এইবেলা, কুলাউড়া ::
কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে জেলা পরিষদের প্রকল্পের স্থান মৌখিক পরিবর্তন করে বিএনপি নেতার বাড়ির রাস্তা নির্মাণ করে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী। এ নিয়ে এলাকার ২ গ্রামের মানুষের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। কিন্তু মানুষের আপত্তি আমলে নিতে নারাজ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।
সরেজমিন জানা যায়, হাজীপুর ইউনিয়নের মাতাবপুর রবিদাস বাড়ি থেকে পলক নদী পর্যন্ত একটি সরকারি রাস্তা রয়েছে। এই রাস্তা দিয়ে ৪০ টি রবিদাস পরিবারের লোকজনসহ তুকলি মাতাবপুর গ্রামের লোকজন ধানি জমি ও পলক নদীতে যাতায়াত করেন। বর্ষায় একটু বৃষ্টি হলে রাস্তাটি কাঁদাযুক্ত হয়ে যাওয়ায় রবিদাস পরিবারের লোকজন মৃত ব্যক্তির লাশ সৎকার করার জন্য পলক নদীতে লাশ নিয়ে যেতে পারেন না। বিষয়টি একাধিকবার স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানালে জনগনের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে হাজীপুর ইউপি চেয়ারম্যানের আব্দুল বাছিত বাচ্চু মাতাবপুর রবিদাস বাড়ি থেকে মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটি ইটসোলিং করার জন্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে এই রাস্তাটি ইটসোলিং করার জন্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ২০১৯-২০ অর্থ বছরে এক লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেন। গত ১১ জুলাই শনিবার রাস্তার কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিলো।
এলাকার তবারক আলী, মোমিন আলী, সুন্দর আলী, ফররুখ মিয়াসহ অনেকে জানান, ৯ জুলাই বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ার সামছুল আলম ও ঠিকাদার শামীম আহমদ আকস্মিকভাবে স্থানীয় বিএনপি নেতা ফারুক আহমদ পান্নার বাড়িতে গিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। পরদিন জানান নির্ধারিত রাস্তায় কাজ না করে তিনি উক্ত বিএনপি নেতার বাড়িতে যাওয়ার রাস্তায় কাজ করবেন। এতে ওই এলাকার লোকজন ফুসে ঊঠে।
এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি হাজী আকবল আলী জানান, রবিদাস বাড়ি থেকে পলক নদীর রাস্তাটি সরকারি। অপরদিকে পান্নার বাড়ির লোকজন যাতায়াত করেন সাবেক চেয়ারম্যান সত্য বাবু, সাবেক মেম্বার আতাউর রহমান কদ্দুস, মাতাবপুর গ্রামের এবাদ উল্লাসহ কয়েক মালিকের জমির উপর দিয়ে।
তুকলি গ্রামের সর্দার আব্দুস সোবহান বলেন, সরকারি রাস্তা বাদ দিয়ে কোনো ব্যক্তির মালিকানাধীন জমিতে সরকারি টাকায় রাস্তা করা হলে জনগণ মেনে নেবে না।
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চু জানান, এলাকার লোকজনও ভোগান্তি লাগবে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাস্তাটি ইটসোলিং করার আবেদন করি। বরাদ্দ দেয়া টেন্ডার আহবান সবই ঠিক আছে। কিন্তু হঠাৎ করে জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী কি স্বার্থে শতাধিক পরিবারের কথা চিন্তা না করে মাতাবপুর গ্রাম ছেড়ে মনুবাজারে গিয়ে বিএনপি সভাপতিসহ ২ পরিবারের বাড়ির রাস্তা করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন- তা আমার বোধগম্য নয়। এ নিয়ে যে কোনো অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির দায় তাকেই বহন করতে হবে।
বিষয়টি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আজিজুর রহমানকে জানালে তিনি সহকারী প্রকৌশলী এলাকায় গিয়ে পরিদর্শন পূর্বক প্রকল্প মোতাবেক কাজ শুরু করার নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী সামছুল আলম জানান, প্রকল্প অনুযায়ী যে রাস্তার কাজ তাতে এলজিএসপি প্রকল্প থেকে কাজ করানো হয়েছে। লেনদেনের বিষয়টি সঠিক নয়। জেলা পরিষদ যে সিদ্ধান্ত দেবেন সে অনুযায়ী কাজ হবে।#
Leave a Reply