এইবেলা, কুলাউড়া ::
হাকালুকি হাওরে চলতি বছর পাখির সংখ্যা কমেছে বলে জানিয়েছেন হাওরে পাখি শুমারি করতে আসা বার্ড ক্লাবের সদস্যরা। গত ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি হাকালুকি হাওরে অনুষ্ঠিত দু’দিনের পাখিশুমারি।
শুমারিতে অংশ নিতে আসা বার্ডক্লাবের সদস্যরা এবার পাখির সঠিক কোন পরিসংখ্যান দেননি। বিগত দিনে শুমারি শেষে মোবাইল ক্ষুদে বার্তায় পাখির পরিসংখ্যান দিলেও এবার তারা কোন তথ্য দিতে রাজি হননি।
সর্বশেষ ২০২১ সালে শুমারি অনুযায়ি হাকালুকি হাওরে ৪৫ প্রজাতির মোট ২৪ হাজার ৫৫১টি জলচর পাখি দেখা গেছে।
পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হকের নেতৃত্বে প্রতিবারের মত এবারও পাখি শুমারি পরিচালনা করা হয়। শুমারিতে অংশ নেন বার্ড ক্লাবের সদস্য অণু তারেক, শফিকুর রহমান, আইইউসিএন ও বার্ড ক্লাবের সদস্য জেনিফার আজমেরি, সাকিব আহমেদ। বনবিভাগের সুফল প্রকল্পের অর্থায়নে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ প্রতিষ্ঠান (আইইউসিএন) এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন (পিওজেএফ) যৌথ উদ্যোগে এবারের শুমারির আয়োজন করা হয়। সহযোগিতায় ছিল বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব (বিবিসি)।
১৬ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে ৬ সদস্যের দুটি দল দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে হাওরের ছোট-বড় ৪৫টি বিলে শুমারি কাজ শুরু করেন। ১৭ ফেব্রুয়ারিও সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত শুমারির কাজ চালানো হয়।
পাখি বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হক বলেন, শুমারির কাজ শেষ করেছি। শুমারি শেষে পাখির তথ্য আমরা আইইউসিএন এর কাছে জমা দিয়েছি। পাখির তথ্যর বিষয়ে জানতে হলে আইইউসিএন ও বনবিভাগের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
শুমারিকালে হাওরের ৪৫টি বিলে বিগত বছরের চেয়েও অনেক কম পাখি দেখা গেছে বলে জানান ইনাম আল হক। তিনি বলেন, চকিয়া বিলে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৬০০টি শামুকখোল পাখির দেখা মিলেছে। এর আগে সর্বোচ্চ তিন হাজার শামুকখোল পাখি এই বিলে দেখা গিয়েছিল।
শুমারির প্রথমদিনে হাকালুকির তেকোনা, হাওরখাল, মেদা, বায়া, গজুয়া, আরামডিঙ্গা, কালাপানি, রঞ্চি, গোয়ালজুর, মালাম, ফুয়ালা, পলোভাঙ্গা, হাওরখাল, কৈয়েরকোনা, মইয়াজুরি, জল্লা, কুকুরডোবা, বালিজুরি, বালিকুরি, মাইসলা, গরসিকোনা, চউলা, পদ্যা, কাটুয়া, দুধাই বিলে। দ্বিতীয় দিন ১৭ ফেব্রুয়ারি হাকালুকির গৌড়কুড়ি, চকিয়া, উজানতরুল, ফুট, হাওয়াবন্যা, হিঙ্গাইজুর, নাগোয়া, লোরিবাই, তল্লার, কাংলি, কুরি, চেনাউরা, পিংলা, পড়তি, আগদার, চাতলা, নামাতরুল, নাগোয়া, ধলিয়া, মাইসলার-ডাক, দিঘর, চান্দারসহ হাওরের ৪৫ টি বিলে পাখিশুমারি চলে।
পাখির সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক বলেন, হাওরের অনেক বিলে এখন পানি অনেকটা কমে গেছে, তাই পাখির সংখ্যাও কমেছে। কারণ পলি মাটি জমে হাওরের জমি প্রতিনিয়ত উচুঁ হচ্ছে। তাছাড়া এবার শুমারি করতে কিছুটা দেরি হয়েছে। দেরিতে শুমারি হওয়ায় পাখির সংখ্যা কমারও একটি কারণ।
তিনি আরও বলেন, শীত মৌসুমে দুর্বৃত্তরা হাওরে বিষটোপ দিয়ে পাখি নিধন করতো। বিষটোপের কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে তিন-চার গুণ বেশি পাখি মারা যায়। পাখিরা তাদের জীবন বিপন্ন মনে করলে আর ওই হাওরে ভিড় করে না। পাখি শিকারিদের অবাধ নিধনযজ্ঞে হাওরে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি হুমকির মুখে আছে। পাখির সংখ্যা বাড়াতে হলে বিষটোপে শিকার বন্ধ করতে হবে এবং নিরাপদ অভয়াশ্রম করে তা সংরক্ষণ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।#
caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6085caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6085
Leave a Reply