প্রতিবন্ধি দিবস : শতাধিক প্রতিবন্ধি ব্যক্তি কর্মক্ষম হয়ে উঠার গল্প প্রতিবন্ধি দিবস : শতাধিক প্রতিবন্ধি ব্যক্তি কর্মক্ষম হয়ে উঠার গল্প – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:১১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বড়লেখায় ভক্তদের ভিড়-কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মণ্ডপ পরিদর্শন কমলগঞ্জে শ্রমিক নেতা, ভাষা সংগ্রামী মফিজ আলীর ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত কুলাউড়ার শরীফপুর সীমান্ত দিয়ে ৬ সহস্রাধিক কেজি ইলিশ গেলো ভারতে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা ঘোষণা- বড়লেখায় বর্হিবিশ্ব জাতীয়তাবাদী ফোরাম মানবিক কাজে ব্যয় করেছে ৫০ লক্ষাধিক টাকা ভাষা সংগ্রামী ও প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা কমরেড মফিজ আলীর মৃত্যু বার্ষিকী আজ বড়লেখায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ৩ পরিবারের মাঝে ঢেউ টিন বিতরণ জুড়ীতে প্রান্তিক মৎস্য চাষিদের মাঝে পোনা মাছ বিতরণ কুলাউড়ায় যানজট নিরসনে অভিযানে অর্ধশত গাড়ির চাবি জব্দ কমলগঞ্জে মন্দির সংস্কার ও অস্বচ্ছল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণ কুলাউড়ায় আ’লীগের বিরুদ্ধে মামলা করে বিপাকে বাদী : নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি

প্রতিবন্ধি দিবস : শতাধিক প্রতিবন্ধি ব্যক্তি কর্মক্ষম হয়ে উঠার গল্প

  • শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২২

আজিজুল ইসলাম ::  কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের সেলিম হোসেন (৪০)। টেলিভিশন ফ্যানসহ ইলেকট্রিক সামগ্রি মেরামত করেন। আর তাতে চলে ৬ জনের সংসার। সেই সাথে ৪ সন্তানের লেখাপড়ার খরচ। সংসারের টানপোড়েন থাকলেও কারো কাছে হাতপাততে হয়। প্রতিবন্ধিতাকে জয় করে জীবন যুদ্ধে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।

সেলিম হোসেন জানান, তিনি জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধি। জন্মের পর তার দুটি পা বিকলাঙ্গ হয়ে যায়। মুলত পোলিও আক্রান্ত হয়ে তিনি পা হারান। হুইল চেয়ারে বসে চলাচল করতেন। এখন নিজেই তিন চাকার ট্রাই সাইকেলে ইঞ্জিন লাগিয়ে চলাফেরা করেন। যেকোন জায়গায় কম সময়ে যেতে পারেন স্বাচ্ছন্দ্যে।

মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে টেলিভিশন ফ্যানসহ ইলেকট্রিক সামগ্রি মেরামত করে দেন। সবার বাড়ি সবসময় যাওয়া কষ্টকর বলেই ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের মাদরাসা বাজারে একটি দোকানে তিনি কারিগরি কাজগুলো করেন।

তিনি আরও জানান, প্রতিদিন ৫-৬শত টাকা রোজগার করেন। তাদিয়ে দোকান কোটা ভাড়া, কারেন্টবিল ও অন্যান্য খরচ হিসেবে দিতে হয় দেড় হাজার টাকা। বাকি টাকায় চলে সংসার। ছেলে নয়ন ৮ম শ্রেণিতে, মেয়ে আখি ৭ম শ্রেণিতে, আরেক মেয়ে সাকি ২য় শ্রেণিতে এবং সব ছোট ছেলে জীবন ১ম শ্রেণিতে পড়ছে। তাদের লেখাপড়ার খরচ মিটাতে গিয়ে সংসারের টানাপোড়েন লেগেই থাকে।

