তিনি আরও বলেন, এ সময় রাত ও দিনের তাপমাত্রা উঠানামা করছে। এটি অত্যন্ত ক্রিটিক্যাল। কোনো কোনো সময় দিনের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করছে। এটি অব্যাহত থাকলে ধানের শীষ হিটশকে আক্রান্ত হতে পারে। এজন্য কৃষকদের সবরকম পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। #
caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6085caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6085
Leave a Reply