বড়লেখা প্রতিনিধি :
শখের বসে ২০১২ সালে দুইজোড়া কবুতর কিনে বাড়িতে আনেন মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী মো. শাহরিয়ার ফাহিম। পড়ালেখার পাশাপাশি চালিয়ে যান সেগুলোর লালন পালন। সেই কবুতরই তাকে বাণিজ্যিকভাবে কুবতর পালনে উদ্বুদ্ধ করে। কবুতর পালন করে ফাহিম আজ স্বাবলম্বি। মাসে আয় করছেন ৬০-৭০ হাজার টাকা। তার খামারে রয়েছে ২০ জাতের কবুতর ও ৮ জাতের ৭০০ পাখি। ২০২০ ও ২০২১ সালের সিলেট বিভাগীয় পর্যায়ে ১৫০ কিলোমিটার কবুতর রেসে দিনি পেয়েছেন পুরস্কার।
ফাহিম বড়লেখা পৌরসভার পাখিয়ালার মৃত মো. আব্দুল মতিনের বড় ছেলে। বড়লেখা সরকারি কলেজ থেকে তিনি স্নাতক সম্পন্ন করেছেন।
সরেজমিনে ফাহিমের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, দ্বিতল বাড়ির ছাদের দুইপাশে টিনের ছাউনির ঘর। ঘরের চারপাশ কাঠ ও তারের নেটে ঘেরা। খামারের ভেতর বিভিন্ন প্রজাতির কবুতরের পাশাপাশি পাখিও রয়েছে। পোষা পাখির কলেরবে সবসময় বাড়িটি মুখরিত থাকে। ফাহিম পাখিগুলোকে খাবার দিচ্ছিলেন। যত্ন নিচ্ছিলেন। ফাহিম জানান, তার খামারে বর্তমানে ২০ জাতের কবুতর ও বিভিন্ন প্রজাতির ৮ জাতের ৭০০ পাখি রয়েছে। এর মধ্যে ফেনসি, রেসার, গিরিবাজ কবুতরের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। অন্য পাখিগুলোর মধ্যে বাজরিগর, ককাটিয়েল, অস্ট্রেলিয়ান ঘুঘু পাখির চাহিদাও আছে। তার খামারে ১৫০০ থেকে ৩০ হাজার টাকা দামের কবুতর রয়েছে। এরমধ্যে রেসার কবুতর সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। ২০২০ ও ২০২১ সালের সিলেট বিভাগীয় ১৫০ কিলোমিটার কবুতর রেস প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করে পুরস্কার জিতেছেন।
ফাহিম আরো জানান, অনেক পরিশ্রম করে তিনি কবুতর খামারটি গড়েছেন। প্রথমে পরিবারের কেউ চাইত না যে কবুতর পালন করি। কিন্তু এখন কেউ আর বাধা দেননা। এখন আমাকে দেখেই অনেকেই কবুতর ও পাখি পালনে আগ্রহী হচ্ছেন। তাদের অনেকেই আমার কাছ থেকে পাখি ও পরামর্শ নিচ্ছেন। পরিশ্রম করলে যে কেউ সফলতা অর্জন করতে পারবেন। আমাদের সমাজের অনেকে রয়েছেন যারা সবসময় চাকরির পেছনে ছুটছেন। তাদের উচিত চাকরির পেছনে না ছুটে ভালো কোনো কাজে লেগে যাওয়া। তাহলে সফলতা আসবেই।
পাথারিয়া গাংকুল মনসুরিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার প্রভাষক সঞ্জীব সরকার জানান, ফাহিমের খামার দেখে এক বছর ধরে আমি বাড়ির ছাদে কবুতর পালন শুরু করেছি। বর্তমানে আমার খামারে ৩০-৩৫ জোড়া দেশি ও ফেন্সি কবুতর আছে। আমি ফাহিমের দোকান থেকে পাখির খাদ্য ক্রয় করি।
লাইসিয়াম স্কুলের শিক্ষার্থী আফসার হোসেন বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি আমি দীর্ঘদিন ধরে কবুতর পালন করছি। কবুতরের বিষয়ে আমাদের ধারণা কম ছিল। কীভাবে এগুলো পালন করতে হবে। অসুস্থ হলে কীভাবে চিকিৎসা করাতে হবে। এসব পরমার্শ ফাহিম ভাইয়ের কাছ থেকে পেয়েছি। এখনও পাচ্ছি। উনার দোকান থেকে কবুতরের খাদ্য কিনি।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ তাজ উদ্দিন বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি কবুতর পালন করে ফাহিম সাবলম্বী হয়েছেন। ফাহিমের মতো এখনকার তরুণরা যদি লেখাপড়ার পাশাপাশি এভাবে গবাদিপশু-পাখি পালন শুরু করেন তাহলে দেশে বেকারত্ব ও অপরাধ কমবে। দেশে এগিয়ে যাবে।
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply