কমলগঞ্জ প্রতিনিধি ::
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে জ্যোৎস্নার আকাশে দল বেঁধে তরুন তরুণীরা উন্মুক্ত একটি মাঠে গোল আকারে একটি মঞ্চ তৈরি করে আপন মহিমায় ভালোবাসার রং তুলিতে জীবন সঙ্গীকে পাওয়ার ব্যাকুলতা নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত চলে এমন ভাব বিনিময়। চলে গানের তালে তালে নাচ। উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের নয়াপত্তন গ্রামের কাংশাং (বিনোদন মন্ডপ) পাশে গত বুধবার (৩১) মার্চ রাতে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। মণিপুরী ভাষায় ‘থাবল চোংবা’ উৎসব বলা হয়।
মঞ্চের মাঝখানের গোল বৃত্তে বসা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দুই শিল্পী মাঙাল লৈমা ও সম্বু রতন ‘থাবল চোংবা’ অনুষ্ঠানের সংগীত পরিবেশন করেন।
মণিপুরী ভাষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট সমাজসেবক ইবুংহাল সিংহ শ্যামল বলেন, ‘আমাদের নয়াপত্তন গ্রামে উন্মুক্ত মাঠে মঞ্চ করে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও আয়োজন করা হয়েছে ‘থাবল চোংবা’ অনুষ্ঠান। বৃত্তাকার মঞ্চে প্রথমে নৃত্য করে এ গ্রামের অবিবাহিত যুবতীরা। এরপর নৃত্য করতে প্রবেশ করে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মণিপুরী যুবকরা। পূর্ণিমার চাঁদের সঙ্গে মিল রেখে ‘থাবল চোংবা’ নামের মিলন মেলায় প্রায় ৩ শতাধিক যুবক-যুবতি একসঙ্গে নৃত্য করে।’
এ বিষয়ে মণিপুরী সম্প্রদায়ের ধর্মীয় গুরুরা জানান, তরুণ-তরুণীরা তাদের জীবন সঙ্গীকে খোঁজার জন্যই মূলত ‘থাবল চোংবা’ অনুষ্ঠানের আয়োজন যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। নিজ এলাকায় আয়োজনস্থলে অভিভাবকরা তাদের যুবতী কন্যাকে নিয়ে যান। অন্যদিকে নিজ এলাকা ব্যতিত বিভিন্ন স্থান থেকে যুবকরা আসে পছন্দের জীবনসঙ্গীকে বেঁছে নিতে। একে অপরের হাত ধরে নৃত্যের ফাঁকে মধ্য রাত পর্যন্ত চলে কথোপকথন ও ভাব বিনিময়। মধুর প্রেম ভালোবাসাকে চিরন্তন করতে এবং ঈশ্বরের সন্তুষ্টি লাভের জন্য প্রতি বছর এ আয়োজন করা হয়।#
Leave a Reply