স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা প্রচেষ্টার থেকে লিডারশীপসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিয়ে কারিগরি কাজ করে পেয়েছেন বেঁচে থাকার নতুন অবলম্বন। নয়তো ভিক্ষে করে চলতে হতো। এর পাশাপাশি সরকার থেকেও পান প্রতিবন্ধি ভাতা।

উপজেলার কুলাউড়া গাজীপুর চা বাগানের দৃষ্টি প্রতিবন্ধি জয়ন্তী চাষা (২৫)। প্রশিক্ষণভাতা ৫ হাজার ৬শ টাকায় কিনেছিলেন ছাগল। সেখান থেকে এখন ২টি ছাগল ও ৩টি গরুর মালিক। সে এখন মা বাবার পরিবারের বোঝা নয়, বরং চা শ্রমিক বাবার সংসারের বড় আয়ের উৎস।

একইভাবে কালিটি চা বাগানের শারীরিক প্রতিবন্ধি বৃষ্টি কৈরি (২০), প্রতাবি গ্রামের দৃষ্টি প্রতিবন্ধি পপি বেগম (২৫), হিঙ্গাজিয়া চা বাগানের প্রভাতী (২২), শারীরিক প্রতিবন্ধি বিধু ভক্তা (৩৮) ও সম্পূর্ণ দৃষ্টি প্রতিবন্ধি সুর দাস (৫০) ওরা এখন নিজেদের প্রতিবন্ধি হিসেবে বোঝা নয় বরং নিজেদের কর্মক্ষম ব্যক্তি হিসেবে মনে করে।

সেলিম ও জয়ন্তী ছাড়াও কুলাউড়া উপজেলার সদর ও ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নে প্রতিবন্ধিতা জয় করে কর্মক্ষম ব্যক্তি রয়েছেন ১২৩ জন প্রতিবন্ধি ব্যক্তি কর্মক্ষম হয়ে তাদের জীবিকা ও পরিবারকে সগযোগিতা করছেন স্থানীয় সেরকারি সংস্থা প্রচেষ্টার সহযোগিতায়। ২০১৮ সাল থেকে এসব প্রতিবন্ধিদের নিয়ে কাজ করছে সংস্থাটি। অস্ট্রেলিয়ান সিডিডি নামক সংস্থার অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পের কাজ চলতি ডিসেম্বর মাসে শেষ হচ্ছে বলে জানান প্রচেষ্টার প্রোগ্রাম কো অর্ডিনেটর মুক্তা রানী দেব ও রিসোর্স পার্সন মো. শাহজাহান আলী।

তারা আরও জানান, দুটি ইউনিয়নে ১২৩ জন প্রতিবন্ধিকে নিয়ে ১০ দলে ভাগ করে তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- জেন্ডার ও শিশু সুরক্ষা, প্রতিবন্ধি ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩, রিসোর্স মুভিলাইজেশন এবং লিডারশীপ ট্রেনিং করানো হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে তারা যাতে কর্মক্ষম হয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারে, সে বিষয়টাকে গুরুত্ব দিয়ে তারা কাজ করেছেন। বিশেষ করে মানসিক সাপোর্ট ও চলাচলের জন্য বিশেষ যন্ত্র। যেমন শারীরিক প্রতিবন্ধির জন্য হুইল চেয়ার, শ্রবণ প্রতিবন্ধির জন্য হেয়ার ডিভাইস, দৃষ্টি প্রতিবন্ধির জন্য সাদাছড়ি ইত্যাদি প্রদান করা হয়েছে।

সংস্থার নির্বাহী পরিচালক নবাব আলী নকী খান জানান, প্রতিবন্ধি সমাজে থাকবে, এটা কোন বিষয় নয়। মুল বিষয়টা হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা। এদের সরকারি বেসরকারি অফিস আদালতসহ সকলক্ষেত্রে নির্বিঘেœ চলাচলের সুযোগ করে দেই, তাহলে তারা অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে। সরকার এ ব্যাপাওে বেশ আন্তরিক। এখন আমাদের যার যার অবস্থান থেকে আরও সচেতনতা বাড়লে তারা উপকৃত হবে।#

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews