বড়লেখায় পড়ে আছে সেতু, এক পরিবারের আপত্তিতে ২৫০ পরিবার দুর্ভোগে বড়লেখায় পড়ে আছে সেতু, এক পরিবারের আপত্তিতে ২৫০ পরিবার দুর্ভোগে – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০৫ পূর্বাহ্ন

বড়লেখায় পড়ে আছে সেতু, এক পরিবারের আপত্তিতে ২৫০ পরিবার দুর্ভোগে

  • সোমবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২২

আব্দুর রব ::

মৌলভীবাজারের বড়লেখার দক্ষিণ গাংকুল গ্রামের একটিমাত্র স্বার্থান্বেষী পরিবারের আপত্তিতে সরকারের প্রায় ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজ দেড়যুগ ধরে পড়ে রয়েছে। আসছে না জনগণের কোন উপকারে। নির্মিত ব্রিজের উভয় দিকের সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট করতে না দেয়ায় প্রায় ২৫০ পরিবার দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তবে সংযোগ সড়ক নির্মাণে বাধাদানকারি পরিবারের সদস্যরা কয়েক বছর ধরে ওই ব্রিজের ওপর দোকানঘর তৈরী করে দিব্যি ব্যবসা চালাচ্ছে। যদিও সরকারি কোন স্থাপনা এভাবে ব্যবহারের নিয়ম নেই।

জানা গেছে, প্রায় ১৮ বছর আগে তৎকালিন সরকার বড়লেখা উপজেলার গাংকুল গ্রামকে আদর্শগ্রাম ঘোষণা দিয়ে নানা উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করে। দক্ষিণ গাংকুল ও খন্দকার টিলার সহস্রাধিক মানুষের যাতায়াত সুবিধার জন্য দক্ষিণ গাংকুল গ্রামের অভ্যন্তরের রাস্তার সম্মুখে রেললাইন সংলগ্ন স্থানে এলজিইডি প্রায় ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি ব্রিজ নির্মাণ করে। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর ব্রিজের সংযোগস্থলে মাটি ভরাটে গফুর আলী, হারু মিয়া সহোদররা আপত্তি করায় নবনির্মিত ব্রিজটি এলাকাবাসি ব্যবহার করতে পারেননি। বাধ্য হয়ে লোকজন ব্রিজের পাশের নিচু স্থান দিয়ে যাতায়াত করছেন।

সরেজমিনে গেলে সাবেক ইউপি মেম্বার ইকবাল হোসেন জানান, কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট এবাদুর রহমান চৌধুরী দক্ষিণ গাংকুল গ্রামের অভ্যন্তরীণ রাস্তার পশ্চিম প্রান্তে রেললাইন সংলগ্ন স্থানে ব্রিজ নির্মাণের বরাদ্দ দেন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করে। কাজ শেষ হওয়ার পর এক পরিবারের আপত্তির কারনে ব্রিজটি চালু করা যায়নি। সংযোগ সড়ক তৈরীর জন্য টিআর বরাদ্দও আসে। কিন্ত গফুর আলী গংরা কাজ করতে দেয়নি। ফলে বরাদ্দ ফেরৎ যায়। মুলত গফুর আলী ও তৈয়ব আলীর ব্যক্তিগত বিরোধের কারণে ব্রিজটি চালু করতে দেয়া হয়নি। আর এর শিকার হচ্ছেন গ্রামের ২৫০ পরিবার।

গ্রামের বাসিন্দা মো. আরমান আমান, সফিক আহমদ, সাইদুল ইসলাম প্রমুখ জানান, ব্রিজের উভয় পাশে মাটি ভরাট করতে না দেয়ায় প্রায় ১৮ বছর ধরে ব্রিজটি মানুষের কোন কাজেই আসছে না। এর নিচ দিয়ে যাতায়াত করতে গ্রামবাসিকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাস্তাটি বছরে ৬-৭ মাস পানির নিচে তলিয়ে থাকে। তখন বাধ্য হয়ে লোকজন ও শিক্ষার্থীদের প্রায় ৫০০ মিটার এলাকা ঘুরে বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্টানে যাতায়াত করেন। গফুর আলী, হারু মিয়া গংরা মাত্র ৮-১০ হাত জায়গায় মাটি ভরাট করতে না দেয়ায় সহস্রাধিক মানুষ সরকারের এ ব্রিজ নির্মাণের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কিন্তু রহস্যজনকভাবে ব্রিজের বিরোধিতাকারির ছেলে জয়নুল ইসলাম ৭-৮ বছর ধরে ব্রিজের ওপর দোকান তৈরী করে ব্যবসা করছে। তারা সরকারি স্থাপনার ওপর থেকে দখলদার ব্যক্তিকে উচ্ছেদ ও বিজ্রটি চলাচল উপযোগি করার ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানান।

ব্রিজের সংযোগ সড়ক তৈরীতে আপত্তিকারী গফুল আলীর ভাতিজা জয়নুল ইসলাম ব্রিজের ওপর দোকানঘর তৈরী করে ব্যবসা করতে দেখা গেছে। এব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্রিজটি আরো কয়েক হাত দক্ষিণ দিকে সরিয়ে তৈরীর কথা ছিল। এখানে নির্মাণ করায় তাদের কিছু জমি নষ্ট হয়ে যাবে তাই ব্রিজের উভয় পাশে মাটি ভরাট করতে দেননি।

উপজেলা প্রকৌশলী প্রিতম সিকদার জয় জানান, সরকারি অর্থায়নে নির্মিত বিজ্র কারো বাধায় অকেজোভাবে পড়ে থাকা খুবই দুঃখজনক। আপত্তি থাকলে নির্মাণ করতে দিলেন কেন। এছাড়া সরকারি কোন স্থাপনার ওপর দোকানঘর তৈরীরও নিয়ম নেই। তিনি খোজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews