কমলগঞ্জে চা শ্রমিক দিবস : ১০০ বছরেও মেলেনি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি : ঘুচেনি  বঞ্চনা – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:১৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বড়লেখা ফুটবল একাডেমীর সভাপতি আব্দুর রহমান সম্পাদক বেলাল আহমদ বড়লেখায় সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ চার পরিবারে নিসচা’র ছাগল বিতরণ কমলগঞ্জে রংমিস্ত্রি যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু: পরিবারের দাবী পরিকল্পিত হত্যা বড়লেখায় নাগরিক সমন্বয় প্রকল্পের পাবলিক টাউন হল সভা প্রচেষ্টা নাগরিক সমন্বয় প্রকল্প তৈরী করল এক ভিন্ন সেতু বন্ধন কুলাউড়ায় খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় কোরআন খতম ও গণদোয়া মাহফিল  ইউটিউব দেখে আত্রাইয়ে মাশরুম চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছে “শাহাজাদী” কুড়িগ্রামে ছাত্রাবাস থেকে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার রাজস্ব তহবিলের অর্থ আত্মসাত- বড়লেখা উপজেলা পরিষদের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক বরখাস্ত, বিভাগীয় মামলা বড়লেখায় নবপল্লব প্রকল্পের ‘প্রকল্প অবহিতকরণ’ সভা

কমলগঞ্জে চা শ্রমিক দিবস : ১০০ বছরেও মেলেনি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি : ঘুচেনি  বঞ্চনা

  • বৃহস্পতিবার, ২০ মে, ২০২১

Manual7 Ad Code

কমলগঞ্জ  প্রতিনিধি ::

Manual3 Ad Code

২০ মে ঐতিহাসিক চা শ্রমিক দিবস। ১৯২১ সালের এই দিনে ব্রিটিশদের অত্যাচার থেকে মুক্ত হতে সিলেট অঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার চা-শ্রমিক নিজেদের জন্মস্থানে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা চালায়।

এ সময় চাঁদপুরের মেঘনাঘাটে বৃটিশ সৈন্যরা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হাজার হাজার চা শ্রমিককে হত্যা করে। এরপর থেকে ২০ মে চা শ্রমিকেরা ‘চা-শ্রমিক দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন। তবে বারবার দাবি জানানো এবং অনেক আন্দোলনের পরও ১০০ বছরেও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায়নি দিবসটি। ঘুচেনি চা শ্রমিকদের বঞ্চনা।

Manual1 Ad Code

বৃহস্পতিবার (২০ মে) চা শ্রমিক দিবস পালন উপলক্ষে কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর চা বাগান, মৃর্ত্তিঙ্গা চা বাগানসহ দেশের বিভিন্ন চা-বাগানের চা ছাত্র-যুব সংঘের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসুচী পালিত হয়েছে। বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যে ছিল সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গুলিতে নিহত চা-শ্রমিকদের স্মরণে শহীদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় এদিনের গুরুত্ব বিবেচনা করে ২০ মে-কে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার আহবান জানানো হয়।

দিবসটি পালন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় শমশেরনগর চা বাগান দুর্গামন্দিরে জাগরন যুব ফোরামের সভাপতি মোহন রবিদাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মাসিক চা মজদুর সম্পাদক সীতারাম বীন, ইউপি সদস্য ইয়াকুব মিয়া, নারেিনত্রী লছমী রাজভর, সমাজসেবক এম, এ, আহাদ প্রমুখ।

