রতি রায়, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ::
দেশের শীর্ঘস্থানীয় প্রতিষ্ঠান বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে কুড়িগ্রামে বসেছিল গরীবের সুপার সপ। মঙ্গলবার সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চর সুভারকুঠি গ্রামে করা হয় ভিন্নধর্মী এ বাজারের আয়োজন। এ বাজার থেকে নাম মাত্র মূল্যে চাল, ডাল, তেল, আটা, লবন, ডিমসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পেরে খুশি দরিদ্র মানুষজন। বাজারের উদ্বোধনী দিনে প্রায় ২শ৫০টি পরিবার এ সুবিধা পেয়েছে। এ বাজার থেকে এক টাকায় এক কেজি চাল, দুই টাকায় এক কেজি ডাল, তিন টাকায় এক লিটার তেল, এক টাকায় দুই কেজি আলু, চার টাকায় একটি ব্রয়লার মুরগী, সাত টাকায় কম্বলসহ দুটি জামা কেনার সুবিধা পেয়েছে দরিদ্র পরিবারগুলো। এই মূল্যে সর্বোচ্চ ১০ টাকার পণ্য কেনার সুযোগ পেয়েছে প্রতিটি পরিবার। যার বাজার মূল্য ৬শ থেকে ৭শ টাকা।
বিদ্যানন্দ প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্টরা জানান, মূলত দরিদ্র মানুষকে পণ্য বাছাই করার স্বাধীনতা দেয়ার জন্যই এই বাজারের আয়োজন। একই এলাকায় প্রতিমাসে একদিন করে বাজার বসবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বিদ্যানন্দের মানবিক ও ভিন্নধর্মী এ আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ। এসময় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড মেম্বার জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেদুল হাসান।
একই দিনে স্থানে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের নিজস্ব জমিতে নবনির্মিত হযরত আয়েশা (রাঃ) এতিমখানার শিক্ষা কার্যক্রমেরও উদ্বোধন করা হয়। এখানে তিনতলা বিশিষ্ট ভবনে প্রায় শতাধিক দরিদ্র ও এতিম মেয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাবে।
গরীবের সুপার শপ কার্যক্রমের পাশাপাশি এ জেলায় অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ পাতিলে প্রায় দেড় হাজার মানুষের রান্নার আয়োজন করে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। এসব খাবার স্থানীয় গরীব ও অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড মেম্বার জামাল উদ্দিন জানান, সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের পছন্দ মতো নামমাত্র মূল্যে বাজার করার জন্য এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যাতে পরিবারের কর্তাব্যক্তি তার পছন্দের বাজার নিয়ে বাড়িতে ফিরে সন্তানদের নিকট সুপার হিরো হতে পারে। এতে করে একদিনের জন্য হলেও তারা নিজেদের সুখি ভাবতে পারে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের এটি একটি প্রশংসনিয় মানবিক কাজ। বিভিন্ন দুর্যোগে তারা মানুষের পাশে দাড়ায়। কুড়িগ্রামের সুবিধা বঞ্চিত ও দরিদ্র মানুষদের জন্য এ আয়োজন সত্যিই প্রশংসনিয়। পাশাপাশি এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এতিমখানাটিতেও শতাধিক মেয়ে শিক্ষার্থী লেখাপড়া করতে পারবে। জেলা প্রশাসন তাদের এ ভালো কাজের পাশে আছে।
উল্লেখ্য প্রায় সাড়ে ১১ ফিট ব্যাস ও সাড়ে সাত ফিট উচ্চতার এ পাতিলে একসাথে প্রায় ১০ হাজার মানুষের খাবার রান্না করা যায়। সৈয়দ এফ এম জাহিদুল হক নামের এক দানবীর ব্যক্তি ২০ বছর আগে আজমীর শরীফের পাতিলের অনুকরনে এটি তৈরি করেন। তার মৃত্যুর পর তার পরিবার বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনে এই পাতিলটি রান্নায় ব্যবহারের জন্য দান করেন। মূলত বন্যা, কুরবানী, রমজানের সময় হাজার হাজার মানুষের রান্নার প্রয়োজনে এই পাতিলটি ব্যবহার করা হয়।#
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply