এইবেলা, বড়লেখা:
বড়লেখায় ৩ বছরে বিভিন্ন প্রজাতির অর্ধলক্ষ বৃক্ষের চারা রোপন করে পরিবেশ রক্ষায় অনন্য অবদান রেখেছেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তাজ উদ্দিন। নিজের সম্মানি ভাতার সম্পুর্ণ অর্থসহ আরো কিছু ব্যক্তিগত ফান্ডে প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে তিনি শুরু করেন বৃক্ষরোপন কর্মসূচি। গাছ লাগানোই যেন তার নেশায় পরিণত হয়। চারা রোপনের মহৎ এই কর্মসূচি পালন করায় বৃক্ষরোপনে পেয়েছেন প্রধান মন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার।
গত বছর সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বৃক্ষরোপন অভিযান ও বিভাগীয় বৃক্ষমেলায় তাকে বিভাগ শ্রেষ্টত্বের সম্মাননা সনদ ও ক্রেষ্ট প্রদান করেছে বন অধিদপ্তর।
পরিবেশ রক্ষায় অনন্য অবদানের জন্য গত বছর স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা ‘মাছরাঙা প্রকাশন’ তাকে সম্মাননা দিয়েছে। এছাড়াও অনেক সামাজিক সংগঠন তাকে সম্মাননা দিয়ে মহতি কাজের স্বীকৃতি দিয়েছে।
তার উগ্যোগে সৃজিত অর্ধলক্ষ বৃক্ষের মধ্যে রয়েছে ফলজ, ভেষজ, ঔষধি ও বনজ গাছের চারা। গাছগুলো এখন বেশ বড় হয়েছে। মানুষের উপকারে আসছে। তার এ মহতি কাজে দূর্বার স্কাউটদলের সদস্যরা বিনা পারিশ্রমিকে সহযোগিতা করেছে। তিনি মনে করেন গাছ শুধু অক্সিজেন দেয় আর কার্বনডাই অক্সাইড শোষন করে তা নয়, গাছ পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদা পুরণ ও অর্থনৈতিকভাবে আমাদের অসামান্য উপকারে আসে। গাছের প্রতি তার এমন ভালোবাসায় জনপ্রতিনিধি থেকে এলাকায় পরিচিতি পেয়েছেন বৃক্ষ প্রেমিক হিসেবে।
হঠাৎ গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণ জানতে চাইলে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তাজ উদ্দিন জানান, গাছ অক্সিজেন দিয়ে কার্বনডাই অক্সাইড গ্রহণের মাধ্যমে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে। ফলে সময় মত বৃষ্টিপাত হয়। অতিবৃষ্টি, খরা, ভুমিকম্পসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে আমাদের রক্ষা করে। বন হচ্ছে বিভিন্ন প্রাণি ও পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু বন উজাড়ের কারণে বন্যপ্রাণি আজ লোকালয়ে বেরিয়ে আসছে। হারিয়ে যাচ্ছে নানা বন্যপ্রাণি। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। ‘বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাসে ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে বৃক্ষরোপণের কোন বিকল্প নেই। আর এসব চিন্তা থেকেই তিনি গাছ লাগাতে উদ্যোগি হন। তার এ কর্মসূচিতে তিনি সম্পৃক্ত করেন দূর্বার মুক্ত স্কাউট দল ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের। যাতে গাছের উপকারিতা উপলব্দি করে তারাও গাছ লাগাতে আগ্রহী হয়। মোহাম্মদ তাজ উদ্দিন আরো জানান, গাছ রোপনের স্থান ও পরিচর্যার ব্যাপারেও তিনি অত্যন্ত সচেতন। এজন্য প্রতিদিন তিনি সরকারি পতিত জমি, রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পুকুর পাড়, বন উজাড় হওয়া পাহাড়ি টিলা, নদীর তীর ও খাল-বিলের পাড় এবং হাওর অঞ্চলে বৃক্ষের চারা রোপণ করতেন। তার এই কার্যক্রমের স্বীকৃতিও পেয়েছেন অনেক। যা তাকে পরিবেশ রক্ষায় নতুন কর্মসূচি হাতে নিতে উৎসাহী করেছে।
এব্যাপারে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এমপি জানান, বড়লেখা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ তাজ উদ্দিনের এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে পরিবেশ বান্ধব একটি প্রশংসনীয় সাহসি উদ্যোগ। এতে মানুষ গাছের উপকারিতা উপলব্ধি করতে পারবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব প্রতিরোধে ব্যাপক ভুমিকা রাখবে। সবাই তার মত এগিয়ে আসলে আমাদের বসবাস উপযোগি কাঙ্খিত বনাঞ্চল আবার গড়ে উঠবে।
Leave a Reply