মোঃ বুলবুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:: করোনার সময় বন্ধ হওয়া পার্বতীপুর-রমনা বাজার রুটে চলাচলকৃত রমনা লোকাল ট্রেন পুনঃচালু ও কুড়িগ্রাম স্টেশনের জন্য কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস আন্তঃনগর ট্রেনের আসন সংখ্যা বৃদ্ধির দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও রংপুর এক্সপ্রেসের কানেক্টিং শাটল ট্রেন অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬.০০ টা থেকে রাত ৯.০০ টা পর্যন্ত রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি, রমনা লোকাল ট্রেন বাস্তবায়ন কমিটি, রমনা লোকাল ট্রেনের সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী ও টগরাইহাটের বীরমুক্তিযোদ্ধা গণের যৌথ উদ্যোগে এ বিক্ষোভ সমাবেশ ও শাটল ট্রেন অবরোধ কর্মসূচী পালিত হয়।
আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ আমজাদ হোসেন সরকারের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব সহকারী অধ্যাপক মোঃ আব্দুল কাদের এর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও কলামিস্ট নাহিদ হাসান নলেজ, জেলা গণকমিটির আহ্বায়ক প্রভাষক জাকির হোসেন, সদস্য সচিব শামসুজ্জামান সরকার সুজা, রাজারহাট উপজেলা শাখার সভাপতি খন্দকার আরিফ, রমনা লোকাল বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মোঃ মীর মোশারফ হোসেন মাস্টার, সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক এটিএম এটম মন্ডল, রমনা লোকাল ট্রেনের সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ, স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন, বীরমুক্তিযোদ্ধা বদরুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, করোনাকালে সারাদেশের ন্যায় পার্বতীপুর টু রমনা বাজার রুটে চলাচলকৃত রমনা লোকাল ট্রেনটিও বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু পরবর্তীতে দেশের সকল ট্রেন চালু হলেও অদৃশ্য কারণে রমনা লোকাল ট্রেনটি অদ্যবধি চালু হয় নাই। দারিদ্রপীড়িত কুড়িগ্রামের দরিদ্র মানুষের প্রাণের বাহন রমনা লোকাল ট্রেন পুনঃচালুর দাবীতে ইতোমধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট স্মারকলিপি ও গণস্বাক্ষর প্রদান করা হলেও কর্তৃপক্ষ কোন কর্ণপাত করেননি। অপরদিকে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস কুড়িগ্রাম জেলায় শুধুমাত্র একটি স্টেশনে থামে এবং সেখান থেকে চলে যায়। কুড়িগ্রাম জেলার জন্য টিকিট বরাদ্দ চাহিদার চেয়ে অনেক কম যা কুড়িগ্রামের সঙ্গে রেল কর্তৃপক্ষের বিমাতাসুলভ আচরণ ছাড়া আর কিছুই নয়।
বক্তারা আরো বলেন, কুড়িগ্রামের সঙ্গে রেল কর্তৃপক্ষের বিমাতাসুলভ আচরণের প্রতিবাদে এবং রমনা লোকাল ট্রেন পুনঃচালু ও কুড়িগ্রামের জন্য কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসের আসন সংখ্যা বৃদ্ধির দাবীতে আজ বিক্ষোভ সমাবেশ ও শাটল ট্রেন অবরোধ কর্মসূচী শান্তিপূর্ণ ভাবে পালন করা হয়েছে এবং দাবী বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে অবরোধ কর্মসুচী সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ ন্যায্য দাবী বাস্তবায়নে আবারও টালবাহানা করলে অদূর ভবিষ্যতে আরো কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারী দেন বক্তারা।
জানা যায়, টগরাইহাট স্টেশন চত্বরে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সন্ধ্যা ৬.০০ টায় পবিত্র কোরআন থেকে তেলোয়াতের মধ্য দিয়ে আলোচনা সভা শুরু হয়। আলোচনা সভা চলাকালে রংপুর এক্সপ্রেসের কানেক্টিং শাটল ট্রেন কাউনিয়া স্টেশন থেকে ছেড়ে এসে কুড়িগ্রাম স্টেশনে পৌঁছার পর ঢাকাগামী যাত্রীদের নিয়ে কাউনিয়া স্টেশনে ফেরার পথে আন্দোলনকারীরা টগরাইহাট স্টেশনে শাটল ট্রেনটি আটিকিয়ে প্রায় পঁচিশ মিনিট অবরোধ করে রাখে এবং ইঞ্জিনের সামনে রেললাইনে শুয়ে শ্লোগানে শ্লোগানে বিক্ষোভ করতে থাকে। কর্তৃপক্ষের বরাতে শাটল ট্রেনের পরিচালকের রমনা লোকাল ট্রেন পুনঃচালুর আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা কর্মসূচী সমাপ্ত ঘোষণা করে। প্রায় পঁচিশ মিনিট বিলম্বে শাটল ট্রেনটি কাউনিয়া স্টেশনের উদ্দেশ্যে টগরাইহাট স্টেশন ছেড়ে যায়।
বিক্ষোভ সমাবেশ ও শাটল ট্রেন অবরোধ কর্মসূচিতে রিক্সা চালক, ভ্যান চালক, কুলি-মজুরসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রায় সহস্রাধিক মানুষ অংশ গ্রহন করে।
Leave a Reply