কবি ও সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন রনি
সে মরেনি—
মরতে জানে না যারা সত্যের ভাষা শেখে,
যাদের কলমে বারুদ,
আর কবিতায় রাজপথের শিরা-
উপশিরা স্পন্দিত হয়।
হাদি মরেনি।
সে দাঁড়িয়ে আছে
রক্তে ভেজা দেয়ালের গায়ে
লেখা প্রথম অক্ষরের মতো—
যেটা মুছতে গেলে
হাতেই লাগে আগুন।
ঘাতকের দল যদি বুঝত
কতটা মর্যাদার ছিল এই মৃত্যু,
তবে তারা নিজেরাই
ফাঁসির দড়িতে চুমু খেত!
কারণ, কাপুরুষেরা জানে না—
শরীর পড়ে গেলে
কণ্ঠ আরও উঁচু হয়।
হাদির মৃত্যু ছিল সম্মানের,
একটি অমর বাক্যের মতো—
যেটা ইতিহাস উচ্চারণ করে
কাঁপা কণ্ঠে,
আর শাসকের ঘুম কেড়ে নেয়
নির্ঘুম রাতের পর রাত।
একটি অবুঝ শিশু
আজ বাবার কাঁধ খোঁজে,
শূন্য আকাশের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে—
“বাবা কি খুব দূরে?”
হ্যাঁ, দূরে—
কিন্তু এতটাই কাছে
যে প্রতিটি অন্যায়ের প্রতিবাদে
সে বাবার কণ্ঠ শুনবে।
আল্লাহ,
এই শিশুর জীবন সহজ করো,
কারণ তার উত্তরাধিকার
খুব ভারী—
একজন শহীদের নাম
খেলনার চেয়েও ভারী।
হাদি যদি জীবদ্দশায়
নিজের হত্যার বিচার না দেখে যায়,
তবু বিচার থেমে থাকবে না।
কারণ ইতিহাসের আদালতে
সময়ের সাক্ষ্য সবচেয়ে নির্মম,
আর রায় আসে—
দীর্ঘশ্বাস নয়, বজ্রপাত হয়ে।
সে বেঁচে থাকবে
ঝাঁঝালো কবিতায়,
যেখানে শব্দগুলো ছুরি হয়ে
ভণ্ডামির বুক চিরে দেয়।
সে বেঁচে থাকবে
রাজপথের স্লোগানে,
যেখানে কণ্ঠ ফাটে
কিন্তু মাথা নত হয় না।
সে বেঁচে থাকবে
যে তরুণ প্রথমবার
ভয়কে অস্বীকার করে
“না” বলতে শেখে।
হাদি ছিল প্রশ্ন,
যার উত্তর দিতে
শাসক কাঁপে।
হাদি ছিল আয়না,
যেখানে মুখ দেখলেই
ঘাতকের চোখ ঝলসে যায়।
যদি অন্যায়ের বিরুদ্ধে
এভাবেই মরতে হয়—
তবে এ মৃত্যু কোনো শোক নয়,
এ মৃত্যু একেকটি জন্ম।
বিপ্লবীদের কবর নেই,
তাদের নাম লেখা থাকে
মানুষের শিরদাঁড়ে।
আজ হাদি নেই—
এই বাক্যটাই মিথ্যে।
হাদি আছে
প্রতিটি প্রতিবাদী নিঃশ্বাসে,
প্রতিটি অসমাপ্ত কবিতায়,
প্রতিটি মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো মানুষের ভেতরে।
একজন বিপ্লবী কবির
মৃত্যু হয় না—
সে কেবল
আরও জোরে বাঁচতে শুরু করে।##@@
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply