বড়লেখা প্রতিনিধি
বড়লেখায় পৌরশহরের জামিয়া মাদানীয়া মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের ২ ছাত্র নিখোঁজ হয়েছে। শুক্রবার (১০ নভেম্বর) রাত সাড়ে দশটা থেকে তারা নিখোঁজ হয়। তাদের কোন সন্ধান না পাওয়ায় স্বজনদের মধ্যে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এই ঘটনায় দুই ছাত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে শনিবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে বড়লেখা থানায় পৃথকভাবে জিডি করা হয়েছে।
নিখোঁজ দুই মাদ্রাসার ছাত্র হল উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের সফরপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী ছাদ উদ্দিনের ছেলে তারেক আহমদ রাফি (১৫) এবং বড়লেখা পৌরসভার দক্ষিণ বারইগ্রামের দুবাই প্রবাসী বদরুল ইসলামের ছেলে সাইদুল ইসলাম (১৪)।
জানা গেছে, শুক্রবার (১০ নভেম্বর) রাতে বড়লেখা পিসি মডেল স্কুল মাঠে আস সুন্নাহ মানবকল্যাণ ফাউন্ডেশন আয়োজিত নাশিদ ও কেরাত প্রতিযোগিতায় বড়লেখা পৌরশহরের জামিয়া মাদানীয়া মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের ছাত্ররা অংশ নেয়। এতে রাফি এবং সাইদুল ছিল। ওইদিন রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে রাফি ও সাইদুল অনুষ্ঠান (নাশিদ ও কেরাত প্রতিযোগিতা) থেকে নিখোঁজ হয়। এরপর থেকে তাদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তারা মাদ্রাসায় না ফেরায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ওইদিন রাত ১২টার দিকে বিষয়টি তাদের স্বজনদের জানায়। এরপর থেকে রাফি এবং সাইদুলের পরিবার সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ করেও তাদের সন্ধান পাচ্ছে না।
রাফির মামা ব্যবসায়ী জাবেদ আহমদ শনিবার বিকেলে জানান, রাফি আমার চাচাতো বোনের ছেলে। সে বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে। ও খুব শান্ত প্রকৃতির। লেখাপড়াতেও ভালো। রাত ১২টার দিকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ফোন দিয়ে জানায় রাফি ও তার সহপাঠী সাইদুলকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের সাথে ফোনও নেই। এরপর থেকে আমরা সব জায়গায় খুঁজেছি। কিন্তু তাদের কোনো হদিস মিলছে না। এবিষয়ে আমরা থানায় জিডি করেছি। রাফির সহপাঠী সাইদুলের পরিবারও থানায় জিডি করেছে।
জামিয়া মাদানীয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি রুহুল আমিন জানান, আমরা মাদ্রাসার সব ছাত্রকে স্নেহ করি। তাদেরকে পড়ার জন্য কোনধরনের চাপ দেওয়া হয়না। শুক্রবার (গতকাল) রাতে বড়লেখা পিসি স্কুল মাঠে কেরাত ও নাশিদ প্রতিযাগিতায় হিফজ শাখার সকল ছাত্ররা অংশ নেয়। এতে রাফি এবং সাইদুলও ছিল। একটি সিসি ক্যামেরায় রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তাদের দেখা গেছে। এরপর তাদের মিলছে না। মাদ্রাসায়ও ফেরেনি। রাতেই বিষয়টি আমরা তাদের স্বজনদের জানিয়েছি। ধারণা করছি তারা দুজন সমবয়সী, হয়তো না জানিয়ে কোথাও বেড়াতে গেছে। আর আমাদের মাদ্রাসার সুনাম আছে। এজন্য কিছু শত্রুও আছে। হয়তো এরা আমাদের বেকায়দায় ফেলতে তাদের কোথাও নিয়ে রেখেছে।
বড়লেখা থানার ওসি মো. ইয়ারদৌস হাসান জানান, একই মাদ্রাসার দুই ছাত্র নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় পৃথক জিডি করা হয়েছে। আমরা তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছি।
Leave a Reply