প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ, কমলগঞ্জ :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে আন্তর্জাতিক কন্যা দিবস উপলক্ষে উপজেলঅ মহিলা বিষয়ককর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছে সুবিধাবঞ্চিত শব্দকর সম্প্রদায়ের মেয়ে ইতি রানী কর। সেদয়াময় সিংহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও তিলকপুর এনসিটিএফ এর চাইল্ড জার্নালিষ্ট। প্রতীকী দায়িত্ব নিয়েই উপজেলার শিশু-কিশোর ও নারীদের জন্য সর্বক্ষেত্রে নিরাপদ পরিবেশ সুনিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানায় ইতি রানী কর। এ সময় বাল্যবিয়ে, নারী নির্যাতন ও নিপীড়ন বন্ধ ও মাদকদ্রব্যের নিয়ন্ত্রণ রোধে আলোচনা করা হয়।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় কমলগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোছা: হোসনে আরা তালুকদারের কাছ থেকে প্রতীকী দায়িত্ব গ্রহণ করে ইতি রানী কর। এক ঘণ্টার জন্য তার অধীনস্থ হন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কার্যালয়ের কর্মকর্তা- কর্মচারীরা। এ সময় ইতিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
গার্লস টেকওভার মেয়েদের অধিকারে বিনিয়োগ করুন: আমাদের নেতৃত্ব, আমাদের কল্যাণ– এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সহযোগিতা ও রিলায়েন্ট উইমেন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (আরডব্লিউডিও) এর উদ্যোগে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ আয়োজন করা হয়।
আরডব্লিউডিও-ওয়াই মুভ প্রকল্প, কমলগঞ্জ এর কর্মকর্তা বাবুল কুমার সিংহের সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য সাংবাদিক প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিরঞ্জন দেব, এনসিটিএফ তিলকপুর এর সদস্য জুতিকা রানী কর, সুজন কর প্রমুখ।
ইতি রানী কর বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমি এনসিটিএফ এর সাথে কাজ করছি, তবে আমার জন্য এই ধরনের অভিজ্ঞতা নতুন, এক ঘন্টার প্রতীকী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় নিজেকে খুব গর্বিত মনে করছি। সমাজের নেতৃস্থানীয় জায়গাগুলোতে মেয়েদের অংশগ্রহণের জন্য কাজ করার অঙ্গীকার করছি। ভালো করে পড়াশোনা করে দেশের সেবা করা এমন কিছু কাজের সাথে যুক্ত হতে চাই। আমি কোনো দিন ভাবতেও পারিনি এত বড় সরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার চেয়ারে বসব। আমি বড় হয়ে এই ম্যাডামের মতো নারী সমাজসহ দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করে যাব। আমি অবহেলিত সুবিধাবঞ্চিত শব্দকর সম্প্রদায়ের মেয়ে। শব্দকর সম্প্রদায়ের মেয়ে হয়ে আজকে যে সম্মান পেয়েছি তা আমাকে অনুপ্রেরণা জোগাবে।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোছা: হোসনে আরা তালুকদার জানান, একসময় শিশুরাই সমাজ ও দেশের বিভিন্ন বড় জায়গায় আসবে, সমাজকে নেতৃত্ব দেবে। এই ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে কিশোরী, কন্যা শিশু অথবা যুব নারীদের নেতৃত্ব প্রদানকারীর ভূমিকা পালন করতে আত্মবিশ্বাসী এবং উৎসাহিত করবে। তিনি এই ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। তাই শিশুদের ছোট থেকেই দেশের জন্য প্রস্তুত করা সকলের দায়িত্ব। শব্দকর সম্প্রদায় ও তাদের সন্তানরা যাতে সরকারি সব সুযোগ সুবিধাভোগ করতে পারে সেজন্য কাজ করে যাচ্ছেন সবাই।
ন্যাশনাল চিলড্রেন’স টাস্কফোর্স (এনসিটিএফ) কন্যা শিশুরা সমান অধিকার এবং পর্যাপ্ত সুযোগ পেলে বদলে দিতে পারে তাদের জীবন, সমাজের মানুষদের-এমন বিশ্বাস থেকেই ‘গার্লস টেকওভার’ কর্মসূচির উদ্যোগ গ্রহণ করে। এই কর্মসূচির প্রধান উদ্দেশ্য সমাজে মেয়েদের উচ্চপদস্থ বিভিন্ন পদের দায়িত্ব প্রদানের মাধ্যমে তাদের অবস্থান, নেতৃত্ব, সিদ্ধান্ত ও সাফল্য তুলে ধরার আত্মবিশ্বাস তৈরী করা।#
Leave a Reply