কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কুটি চন্দ্রখানা গ্রামের আজিজ জোলের উপর নবনির্মিত কালভার্টটি দুমড়ে মুচড়ে গেছে।
কালভার্ট ধসে পড়ায় যাতায়াতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে হাজারো মানুষ। স্থানীয়দের দাবি দায়সারাভাবে কালভার্টের নির্মাণ কাজ করায় তা ভেঙ্গে গিয়ে যাতায়াতের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে ভেঙে যাওয়া কালভার্টের জঞ্জাল সরিয়ে একই স্থানে নতুন করে কালভার্ট নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, উপজেলা পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) আওতায় ২০২১- ২২ অর্থ বছরে ২ লক্ষ ১০ হাজার (প্রাক্কলিত মূল্য) টাকায় তিন দশমিক পাঁচ মিটার দৈর্ঘ্য ও তিন মিটার প্রস্থের কালভার্ট নির্মাণ করা হয়।
কালভার্টের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেন কুড়িগ্রাম সদরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স অপু ট্রেডার্স। নির্মাণের কিছু দিন পর কালভার্ট ধসে গিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে যাতায়াতের চরম ভোগান্তির শিকার স্থানীয়রা ক্ষোভ জানিয়েছেন।
দক্ষিণ কুটি চন্দ্রখানা গ্রামের মন্টু চন্দ্র বলেন, কালভার্টটি ধসে যাওয়ায় দক্ষিণ জেলেপাড়া, দাসিয়ার ছড়া, কুমারপাড়া, ভাটিয়াটারি, হাবিবপুর , সেনপাড়ার লোকজনসহ এই সড়কে যাতায়াতকারী হাজার হাজার মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, এখানে আগে বাঁশের চাটাইয়ের সাঁকো ছিল। ভাঙাচোরা সাঁকো দিয়ে যাতায়াতে কষ্ট ছিল। কালভার্ট নির্মাণ কাজ শুরুর সময় আমরা খুব আনন্দে ছিলাম। আমরা ভেবেছিলাম আমাদের যাতায়াতে ভোগান্তি আর থাকবেনা। কিন্তু কালভার্ট নির্মাণের কয়েক দিনের মাথায় তা ভেঙ্গে গেছে।
ফজলুল হক নামের আরেকজন বলেন, আমরা গ্রামবাসীরা এই সড়ক দিয়ে হাটবাজারে যাতায়ত করতাম। আমাদের ছেলে মেয়েরা স্কুল কলেজে যাতায়াত করতো।
কালভার্টের এমন দশার কারণে অন্য সড়ক দিয়ে অনেকটা পথ ঘুরে আমাদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। দায়সারা কাজের কারণে কালভার্ট ভেঙে গেছে। এখন আর কোন যানবাহন চলাচল করতে পারেনা। আমাদের যাতায়াতের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
কালভার্টের নির্মাণ কাজ তদারকির দায়িত্ব পালনকারী উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহিদ হাসান বলেন, কালভার্টের নির্মাণ কাজে কোন গাফিলতি ছিল না। স্বল্প বরাদ্দে যেভাবে কালভার্ট নির্মাণের কথা ছিল ঠিকাদার সেভাবেই কালভার্ট নির্মাণ করেছেন। ভারী বৃষ্টি আর তীব্র স্রোতের কারণে কালভার্টের দুপাশের মাটি সরে গিয়ে কালভার্টটি ধসে পড়েছে।
কালভার্টটির বিষয়ে ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরের কালভার্ট নির্মাণ করার কথা থাকলেও অনেক পরে কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়েছে।কালভার্ট নির্মাণের পর ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে কালভার্টের দুপাশে মাটি ভরাটের কাজ বাস্তবায়ন করা হয় ।
আসলে ওখানে যে মানের কালভার্ট নির্মাণ করার প্রয়োজন ছিল সেই মানের কালভার্ট নির্মাণ করা হয়নি। ফলে কালভার্টের এমন পরিনতি হয়েছে। স্থানীয়দের যাতায়াতের ভোগান্তি হচ্ছে। ওখানকার পরিস্থিতি বিবেচনা করে মজবুত ও টেকসই কালভার্ট অথবা সেতু নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী আসিফ ইকবাল রাজিব বলেন, ওখানে আগে বাঁশের সাঁকো ছিল। মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তি নিরসনে ইউপি চেয়ারম্যান সাহেবের জোড়াজুড়িতে এডিপির স্বল্প বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছিল।
শুনেছি নির্মিত কালভার্টটি ধসে পড়েছে। মানুষের যাতায়াতে অসুবিধা হচ্ছে। সরেজমিন পরিদর্শন করে স্থানীয়দের ভোগান্তি দূর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। #
Leave a Reply