রতি কান্ত রায়, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :: দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বেশিরভাগ মানুষের জীবন-জীবিকা কৃষি নির্ভর।
এ অঞ্চলের কৃষকরা জমিতে বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করেন। তবে আমন ও ইরি-বোরো মৌসুমে বছরে দুবার প্রধান ফসল হিসেবে জমিতে ধান আবাদ করতে দেখা যায়। জমিতে চাষাবাদ করতে প্রকৃতির সাথে চলে এ অঞ্চলের কৃষকের অবিরাম লড়াই।
এবারের বোরো মৌসুমেও তার ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে না। মাঘের শুরু, এখন জমিতে বোরোধানের চারা রোপণের সময়। কিন্তু বাধ সেধেছে প্রকৃতি।
গত কয়েকদিন ধরে দিনের বেশিরভাগ সময় দেখা মিলছে না সূর্যের। ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় জবুথবু অবস্থা। তবুও থেমে নেই এ অঞ্চলের কৃষকরা। শীতকে উপেক্ষা করে শুরু করেছেন জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াশা আর কনকনে ঠাণ্ডাকে উপেক্ষা করে জমিতে বোরোধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক।
কেউ বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প চালু করে জমিতে সেচ দিচ্ছেন। কেউ আবার পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করে নিচ্ছেন। অনেকে কনকনে ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে জমির কাদাপানিতে নেমে মই টানছেন। কৃষি শ্রমিকরা কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে বীজতলা থেকে চারা তুলে বিকাল পর্যন্ত জমিতে ধানের চারা রোপণ করেছেন। সব মিলিয়ে শীতকে উপেক্ষা করে বোরোধান
চাষাবাদ করতে ফসলের মাঠে শুরু হয়েছে কৃষকদের কর্মযজ্ঞ। উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি গ্রামের কৃষক হাকিম, শফিক ও মোজাম্মেল হক জানান, জমিতে আগাম চারা রোপণ করলে ফলন ভালো হয়।
তাই শীতকে উপেক্ষা করে জমিতে চারা রোপণ করছেন। তবে শীতের তীব্রতার কারণে পর্যাপ্ত কৃষি শ্রমিক না থাকায় তারা এখন পর্যন্ত পুরোপুরি চারা রোপণ কাজ শেষ করতে পারেন নাই।
বড়ভিটা ইউনিয়নের ঘোগারকুটি কৃষক সফিয়ার রহমান রব্বানী বলেন, ‘আমি এবারে সাত একর জমিতে ধান চাষাবাদের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। বীজতলায় চারার বয়স ৪০ দিন পাড় হয়েছে। কনকনে ঠান্ডার মধ্যে জমিতে চারা রোপণের কাজ শুরু করেছি। শীতের ভয়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে তো আর চলবে না।
একই এলাকার কৃষক শাহজাহান আলী বলেন, ‘শীতের মৌসুম, শীত তো থাকবেই। প্রতিবছরই পৌষের শেষ হতে মাঘের মাঝামাঝি সময়ে জমিতে বোরোধানের চারা রোপণ করি।
এই সময়ে জমিতে চারা রোপণ করলে ফলন ভালো পাওয়া যায়। তাই এবারেও জমিতে চারা রোপণ শুরু করছি। আশা করি এবারেও ভালো ফলন পাব।
উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১০হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে বোরোধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কনকনে ঠাণ্ডাকে উপেক্ষা করে কৃষকরা জমিতে চারা রোপণের কাজ শুরু করেছেন।#
Leave a Reply