বড়লেখার দুর্গত এলাকায় পানিবাহিত রোগের প্রাদূর্ভাব বড়লেখার দুর্গত এলাকায় পানিবাহিত রোগের প্রাদূর্ভাব – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৬ অপরাহ্ন

বড়লেখার দুর্গত এলাকায় পানিবাহিত রোগের প্রাদূর্ভাব

  • সোমবার, ২৭ জুন, ২০২২

বড়লেখা প্রতিনিধি:

হাকালুকি হাওরপারের বড়লেখা উপজেলার পশ্চিম গগড়া গ্রামের গৃহবধু অপর্ণা রানী দাসের বাড়ির আঙিনা ও রান্নাঘর ১০ দিন ধরে বন্যার পানিতে অর্ধনিমজ্জিত। নোংরা পানি মাড়িয়ে তিনি বাড়ির কাজকর্ম করেছেন। এখন তার পায়ের আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে ঘা হতে শুরু করেছে।

একই গ্রামের ভ্যান চালক অনন্ত দাসের ঘরে ও বাড়ির আশপাশে বন্যার পানি উঠেছে। বন্যার পানি মাড়িয়ে তিনিও চলাচল করছেন। তার পায়ে গুটি বসন্তের মত রোগ হয়েছে। এই দাগ কীভাবে হল তার কারণ জানতে চাইলে অনন্ত বলেন, বন্যার পানিতে সবকিছু ডুবে গেছে। পানিতে পঁচা দুর্গন্ধ। এখন পানি মাড়িয়ে চলতে হয়। গায়ে পানি লাগলে মারাত্মক চুলকায়। আর বসন্তের মতও দাগ হয়েছে। সরকারিভাবে কোন ওষুধ পেয়েছেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনও পাননি।

এমন চিত্র শুধু গৃহবধু অর্পণা রানী বা অনন্ত দাস নয়, তাদের মত মৌলভীবাজারের বড়লেখার বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকার প্রায় প্রত্যেক বানভাসি এখন পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে এলাকার মানুষ কোন চিকিৎসা সেবা না পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেডিকেল টিম বন্যাদুর্গত এলাকায় কাজ করছে। দেয়া হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। এদিকে গত ৩দিন ভারি বৃষ্টিপাত না হলেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।

জানা গেছে, ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে হাকালুকি হাওরে আকস্মিকভাবে বন্যা দেখা দেয়। এতে বড়লেখা উপজেলার ২০০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ঘরে টিকতে না পেরে অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে গেছেন। এতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন এসব এলাকার মানুষ। বন্যার পানিতে এসব এলাকায় নলকূপ পানিতে তলিয়ে রয়েছে। এতে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বিশুদ্ধ পানি না পেয়ে বাধ্য হয়ে বন্যার পানিতে গোসল করছেন এমনকি পানও করছেন। ফলে পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা ও কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বন্যার পর থেকে তাদের কারও জ্বর উঠেছে, কারও পায়ের আঙুলের ফাঁকে ঘা হয়েছে। কারও আবার পায়ে গুটি বসন্তের মত রোগ হয়েছে।

তালিমপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি মেম্বার গগড়া গ্রামের বাসিন্দা সুজিত দাস বলেন, বন্যায় তাদের এলাকা তলিয়ে গেছে। প্রত্যেকের মত তাদের ঘরেও পানি উঠেছে। তারা পানি মাড়িয়ে চলাচল করছেন। পানি পায়ে লেগে তার পায়ে বসন্তের মত দাগ হয়েছে। তাতে চুলকায়। তিনি বলেন, শুধু যে আমার এই রোগ হয়েছে তা নয়, এলাকার অনেকে আছেন তাদের কারও পা ঘা হচ্ছে। কারও শরীরের বসন্তের মতো দাগ হচ্ছে। কেউ কেউ ডায়রিয়াও রোগে ভুগছেন।

উপজেলা উপসহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মঈন উদ্দিন জানান, এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া আশ্রয় কেন্দ্রেসহ দুর্গত এলাকায় ১৫টি নলকূপের প্লাটফর্ম উচু করেছেন। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে ২০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মওজুদ রয়েছে। যেখানে দরকার সেখানেই তারা বিতরণ করছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রত্নদীপ বিশ্বাস বলেন, বন্যাদুর্গত এলাকায় আমাদের মেডিকেল টিম কাজ করছে। পানিবাহিত রোগের ওষুধের জন্য বরাদ্দ চেয়েছি। বরাদ্দ আসলেই তা আক্রান্তদের মাঝে বিতরণ করবেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews