সালাউদ্দিন:- মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের ভবানিপুর গ্রামের উদ্যমী তরুণ আলভী টিটু।চাকরির পেছনে না ঘুরে বেছে নিয়েছেন ফ্রিল্যান্সিং । ফ্রিল্যান্সিংয়ে তিনি এখন সফল । কৃতিত্বের সাথে এ পেশায় এখন নিয়মিত আয় করতে পারছেন। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে নিয়মিত বায়ার খোঁজেন অনলাইনে। গ্রামের শিক্ষিত যুবকরা ফ্রিলান্সিং পেশায় নেই বললেই চলে। কিন্তু গ্রাম থেকে ফ্রিল্যান্সিংয়ে জড়িত হওয়ার পেছনে রয়েছে এ যুবকের ইচ্ছাশক্তি আর প্রবল আগ্রহ।
আলভী টিটু কুলাউড়া সরকারি কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।ছোটবেলা থেকেই কম্পিউটারের প্রতি ঝুঁক ছিল টিটুর । পড়াশোনার পাশাপাশি পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন এ যুবক। কিন্তু বর্তমান সময়ে চাকরির বাজার খারাপ হওয়ায় ফ্রিল্যান্সিং এর দিকে ঝুঁকে পড়েন তিনি।
গেল বছরে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিং। শুরুর দিকে প্রতিযোগিতামূলক অনলাইন এ বাজারে ধৈর্য নিয়ে কাজ করতে থাকেন।বায়ার সংগ্রহ করতে হলে ইংরেজিতে দক্ষতা থাকতে হবে বলে জানান তরুণ এ ফ্রিল্যান্সার।
গেল বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে তিন মাস ব্যাপী প্রশিক্ষণ নিয়ে শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিং। ফ্রিল্যান্সিং করে প্রতিমাসে ডলার বৃদ্ধি পেতে থাকে। গত সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশি মুদ্রায় আয় করেন ৮০ হাজার টাকা। অক্টোবর এবং নভেম্বরে আয় করেন প্রায় দেড় লাখ টাকা।বর্তমানে প্রতি মাসে প্রায়ই এরকম আয় করছেন টিটু।
আলভী টিটু জানান,ফ্রিল্যান্সিংয়ে নিজেকে তৈরি করে নিতে হবে। কারণ, এখানে সবসময় সারা বিশ্বের দক্ষ লোকজনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হয় এবং ধৈর্য নিয়ে কাজ করতে হয় ।
গ্রামের শিক্ষিত তরুণরা এ পেশায় যেতে চাইলেও স্থানীয় পর্যায়ে ইন্টারনেট এবং ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের সুবিধা কম থাকায় তারা বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন । কিন্তু যারা প্রবল আগ্রহ নিয়ে শহরে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তারা বেশিরভাগই সফলতার সাথে ফ্রিল্যান্সিং করে যাচ্ছেন।
ভাটেরা স্কুল এন্ড কলেজের আইসিটি বিষয়ের প্রভাষক, মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ কাশেম জানান,টিটু আগ্রহ নিয়ে ফ্রিল্যান্সিংয়ে আসায় সফল হতে পেরেছেন। এভাবে গ্রামের শিক্ষিত তরুণরা এগিয়ে আসলে চাকরির পেছনে ছুটতে হবে না।
কিন্তু গ্রাম পর্যায়ে বিদ্যুৎ ,ইন্টারনেট এবং ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের সহজলভ্যতা না থাকার কারণে গ্রামের শিক্ষিত তরুণরা ফ্রিল্যান্সিংয়ে পিছিয়ে রয়েছেন বলে মনে করেন তিনি।
উপজেলার স্থানীয় পর্যায়ের আইসিটি প্রতিষ্ঠান অ্যাবাকাস আইসিটি সেন্টারের পরিচালক কল্লোল দাস জানান, অনেক শিক্ষিত তরুণের প্রতিভা রয়েছে কিন্তু তারা সেটা বিকাশ করার সুযোগ পাচ্ছে না।ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য জ্ঞান দক্ষতা এবং সুযোগ সুবিধা থাকার প্রয়োজন রয়েছে কিন্তু সেটা গ্রামপর্যায়ে নেই।
গ্রামের শিক্ষিত তরুণদের কাজে লাগাতে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কোন বিকল্প নেই। গ্রাম পর্যায়ের উপজেলা শহরে ট্রেনিং ইনস্টিটিউট সহ সুযোগ-সুবিধা থাকলে শিক্ষিত তরুণদের কাজে লাগানো যাবে বলে মনে করেন তিনি।
Leave a Reply