এইবেলা, বড়লেখা :
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা নির্বাচন অফিসে ভোট উঠানো, জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধন, এলাকা পরিবর্তনসহ অন্যান্য কাজে আসা সেবা প্রত্যাশীদের নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে গত ৩ আগষ্ট যোগদান করা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দীপক কুমার রায়ের বিরুদ্ধে। গত ২১ সেপ্টেম্বর তার যোগদানের ৩৩ কার্যদিবস অতিবাহিত হয়। কিন্তু ৫ কার্যদিবসেও তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি। এতে সেবাপ্রত্যাশীরা সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পড়ছেন প্রবাসগামী নতুন পাসপোর্ট তৈরীকারী ও কম সময় নিয়ে ছুটিতে দেশে আসা প্রবাসীরা।
ভোক্তভোগীদের অভিযোগ এরমধ্যে যে ক’দিন নির্বাচন কর্মকর্তা অফিস করেছেন সেবাপ্রত্যাশী, জনপ্রতিনিধি, জ্যেষ্ঠ নাগরিকসহ প্রায় সবার সাথেই তিনি অসদাচরণ করেছেন। নির্বাচন অফিসে ঘুসের অঙ্ক নির্ধারণ করতেই তিনি এধরণের স্বেচ্ছাচারিতা, সেবাপ্রত্যাশীদের অহেতুক হয়রানি ও অসদাচরণ করছেন বলে মন্তব্য করলেন রফিক উদ্দিন নামে ভোক্তভোগি এক জনপ্রতিনিধি (ইউপি সদস্য) ও একজন ইউপি চেয়ারম্যান।
জানা গেছে, ৩ আগষ্ট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দীপক কুমার রায় বড়লেখায় যোগদান করেন। ২১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তার ৩৩ কার্যদিবস অতিবাহিত হলেও ৫ কার্যদিবসেও ভোক্তভোগিরা তাকে অফিসে পাননি। অভিযোগ রয়েছে, যে ক’দিন তিনি অফিস করেছেন ওই দিনেও কাজে আসা লোকজনের সাথে চরম অসদাচরণ করেছেন। বড়লেখা অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সিটিজেন ফোরামের জেনারেল সেক্রেটারি আব্দুস সাত্তার জানান, তার নাতনির (কলেজ শিক্ষার্থী) ভোট উঠানোর আবেদন অনেক আগেই অফিসে জমা দেন। পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য চার/পাঁচ দিন অফিসে গিয়েও নির্বাচন কর্মকর্তাকে না পেয়ে ফিরে যান। অবশেষে বুধবার (২০.৯) তাকে অফিসে পান। নিয়মিত অফিস না করায় লোকজনের দুর্ভোগ, হয়রানি ও মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হওয়ার কথাবার্তার এক ফাঁকে নিজের পরিচয় দিতে তিনি তার একটি ভিজিটিং কার্ড দেন। কিন্তু নির্বাচন কর্মকর্তা দীপক কুমার রায় তাচ্ছিল্যের সাথে তার ভিজিটিং কার্ডটি না দেখেই অন্যপাশে টেলে দেন। যা একজন বয়ঃজ্যেষ্ঠ ব্যক্তির সাথে চরম অসদাচরণ।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলা নির্বাচন অফিসে লোকজনের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। ভুক্তভোগী আব্দুল হামিদ জানান, তিনি বিয়ানীবাজার উপজেলা থেকে বড়লেখা সদর ইউনিয়নে বাড়ি তৈরী করে বসবাস করছেন। চলিত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি তিনি স্ত্রী, সন্তানসহ নিজের জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা পরিবর্তনের আবেদন করেন। অনেক দৌঁড়ঝাপের পর তিনি ও তার সন্তানদের ঠিকানা স্থানান্তরের কাজ সম্পন্ন হলেও স্ত্রী শিল্পী বেগমের স্থানান্তর কার্যক্রম সম্পন্ন করেনি উপজেলা নির্বাচন অফিস। এজন্য প্রায় দুই মাস ধরে নির্বাচন অফিসে ধর্না দিচ্ছেন। কর্মচারিরা অফিসার নেই, সার্ভার স্লো ইত্যাদি অজুহাত দেখিয়ে তাকে ঘোরাচ্ছেন। যে দিন অফিসার আসবেন বলে জানিয়েছেন ওই দিন গিয়েও নির্বাচন কর্মকর্তাকে পাননি। বৃহস্পতিবার খোঁজ নিতে গেলে কর্মচারিরা বলেছেন এখন আর স্থানান্তর হবে না। আগামি সংসদ নির্বাচনের পর যেন যোগাযোগ করেন।
আরেক ভোক্তভোগি লোকমান আহমদ জানান, চাচা সাইফুর রহমান স্ত্রীর (চাচি) নাম সংশোধনের জন্য প্রায় ৪ মাস আগে আবেদন জমা দেন। তদন্তের জন্য ডকুমেন্ট নিয়ে অফিসে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়। চাহিত সব ডকুমেন্ট প্রায় এক মাস আগে জমা দেন। এরপর একাধিক কার্যদিবসে অফিসে গেলে বলা হয় নির্বাচন অফিসার নেই, পরে আসেন। বৃহস্পতিবার অফিসে গিয়ে নির্বাচন কর্মকর্তাকে না পেলেও জানতে পারেন অদ্যাবদি তদন্ত প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনে পাঠানোই হয়নি।
উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের কুমারসাইল গ্রামের কানু বাক্তি নতুন ভোট উঠাতে এপ্রিল মাসে আবেদন করেন। কোন ম্যাসেজ না পাওয়ায় কয়েক দিন পরপর অফিসে ধর্না দিয়েও প্রতিকার পাননি। অফিসের স্টাফরা নির্বাচন কর্মকর্তা অফিসে আসেননি, পরে আসেন বলেই ভোক্তভোগিদের বিদায় করেছে।
এব্যাপারে নির্বাচন অফিসার দীপক কুমার রায়ের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘আপনার কি সমস্যা, কোন সমস্যা থাকলে বলেন। এখন বাহিরে রয়েছি, অফিসে আসলে যোগাযোগ করবেন।’
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply