সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে অব্যাহত বৃষ্টিপাতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট বন্যায় উপজেলার প্রধান সড়কগুলো তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলার কয়েকটি পাহাড়ি নদী খাসিয়ামারা, চিলাই, চেলা, মরাচেলা ও সুরমাসহ সবকটি নদ-নদী ও হাওরের পানি আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ তিনটি সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে ৫ ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
উপজেলার সদর, নরসিংপুর, বোগলাবাজার, লক্ষ্মীপুর, সুরমা, মান্নারগাঁও বাংলাবাজার ইউনিয়নে বানের পানিতে ঘরবন্দী হয়ে পড়েছেন সহস্রাধিক মানুষ। বন্যার পানিতে গোচারণ তলিয়ে যাওয়ায় গো খাদ্যের চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ভারী বর্ষণ, বন্যায় কাবু হয়ে পড়েছেন গ্রামের মানুষ। ঈদ পরবর্তী অব্যাহত বৃষ্টিপাত আর বন্যায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে রোববার বিকেলে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে উপজেলার চিলাই নদীর দক্ষিণ ক্যাম্পরঘাট বেড়িবাঁধ ভেঙে শত শত বাড়ি ঘরে বানের পানি ঢুকে পড়েছে। সোমবার পানিবন্দী ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছেন বোগলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মিলন খাঁন।
বোগলাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মিলন খাঁন বলেন, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে চিলাই নদীর দক্ষিণ ক্যাম্পেরঘাট বেড়িবাঁধ ভেঙে শত শত মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। আমি তাৎক্ষণিক ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছি, যা খুবই অপ্রতুল। সরকারিভাবে পানিবন্দী মানুষের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ প্রয়োজন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বোগলাবাজার ইউনিয়নের ক্যাম্পেরঘাট, দ. ক্যাম্পেরঘাট, সুরমা ইউনিয়নের, ভুজনা, গিরিশনগর, বৈঠাখাই, আলীপুর, টিলাগাঁও, মহব্বতপুর উমরপুর,কালিকাপুর, নুরপুর, সোনাপুর, কদমতলী, কান্দিগাও, শরীফপুর, সদর ইউনিয়নের মাইজখলা, বাঘরা, সুন্দরপই, বড়বন্দ, বীরসিংহ, রাখালকান্দি, পরমেশ্বরীপুর, বাজিতপুর, মুরাদপুর, নৈনগাঁও, মংলারগাঁও, টেবলাই, লামাসানিয়া, মাছিমপুরসহ শতাধিক গ্রামের মানুষ রাস্তাঘাট ডুবে পানি বন্দী রয়েছেন।
উপজেলা সদরের মাঝেরগাঁও গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় ঢলের পানি নেমে প্লাবিত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। আমরা পানিবন্দী হয়ে পড়েছি। তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর আমার বাড়ির সামনে ছাতক- দোয়ারাবাজার মূল সড়কে অল্প বন্যা হলেই সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে প্রতি বছর বলে আসছি এই অংশটুকু উঁচু করার জন্য, কিন্তু কেউ কর্ণপাত করেনি। এ কারণে আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই। জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আরিফ মুর্শেদ মিশু বলেন, পাহাড়ি ঢলে চিলাই নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রামে পানি ঢুকেছে। কিছু মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছন। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলে উপজেলায় ১৪টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। বন্যা মোকাবেলায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।#
Leave a Reply