কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি :: গত কয়েকদিন ধরে গ্রীষ্মের তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। এই তাপদাহে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার চা শ্রমিকদের ২ থেকে ৩ শিফটে কাজ করাচ্ছেন বাগান মালিকেরা। উপজেলার বিভিন্ন চা-বাগানে হিট স্ট্রোকে দুজন নারী চা শ্রমিক মারা গেছেন ও ১০ থেকে ১২ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, তীব্র গরমে চা বাগানের শ্রমিকেরা উঁচু টিলার ওপর কাজ করছেন। ফলে সুর্য্যর তাপ সরাসরি এসে মাথার উপরে পড়ে। বুধবার রাতে কমলগঞ্জের ডানকান ব্রাদার্স পরিচালিত শমশেরনগর চা বাগানের ফাঁড়ি দেওছড়া বাগানে হিট স্টোকে আক্রান্ত হয়ে ইন্দ্রা দ্বিবেদী (৫০) ও সঞ্জিতা রবিদাস (৩০) নামে দুজন নারী চা শ্রমিক মারা যান। তারা তিন শিফটে কাজ করে অসুস্থ হয়ে বাড়িতে আসেন। পরে রাতে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাদেরকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এছাড়া দেওছড়া চা বাগানে ৪ জন, শমশেরনগর চা বাগানে ৩ জন, চাতলাপুর চা বাগানের ১ জন, আলীনগর চা বাগানে ২জনসহ বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিকেরা হিট স্টোকে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা যায়।
চা শ্রমিকেরা জানান, আমরা হিট স্টোক কি বুঝি না। গরম কিংবা ঝড়বৃষ্টি হলেও আমাদেরকে সময়মতো কাজে আসতে হয়। গরমের মধ্যে কাজ করে আমাদের অনেকেই অসুস্থ হচ্ছেন। আমাদের পায়ে নেই জুতা আর মাথার ওপর সুর্য। এক সাথে নিচ ও ওপর থেকে গরম লাগে।
কানিহাটি চা বাড়ানের চা শ্রমিক নেতা সীতারাম বীন বলেন, তীব্র গরমে চা শ্রমিকরা হিট স্টোকে আক্রান্ত হয়ে দুজন মারা গেছে। এছাড়া আরও অনেক আক্রান্ত হয়েছে। এই গরমের মধ্যেও চা শ্রমিকদেরকে একাধিক শিফটে কাজ করানো হচ্ছে। তাদেরকে সকাল ও বিকেলে কাজ করার সুযোগ করে দিলে ভালো হবে। চা শ্রমিকেরা পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের দিক থেকে এমনিতেই অনেক দুর্বল। অতি সহজেই তারা হিট স্টোক আক্রান্ত হয়।
শমশেরনগর ক্যামেলিয়া ডানকান হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: বাহা উদ্দিন বলেন, বুধবার রাতে আমাদের কাছে মৃত অবস্থায় একজনকে নিয়ে আসা হয়েছিল। আমার কাছে মনে হয়েছে সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
শমশেরনগর চা বাগানের ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন বলেন, চা শ্রমিক হিটস্টোকে মারা গেছে এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। শ্রমিকেরা যদি সকালে কাজে আসে তাতেও আমাদের কোন আপত্তি নেই।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া বলেন, হিট স্টোকের ভয়াবহতা সম্পর্কে বেশিরভাগ মানুষ সচেতন নয়। হিট স্টোকে হলে দ্রুত সময়ে বিপদ ঘটতে পারে। শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। তাই শিশু থেকে বয়স্ক সবাই গরম থেকে সতর্কতার সহিত থাকতে হবে।#
Leave a Reply