বড়লেখায় একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলেন বেগম শামসুন্নাহার – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:১১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বড়লেখা ফুটবল একাডেমীর সভাপতি আব্দুর রহমান সম্পাদক বেলাল আহমদ বড়লেখায় সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ চার পরিবারে নিসচা’র ছাগল বিতরণ কমলগঞ্জে রংমিস্ত্রি যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু: পরিবারের দাবী পরিকল্পিত হত্যা বড়লেখায় নাগরিক সমন্বয় প্রকল্পের পাবলিক টাউন হল সভা প্রচেষ্টা নাগরিক সমন্বয় প্রকল্প তৈরী করল এক ভিন্ন সেতু বন্ধন কুলাউড়ায় খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় কোরআন খতম ও গণদোয়া মাহফিল  ইউটিউব দেখে আত্রাইয়ে মাশরুম চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছে “শাহাজাদী” কুড়িগ্রামে ছাত্রাবাস থেকে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার রাজস্ব তহবিলের অর্থ আত্মসাত- বড়লেখা উপজেলা পরিষদের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক বরখাস্ত, বিভাগীয় মামলা বড়লেখায় নবপল্লব প্রকল্পের ‘প্রকল্প অবহিতকরণ’ সভা

বড়লেখায় একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলেন বেগম শামসুন্নাহার

  • রবিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০২২

Manual7 Ad Code

মুক্তিযোদ্ধাদের খাদ্য ও আশ্রয় দিয়ে সহায়তা প্রদান

Manual4 Ad Code

আব্দুর রব, বড়লেখা :

Manual3 Ad Code

বড়লেখার একমাত্র নারী বীর মুক্তিযোদ্ধা বেগম শামসুন্নাহার। সম্মুখযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ না করলেও সরকার একাত্তরে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের খাদ্য, আশ্রয় ও আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবাযতœকারীদের ‘সহযোগী মুক্তিযোদ্ধার’ স্বীকৃতি প্রদান করায় বেগম শামসুন্নাহার বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলেন। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন তালিকার ১০৪ নাম্বারে তার নাম প্রকাশ করেছে। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী শেখ হাসিনা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপি ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহা-পরিচালক জহুরুল ইসলাম রোহেলের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

Manual2 Ad Code

বীর মুক্তিযোদ্ধা বেগম শামসুন্নাহার ১৯৫৫ সালে উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের টেকাহালি গ্রামে এক রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বড়ভাই সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বড়লেখা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। স্বামী মোজতবা উদ্দিন উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। এক কন্যা সন্তানের জননী বেগম শামসুন্নাহার ২০১৪ সালে সমাজসেবা অধিদপ্তরের চাকরি থেকে অবসরগ্রহণ করেন। এরপর থেকে উপজেলা চত্ত্বর সংলগ্ন নিজস্ব বাসায় বসবাস করছেন। অবসর সময় কাটান বইপত্র পড়ে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বইগুলোই তার বেশি প্রিয়।

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সিরাজুল ইসলাম মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় তিনি ও তার পরিবার পাক হানাদার বাহিনী ও রাজাকারদের টার্গেটে পরিণত হন। যার ফলে যুদ্ধ শুরুর সাথেই সিরাজুল ইসলাম তার মা তসলিমা খাতুন, বোন শামসুন্নাহার ও শামীমা আক্তার রাবেয়াকে ভারতে পাঠিয়ে দেন। সেখানে নিলাম বাজার ক্যাম্পে যুদ্ধকালীন ৯ মাস তারা অবস্থান করেন। এই ক্যাম্পে অন্তত ২৫-৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। এছাড়া ট্রেনিং শেষে এই ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধারা জড়ো হতেন এবং এখান থেকেই তাদের বিভিন্ন সেক্টরে যুদ্ধের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হতো। আহত মুক্তিযোদ্ধারা এই ক্যাম্পে আশ্রয় নিতেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও রান্না বান্না করে খাওয়ার ব্যবস্থা করতেন শামসুন্নাহারও তার মা। তাদের সাথে আনোয়ারা বেগম নামে এক চা বাগান শ্রমিকও ছিলেন।

একান্ত আলাপে বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুন্নাহার ‘৭১ এর যুদ্ধকালীন দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘৭১ সালে ভারতের নিলাম বাজার ক্যাম্পে আমরা দীর্ঘ নয় মাস ছিলাম। সেই সময়কার দিনগুলি মনে হলে এখনো গা শিহরে ওঠে। আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চেহারা চোঁখে ভেসে ওঠে। আমি আমার মা এবং ছোট বোন সেই ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছিলাম। আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রান্না করতাম। আমাদের ক্যাম্প থেকে দেশের বিভিন্ন সেক্টরে তারা যুদ্ধে চলে যেতেন। তাদের সাথে শুকনো খাবার তৈরি করে দিতাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘ক্যাম্পে পর্যাপ্ত খাবার ছিল না। চুলো ধরানোর কাঠ ছিলো না। বাগানের শ্রমিকেরা আমাদের লাকড়ির ব্যবস্থা করে দিতেন। একটি ডিম মামলেট করে পাঁচ টুকরো করে পাঁচ জনকে দিতাম। ডাল ভাত ছিল নিত্যদিনের খাবার। তবে মাঝে মাঝে উপজাতিরা আমাদের ক্যাম্পে মাংস দিয়ে যেতেন। সেই মাংস ছোট ছোট করে মুক্তিযোদ্ধাদের খেতে দিতাম। অনেকের পাতে মাংস পড়ত না।’

যুদ্ধের দিনের এমন অসংখ্য স্মৃতি স্মরণ করে শামসুন্নাহার বলেন, ‘সরাসরি সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার সৌভাগ্য হয়নি। তবে মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাম্পে ফিরে যুদ্ধের গল্প বলতেন। আমরা সেই গল্প শুনতাম। ভালো খবর হলে আনন্দে বুক ভরে উঠতো, খারাপ খবরে দুঃখ পেতাম। আমাদের বিশ্বাস ছিল আমরা বিজয়ী হব। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা জয়লাভ করেছি। স্বাধীন সার্বভৌম দেশে শান্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছি, এতেই ভালো লাগছে।’

স্বাধীনতা লাভে সুবর্ণজয়ন্তীতে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি প্রাপ্তির অনুভুতি প্রকাশ করতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন এই নারী মুক্তিযোদ্ধা শামসুন্নাহার। তিনি বলেন ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধকালীন সময়ে যারা মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্নভাকে সহায়তা করেছেন তাদের সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ নিলে আমি সেই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হই। আমাকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ায় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা জানাই। দেশের জন্য কিছু করতে পেরেছি ভেবে ভালো লাগছে। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে রাষ্ট্র আমাকে স্বীকৃতি দিয়েছে, এটা জীবনের শ্রেষ্ট উপহার।

Manual6 Ad Code

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ উদ্দিন জানান, ‘সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলামের ছোট বোন শামসুন্নাহার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাওয়ায় আমি অত্যন্ত খুশি। ভারতের নিলামবাজার ক্যাম্পে শামসুন্নাহার, তার ও ছোট বোন রান্না করে মুক্তিযোদ্ধাদের খাওয়াতেন এবং আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা যতœ করতেন। তাকে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি প্রদান সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত। এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।#

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন

Deprecated: Function WP_Query was called with an argument that is deprecated since version 3.1.0! caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!