জানা যায়, পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে চীন ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোথাও চায়ের প্রচলন ছিল না। ১৮৫৪ সালে পরীক্ষামূলকভাবে সিলেটের মালিনীছড়া চা বাগানে চা চাষ শুরু করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। সে সময় বৃহত্তর সিলেটে চা বাগান তৈরির জন্য ভারতের আসাম, উড়িষ্যা, বিহার, উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকদের নিয়ে আসা হয়। বিশাল পাহাড় পরিষ্কার করে চা বাগান করতে গিয়ে হিংস্র পশুর কবলে পড়ে কত শ্রমিকের জীবন গেছে তার কোনো হিসেব নেই। এ ছাড়া ব্রিটিশদের অত্যাচার তো ছিলই। তাদের অব্যাহত নির্যাতনের প্রতিবাদে তৎকালীন চা শ্রমিক নেতা পন্ডিত গঙ্গাচরণ দীক্ষিত ও পন্ডিত দেও সরন ‘মুল্লুকে চল’ (দেশে চল) আন্দোলনের ডাক দেন। ১৯২১ সালের ২০ মে সিলেট অঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার চা শ্রমিক সিলেট থেকে হেঁটে চাঁদপুর মেঘনা স্টিমার ঘাটে পৌঁছেন। তারা জাহাজে চড়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে চাইলে ব্রিটিশরা গুলি চালিয়ে শত শত চা শ্রমিককে হত্যা করে মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দেয়। যারা পালিয়ে এসেছিলেন তাদেরকেও আন্দোলন করার অপরাধে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়।

Manual5 Ad Code

মেঘনা ঘাটে আসাম রাইফেলস এর গোর্খা সৈনিকরা নির্মমভাবে চা শ্রমিকদের হত্যা করে। এর পর যারা বেঁচে ছিলেন তারা নিরুপায় হয়ে আবারো বাগানে চলে আসেন। পরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে চা-শ্রমিকরা তীর-ধনুক নিয়ে যুদ্ধ করে। কিন্তু দেশে এখনো চা-শ্রমিকরা ভূমির অধিকার থেকে বঞ্চিত।

কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা চা বাগানের শ্রমিকনেতা রবি মুন্ডা জানান, চা শ্রমিকদেরকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে এদেশে এনে স্বল্প মজুরীর মাধ্যমে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের কাজ করানো হয়। তাই শ্রমিকরা নিজ মুল্লুকে ফিরে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা সফল হয়নি। এখনো চা শ্রমিকরা বঞ্চিত আছে।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রামভজন কৈরী বলেন, ‘চা-শ্রমিকদের মৌলিক চাহিদা পূরণে দীর্ঘদিন ধরে মজুরি বৃদ্ধি, ভূমি অধিকার, বাসস্থান ও চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু এসব বাস্তবায়ন না হওয়ায় তাঁদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।’ তার দাবী ‘অবহেলিত চা-শ্রমিকদের বাসস্থানের জায়গাটুকু তাঁদের নিজের নামে দিতে হবে। যাতে বাগান কর্তৃপক্ষ যখন-তখন ভূমি থেকে চা-শ্রমিকদের উচ্ছেদ করতে না পারে। যে বসতভিটায় প্রায় দেড়’শ বছর ধরে বসবাস করে আসছি, আমরা চাই সরকারের মাধ্যমে সেটা আমাদের নামে দেওয়া হোক। যদি সেটা করা হয়, তাহলে আমরা দাসত্ব জীবন থেকে মুক্তি পাব।’

জাগরণ যুব ফোরামের সভাপতি মোহন রবিদাস বলেন, অত্যন্ত কষ্ট নিয়ে বলতে হচ্ছে এই মুল্লুকে চলো আন্দোলনের ১০০ বছর পরেও চা শ্রমিকদের অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি। এখনও চা শ্রমিকরা চা-বাগান মালিক কর্তৃক অত্যাচার-নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। মাত্র ১০২ টাকা (বি ক্লাস বাগান ১০০, সি ক্লাস ৯৯ টাকা পায়) দিয়ে করোনা ভাইরাসের মতো এই মহামারির মধ্যেও তারা (চা কোম্পানি) চা শ্রমিকদের দিয়ে ঠিক দুই বেলাই কাজ করিয়ে নিচ্ছে।

Manual8 Ad Code

এমনকি আজকের এই ঐতিহাসিক (২০ মে) দিনেও কাজ করছেন চা শ্রমিকরা। প্রতিটি চা বাগানের চা শ্রমিকরাই নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আজ মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।#

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!